×

জাতীয়

মেলায় ঢুকতেই ‘ছুটির ঘণ্টা’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২১, ০৮:১৫ পিএম

মেলায় ঢুকতেই ‘ছুটির ঘণ্টা’

বইমেলার সময়টা রুটিনের সঙ্গে মেলাতে পারছেন না মেলায় আসা ক্রেতারা। ছবি: ভোরের কাগজ

কয়েক দফায় বদলে সর্বশেষ নির্ধারিত বইমেলার সময়টা রুটিনের সঙ্গে মেলাতে পারছেন না মেলায় আসা ক্রেতারা। দুপুরে খেয়ে দেয়ে বইমেলায় রওনা দিয়ে চত্বরে পৌঁছতেই ফুরিয়ে যাচ্ছে নির্ধারিক সময়। তাড়াহুড়ো করে কেনাকাটা করতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। প্রবেশ পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় সময় হাতে পাচ্ছেন না। ক্রেতাদের কেউ কেউ বলছেন, মেলায় ঢুকেই ছুটির ঘণ্টা বাজে। আসি কি করে।

বারিধারা থেকে আসা ডাক্তার সারাবানু সূচি হতাশ সুরে বলেন, মেলার সময়টা বড্ড উদ্ভট। দুপুরের লাঞ্চ শেষ না করে মেলায় আসি কী করে? বিকেলেই তো আসতে হবে। যখন এসে মেলায় পৌঁছি তখন দেখি মেলা প্রায় শেষ। তাই তড়িঘড়ি বই কিনে বেরুতে হচ্ছে।

উত্তরা থেকে আসা ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্রেয়সীও বলেন, বইমেলা ১২ টা থেকে হলেও ওই সময় বাড়ি থেকে বেরুনো যায় না। ঘণ্টাখানেক পরেই তো দুপুরের খাবারের সময়। সে সময় বাড়ি থেকে বেরুনো কষ্টকর। তাই লাঞ্চ সেরেই বেরুলাম। বেরিয়েই গাড়ি পেতেও বেশ খানিকটা বেগ পেতে হলো। মেলায় ঢুকতে ঢুকতে ছুটির ঘণ্টা বেজে উঠল। আধা ঘণ্টায় কী করে বই কিনব?

মতিঝিল থেকে কন্যা অর্পিকে নিয়ে আসা গৃহবধূ সানজিদা মিনুও বললেন, সংসারের কাজ গুছিয়ে তবেই বেরুলাম। ততক্ষণে মেলার বেলা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তরিঘড়ি দুয়েকটা বই কিনে নিচ্ছি। সব বই কিনতে আরও একদিন আসতে হবে। তবে মেলায় এসে পরিবেশটা বেশ ভালো লাগছে। পুরো মেলা ঘুরে দেখতে অনেক সময়ের দরকার। সময়টা আরকটু বাড়ালে ভালো হতো।

সর্বশেষ বেলা ১২টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টার মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মেলার প্রবেশ পথ। এই সময়ের মধ্যে মেলায় ক্রেতা বা পাঠকের দেখা মিলছে বিকেল ৪টার পর। বেশিরভাগই দুপুরের খাবার খেয়ে মেলায় আসছেন। সে কারণে দেরি হয়ে যাচ্ছে।

করোনার প্রভাবে দফায় দফায় সময় সূচি পরিবর্তন, হরতাল-নৈরাজ্যের প্রতিবন্ধকতা আর ঝড়ের ধাক্কা সামলে অমর একুশে গ্রন্থমেলা খানিকটা ঘুরে দাঁড়ালেও হতাশা কাটছেই না। পুরোপুরি জমে উঠছে না মেলা। বইপ্রেমী, পাঠক আর ক্রেতাদের ভিড় বাড়লেও বাড়েনি আশানুরূপ বিক্রি।

প্রকাশকরা বলছেন, বইমেলা শেষ অবধি জমেই উঠলো না। বার বার সময় পরিবর্তন, এমন সময় নির্ধারণ যখন ক্রেতা বা পাঠকরা আসতেই পারছেন না। আর ক্রেতাদের আগ্রহে ভাটা পড়ায় সেভাবে জমে উঠছে না মেলা। শুক্রবার ছুটির দিনে হয়তো ক্রেতা বাড়তে পারে, সেই সঙ্গে বেচাবিক্রি। সেই অপেক্ষাতেই থাকছেন তারা।

সর্বশেষ বেলা ১২টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টার মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মেলার প্রবেশ পথ। এই সময়ের মধ্যে মেলায় ক্রেতা বা পাঠকের দেখা মিলছে বিকেল ৪টার পর। বেশিরভাগই দুপুরের খাবার খেয়ে মেলায় আসছেন। সে কারণে দেরি হয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, করোনার কারণে ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে এ বছর ১৮ মার্চ মেলা শুরু হয়। সেদিন বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ছুটির দিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে মেলা। অন্যান্য দিনগুলোতে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলে। কিন্তু দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেলে ৩১ মার্চ বইমেলার সূচি পরিবর্তন করে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত করা হয়।

এরপর আবার সাতদিনব্যাপী কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের মধ্যে আগের চেয়ে সময় বাড়িয়ে প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মেলার সময় সূচি করা হয়। সরকারের এ ঘোষণায় প্রকাশকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App