×

পুরনো খবর

হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো বইমেলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২১, ০৮:১৩ পিএম

হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো বইমেলা

ফাইল ছবি

হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো বইমেলা

মঙ্গলবার বইমেলায় বিভিন্ন স্টলে বই খুজছে আগ্রহী পাঠকরা। ছবি: ভোরের কাগজ

হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো বইমেলা

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সাতদিনব্যাপী কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের প্রথম দিনের হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াল অমর একুশে বইমেলা। মেলা চত্বরে দেখা গেল বইপ্রেমিদের আনাগোনা। স্টলে স্টলে দেখা গেল চোখে পড়ার মতো ভিড়। সেই সঙ্গে দেখা গেল হাতে হাতে বইও।

গতকাল মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) দ্বিতীয় দফার সময়সূচি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে মেলার ২০তম দিনে এমন চিত্র দেখা গেল। অথচ আগের দিনে ঝড়ে বিধ্বস্ত মেলা মেরামত আর ভেজা বই শুকিয়েই দিন পার করেছেন স্টল মালিক ও বিক্রয়কর্মীরা। তবে পরদিন হতাশা কিছুটা কেটে গেছে ক্রেতাদের আগমনে।

প্রকাশকরা বলছেন, এমনিতেই পরিবহন বন্ধ, মেলায় আসার মতো সুযোগ কম। আগের দিনের হতাশজনক অবস্থা কিছুটা কেটে গেছে। ক্রেতারা এসেছেন। হতাশার মধ্যেও স্টলে কিছুটা বেচাবিক্রি হচ্ছে। যদি এভাবে ক্রেতারা আসেন তাহলে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি কমতে পারে।

বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলছেন, মেলায় উপচে পড়া ভিড় না থাকলেও স্টলগুলোতে ক্রেতারা আসছেন। বই নেড়ে চেড়ে দেখছেন, দরদাম করছেন। অনেকে পছন্দের বই কিনছেনও। আগের দিনে কোনো ক্রেতা ছিল না, বইও বিক্রি হয়নি। সে হিসেবে আজ পরিস্থিতি ভালো বলা যায়।

মোহাম্মদপুর থেকে মেলায় আসা মো. লিটন জানালেন, সময়টা তো সুবিধাজনক নয়। শুধু পছন্দের বই কিনতে অনেক কষ্ট করেই এলাম মেলায়। করোনার ভিতর গণপরিবহন বন্ধ। কিন্তু মেলা চলছে। এটা সরকারের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড মনে হচ্ছে। এটা না করলেও পারত। মেলা যদি খোলাই থাকে সময় আরেকটু বাড়ালে সমস্যা কোথায়?

[caption id="attachment_276601" align="alignnone" width="621"] মঙ্গলবার বইমেলায় বিভিন্ন স্টলে বই খুজছে আগ্রহী পাঠকরা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

মোহাম্মদপুর থেকে আসা এক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ মুন্সী বললেন, লকডাউন হলেও মেলায় আসার ইচ্ছে থাকতে হবে। আর ইচ্ছে থাকলে একটু ঝুঁকি তো নিতেই হবে। আমি একজন লাইব্রেরী প্রেমিক। তাই ঝুঁকি নিয়েই বই কিনতে মেলায় চলে এলাম। মনে রাখতে হবে, ম্যান ইজ মর্টাল। ঘরে থাকলেও মরবে মানুষ, বাইরে গেলেও মরবে।

পুঁথি নিলয় প্রকাশনীর আলমগীর অরন্য জানালেন, গতকাল সুপার ফ্লপ দিন ছিল। আজকে তুলনামুলক বেড়েছে। মেলা যদি চলে তাহলে সময় আরেকটু বাড়ানো উচিত। নইলে একেবারেই বন্ধ করে দেয়া উচিত।

তিনি বলেন, কদিন ধরে বেচাবিক্রিতে ধ্বস নামায় ১৬ জনের মধ্যে ১২ জন নারী কর্মীকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে।

অবসরের একজন বিক্রয় প্রতিনিধিও একই কথা জানালেন, তাদের সব বিক্রয় কর্মী বিদায় করে দেয়া হয়েছে। নিজেরা নিজেরাই চালাচ্ছেন।

প্রথমা প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি সোহাগ জানালেন, গতকালের খরা কাটিয়ে আজ একটু চাঙ্গা হলাম। মোটামুটি বিক্রিও হয়েছে।

তাম্রলিপির স্বত্বাধিকারী একেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, মেলা চাঙ্গা হতে আরও দুয়েকদিন সময় লাগবে। এমন আশাবাদী হওয়া ছাড়া কোন পথ নাই।

করোনার কারণে ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে এ বছর ১৮ মার্চ মেলা শুরু হয়। সেদিন বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ছুটির দিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে মেলা। অন্যান্য দিনগুলোতে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলে। কিন্তু দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেলে ৩১ মার্চ বইমেলার সূচি পরিবর্তন করে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত করা হয়।

এরপর আবার সাতদিনব্যাপী কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের মধ্যে আগের চেয়ে সময় বাড়িয়ে প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মেলার সময় সূচি করা হয়। সরকারের এ ঘোষণায় প্রকাশকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App