×

জাতীয়

আন্তর্জাতিক মদতে চাঙ্গা হওয়ার চেষ্টা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৪৫ এএম

আন্তর্জাতিক মদতে চাঙ্গা হওয়ার চেষ্টা

দেশে জঙ্গিদের তৎপরতার পেছনে বিদেশি অনেক সংগঠনের যোগসূত্র রয়েছে। আছে বিদেশি অর্থায়নও। জঙ্গিবাদে জড়িতরা বিভিন্ন সময়ে বিদেশে গিয়ে অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণ নিয়েছে। বিদেশে বসেও দেশের জঙ্গিদের কলকাঠি নাড়ার অভিযোগও পুরনো। আবার দেশের ভেতরে তৎপর থাকার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে বিদেশে সটকে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা, ইসলামিক স্টেট (আইএস), লস্কর-ই-তৈয়বার পথ ধরে এগিয়ে চলা দেশীয় জঙ্গিরা বারবার মাথাচাড়া দেয়ার চেষ্টা করছে। দেশে গত কয়েক বছরে আফগানিস্তান ও সিরিয়া ফেরত কয়েকশ’ জঙ্গি আটকের খবর রয়েছে।

র‌্যাব ও পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকজন তরুণ জঙ্গি আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বিদেশে পড়ালেখা ও সেখান থেকে অর্থ প্রাপ্তির ব্যাপারে তথ্য দিয়েছে। তাদের অনলাইন তৎপরতার ব্যাপারেও তথ্য রয়েছে। তবে অর্থ লেনদেন ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর থাকলেও বিকাশ, শিউরক্যাশ, নগদসহ বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা লেনদেন হচ্ছে। জানা গেছে, জঙ্গিদের আফগানিস্তান, সিরিয়া, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইরাক, ভারত, স্পেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র কানেকশনের বেশকিছু তথ্য-প্রমাণ গোয়েন্দারা পেয়েছেন।

আরও পড়ুন...

সুযোগের অপেক্ষায় জঙ্গিরা

কারাগারে বসে জঙ্গি নেটওয়ার্ক তদারকি

বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিরা আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বিদেশ কানেকশন ও অর্থায়নের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। বিশেষ করে অস্ত্র সংগ্রহ ও চালনায় দেশের জঙ্গিরা বিদেশনির্ভর বলে একাধিক জঙ্গি মামলা তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তথ্য পেয়েছেন। জঙ্গি দমনে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি), এন্ট্রিটেররিজম ইউনিট (এটিইউ) কর্মকর্তারা প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে বিদেশি অর্থায়ন ঠেকাতে কর্মপরিকল্পনা এঁটেছে। কয়েক বছর আগে প্রায় দুই কোটি টাকা জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে মোশতাক খা নামে একজনকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তুরস্ক থেকে একটি এনজিওর নামে ওই টাকা এনে জঙ্গি অর্থায়নের কাজে লাগানোর ক্লু পায় সিআইডি। এছাড়া জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গোয়েন্দারা একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আটক করেছে। আবার অনেককে নজরদারিতে রেখেছে।

সাউথ এশিয়ান টেররিজম পোর্টালের দেয়া তথ্যানুযায়ী, হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজিবি) মূলত আফগানিস্তান, সৌদি আরব, পাকিস্তান এবং বেসরকারি সংস্থা যেমন আদর্শ কুটির, আল ফারূক ইসলাম ফাউন্ডেশন এবং হাতাতদ্বীন থেকে আর্থিক অনুদান পেয়ে থাকে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই থেকেও আর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকে। জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অনুদান নিয়ে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। স্থানীয় বেসরকারি এনজিও রাবেতা-ই-ইসলাম এবং ইসলামী ঐতিহ্য সংস্থা থেকেও তারা সাহায্য সহায়তা পেয়েছে। জামাআ’তুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) কুয়েত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, লিবিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়েছে। কুয়েতভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা রিভাইবল অব ইসলামিক হেরিটেজ, দৌলয়াতুল কুয়েত, আমিরাত ভিত্তিক আল ফুজাইরা, খাইরুল আনসার আল খায়রিয়া, বাহরাইন ভিত্তিক দৌলয়াতুল বাহরাইন এবং সৌদি আরব ভিত্তিক আল হারমেইন ইসলামিক ইনস্টিটিউট থেকে আর্থিক প্রণোদনা পেয়েছে। পুরনো সংগঠনের দেখানো পথে নব্য জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হিযবুত তাহ্্রীরসহ বেশ কয়েকটি নিষিদ্ধ সংগঠনের বিদেশ কানেকশন গড়ে উঠেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App