×

মুক্তচিন্তা

করোনা ও মাস্ক ব্যবহার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২১, ১২:১১ এএম

কঙ্কন সরকার অতি দ্রুত ধাবমানতায় মাঝে মাঝে থমকে যাওয়াই বুঝি নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়! বিশ্ব সমাজ যেভাবে এগোচ্ছে, এমনকি তা পৃথিবী ছেড়ে বাইরের গ্রহেও যেভাবে পা বাড়াচ্ছে, তাতে খানিকটা দম দিতে হয়তো করোনা উপস্থিত হয় তার সর্বশক্তি নিয়ে। এটাই সম্ভবত ব্যতিক্রমী একমাত্র সংক্রামক রোগ, যা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়। আতঙ্কিত মানুষ ঢুকে পড়ে ঘরের ভেতর অথবা নিজেকে আবরণে ঢেকে ফেলে। কিন্তু তবুও কোথা থেকে যে কীভাবে এর জীবাণু ঢুকে পড়ে শরীরে! অন্যদিকে শরীরে শুধু প্রতিরোধী আবরণ জড়ানো? ঘরে থাকা, হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা, স্যানিটাইজ করা, কত্ত কী! তবে সাবান মাখা যাবে, হাত ধুয়ে ফেলা যাবে, কিন্তু ঘরে কি অনেকদিন ঢুকে থাকা যাবে? আমরা বলি, সমস্যা এলে সমাধানও সঙ্গে আসে। অবশ্য চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা নিরন্তর চেষ্টা চালাচ্ছেন সেই সমাধানের খোঁজে অর্থাৎ চিকিৎসা ও প্রতিরোধী ওষুধ আবিষ্কারের কাজে! অবশ্য স্বল্প সময়ে তারা ভ্যাকসিন এনেছেন এবং তা প্রয়োগও শুরু হয়েছে দেশে দেশে। তবে সতর্ক করা হচ্ছে বারবারÑ টিকা নিয়েই নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকা যাবে না, নিয়ম মেনে ও মাস্ক ব্যবহার করে চলতে হবে। মাস্ক ব্যবহারে কী হবে? মাস্ক ব্যবহারে করোনা প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন হবে। কিন্তু আমাদের দেশে হাট-বাজারে, হকার বা ফেরিওয়ালা কিংবা দোকানে যেসব মাস্ক পাওয়া যায় তা কি সবই স্বাস্থ্যসম্মত? তা নিয়ে কিন্তু সন্দেহ থেকেই যায়। তবে কী ধরনের মাস্ক ব্যবহার সঠিক হবে? অবশ্য চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যেসব মাস্ক বের করেছেন, যার একটি এন নাইনটি ফাইভ। কিন্তু এই মাস্ক কি সর্বসাধারণের জন্য সহজলভ্য? সম্ভবত না। তাই তো কিছুটা দামি হওয়ায় সাধারণ মানুষ এসব কিনে ব্যবহার করতে উৎসাহ পায় না। তো সাধারণ মানুষ সহজে পাবে এমন মাস্ক কীভাবে, কোথায় পাবে? সেটিও বাতলে দিয়েছেন তারা। বলেছেন সাধারণ নতুন বা পুরনো সুতি কাপড় বা গেঞ্জির কাপড় তিন স্তর একসঙ্গে করে মাস্ক বানিয়ে ব্যবহার করলে অনেকটাই করোনা প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। অন্যদিকে টিস্যু ও নাইলন বা পলিস্টার মিশ্রিত মাস্ক না ব্যবহার করাই উত্তম। কেননা, এগুলোর টিস্যু বা সুতার কণা নিঃশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে গিয়ে ফুসফুসে জমা হতে পারে। যা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অন্যদিকে অস্বস্তি বোধ ও গরম লাগতে পারে। পাশাপাশি এসব একবার ব্যবহারের পর তা দ্বিতীয়বার ব্যবহার উপযোগী থাকে না। অন্যদিকে টাকার ব্যয় বেশি। তাই আমাদের ব্যবহারের সময় চিন্তা করে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। অন্যদিকে সুতি মাস্ক আরামদায়ক, সহজে পচে যায় এবং বারবার ধুয়ে ব্যবহার করা যায়। আর জানা যায় সুতি মাস্ক ব্যবহারের পর রোদে শুকাতে দিলেও নাকি করোনা জীবাণু নষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে সচরাচর কিনে ব্যবহারকৃত মাস্ক পরিবেশের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যত্রযত্র ফেলে দেয়াতে সেগুলো থেকেও যে করোনা জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে না এবং সেগুলো সহজে পচে না এবং সেগুলো অস্বাস্থ্যকর কিনা তাও ভাবার বিষয়! শুধু করোনা জীবাণু প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার নয়। এটি অন্যান্য বায়ুবাহিত রোগ থেকেও প্রতিরোধ করে। এছাড়া ধুলো, ফুল, মুকুলের রেণু থেকে ছড়িয়ে পড়া অ্যালার্জেন, যা সর্দি-কাশি সৃষ্টি করে তা থেকেও রক্ষা করে অনেকটা। বিশেষ করে যাত্রার সময় মাস্ক ব্যবহারে ধুলো ও ঠাণ্ডার হাত থেকেও কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়। তাছাড়া ব্যবহারকারী থেকে সংক্রামক জীবাণুও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কম থাকে। তবে একই মাস্ক পরিষ্কার না করে বারবার ব্যবহার করা অস্বাস্থ্যকর। তো আসা যাক সংক্রমণের বিষয়টির দিকে। পৃথিবীর অনেক দেশে বিশেষ করে যেসব দেশ উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত সেসব দেশে সংক্রমণের হার ব্যাপক। মৃত্যুর হারও বেশি। সেদিক থেকে বাংলাদেশে তুলনামূলক অনেক কম। কিছুদিন আগে পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে দেখানো হয়েছে, শরীরে ভিটামিন ডি-এর উপস্থিতিও করোনা আক্রমণের বাধা হয়ে দাঁড়ায়। দেখানো হয়েছে যাদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর উপস্থিতি বেশি তাদের করোনা আক্রমণের হার তুলনামূলক কম। আর ভিটামিন ডি-এর প্রধান উৎস সূর্যালোক। তো যেসব অঞ্চলে সূর্যের আলোক বেশি সময় ধরে পায় সেসব অঞ্চলের মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি বেশি তৈরি হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে হয়তো এমনটি কাজ হয়েছে। তো আমরা যারা বেশি সময় ধরে বা সারাক্ষণ ঘরে কাজ করি বা অবস্থান করি তারা পারলে কিছুটা সময় রৌদ্রে যেন থাকি। পাশাপাশি ব্যায়াম কিংবা হাঁটাহাঁটি বা যোগব্যায়াম, পারলে মেডিটেশনের অভ্যাস করা। তো আতঙ্কিত নয়। সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। এর বিকল্প নেই। ভ্যাকসিন এসেছে বলে সব কিছু হেলা ও অগোছালোয় ছেড়ে দিলে চলবে না। নিয়ম মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি সবাইকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App