×

মুক্তচিন্তা

মোদিবিরোধী বিক্ষোভের কারণ কী?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২১, ১২:০৯ এএম

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থেকে দিবসটি মহিমান্বিত করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে মরণোত্তর মহাত্মা গান্ধী পুরস্কারে ভূষিত করেছেন। গেয়েছেন, ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না’। উচ্চারণ করেছেন, বঙ্গবন্ধুর সেই অমর সেøাগান, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বর্ণিল সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান সফল হয়েছে, মৌলবাদী গোষ্ঠীর মুখে একটি চপেটাঘাত পড়েছে। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। অথচ এ চমৎকার মহতী অনুষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছে মৌলবাদীরা, কেন? বিএনপি-জামায়াত যা করতে সাহস পায় না, ওরা সেই সাহস পেল কোত্থেকে? মোদি আগেও বাংলাদেশে এসেছেন, এবার এত বিক্ষোভ কেন? বিক্ষোভ কি শুধু মোদির বিরুদ্ধে, না আরো কিছু আছে? পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন এবং মমতা ব্যানার্জির বিপর্যয়ে মৌলবাদীরা উৎকণ্ঠিত? মমতা হারলে পশ্চিমবঙ্গ জঙ্গিদের অভয়ারণ্য থাকবে না বলে? মোদি ওড়াকান্দি ও যশোরেশ্বরী গেছেন, মতুয়ারা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে ভোট দেবেন, মমতার বিদায় নিশ্চিত করবেন, এটাই কি কারণ? সম্ভবত না, এর কারণ হয়তো, মোদি কাশ্মির সমস্যা সমাধান করে ফেলছেন, সেখানে জঙ্গিরা আগের মতো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে পারছে না! মোদি তিন তালাক বাতিল করেছেন। মোদি ভারতে হিন্দুত্ব কায়েম করছেন। মোদি এনআরসি এবং সিএএ কার্যকর করে অবৈধদের তাড়াবেন, এসব মৌলবাদীর না পছন্দ। তবু হয়তো মোদির আগমন একমাত্র ইস্যু নয়, ওদের লক্ষ্য স্বাধীনতা? বামপন্থিরা কেন বিরোধিতা করেছেন? ভারত নিয়ে যাদের ‘চুলকানি’ আছে, তারা আর যাই হোক, অসাম্প্রদায়িক হতে পারেন না! মোদি সাম্প্রদায়িক, আপনারা কি খুব বেশি অসম্প্রদায়িক? উপমহাদেশে মৌলবাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেই তো আজ আপনাদের দৈন্য-দশা! বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আপনাদের ভূমিকা কী? লোকে বলে, ‘ইসলামপন্থি আর বামপন্থি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ’ কথাটি কি মিথ্যে? ভুলে গেলেন, ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। ভারতে রাষ্ট্রধর্ম নেই! ভারতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট শক্ত। মোদিকে কেন্দ্র করে ডান-বাম বিক্ষোভ কি সরকারের বিরুদ্ধে নয়? এটি কি স্বাধীনতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ছিল না? কওমি মাদ্রাসা না হয় আবারো প্রমাণ করেছে তারা স্বাধীনতাবিরোধী। আপনারা কি প্রমাণ করলেন? মোদি এবার অনেকের সঙ্গে দেখা করেছেন, বিএনপির সঙ্গে নয়? প্রয়াত প্রণব মুখার্জি কংগ্রেসের হলেও ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন, মোদি সেটি ভোলেননি। যারা এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অপমানিত করেছেন হয়তো ভারত তাদের ভুলবে না। ভুলে গেছেন কি যে, শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সংস্কারবাদীদের আমি মাফ করে দিয়েছি, কিন্তু ভুলিনি। মোদিও হয়তো আপনাদের ভুলবে না। একজন রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান এলে প্রতীকী বিক্ষোভ হতেই পারে, কিন্তু সুবর্ণজয়ন্তীতে ৭ জনের প্রাণহানির প্রয়োজন ছিল না, হরতাল ডাকার দরকার ছিল না। যা হোক, মোদির সঙ্গে যারা দেখা করেছেন, দেখলাম সবাই খুশি। কারণ কি, কি আছে তার মধ্যে? মিডিয়া জানাচ্ছে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান-মাশরাফি বিন মুর্তজারা মুগ্ধ। সাকিব সাক্ষাৎ শেষে যা বলেছেন তাতে না আবার মৌলবাদীদের রোষানলে পড়েন! বাংলাদেশের ইতিহাসে সম্ভবত বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব এতটা জোরদার কখনো ছিল না। বিজেপি ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের জন্য যা করেছে, কংগ্রেস তা করতে পারত, করেনি। কংগ্রেস ভেবেছে, ছোট বাংলাদেশ তো ভারতের বন্ধু থাকতেই হবে? মোদি সেই ‘বড়ভাই’ সুলভ ধারণা পাল্টে ছোট দেশ বাংলাদেশকে সম্মানের আসন দিয়েছে। তিস্তা বিষয়টি অমীমাংসিত আছে, এবার পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় আসলে হয়তো তা হবে? বাংলাদেশ-ভারত সুসম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকাকালে সর্বোচ্চ উন্নয়ন, এটাই বাস্তবতা। জনস্বার্থেই বাংলাদেশ-ভারত সুদৃঢ় বন্ধুত্ব অপরিহার্য। নিউইয়র্ক থেকে শিতাংশু গুহ : কলাম লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App