×

মুক্তচিন্তা

মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২১, ১২:১১ এএম

আর কে চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে গর্বিত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের এ চুম্বক অংশটি খুবই প্রাসঙ্গিক এবং এতে ৫০ বছরের সেরা অর্জনের বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে। ব্রিটিশের ১৯০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসন ও ২৩ বছরের পাকিস্তানি দুঃশাসনে বাংলাদেশের মানুষ নির্যাতিত-নিষ্পেষিত হয়েছে। ইতিহাসের নিরিখে বলা হয়, বাঙালির ইতিহাস বীরত্বের ইতিহাস। দুরন্ত সাহসে উজ্জীবিত এ জাতি। ২ হাজার বছর আগেও পদ্মা, মেঘনা, যমুনা পারের মানুষের শক্তি-সামর্থ্য ও বীরত্বের প্রশংসা করেছেন গ্রিকবীর আলেকজান্ডারের সফরসঙ্গীরা। রোমান কবি ভার্জিলের কবিতায়ও স্থান পেয়েছে গাঙ্গেয় বদ্বীপবাসীর প্রশস্তি। কিন্তু ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক এবং পাকিস্তানি জংলি শাসনে বাংলাদেশ তার স্বকীয় মর্যাদা হারাতে চলেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন সে অপমানজনক অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছে। বলা যায়, এ অন্যায়ের প্রতিবাদেই বোনা হয় স্বাধীনতার বীজ। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সৃষ্ট আন্দোলনে যে স্বাধিকারের বীজ বপন করেছিলেন তাকেই সযত্নে লালনপালন করে তিনি স্বাধীন মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পরিণত মহিরুহে রূপান্তরিত করেন। শেখ মুজিব থেকে পরিণত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮-এর আইয়ুব খানবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬ দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন এবং ’৭১-এর রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা পাই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল একটি সুখী-সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ তথা সোনার বাংলা। ৫০ বছরে সে লক্ষ্য অর্জিত না হলেও অর্জনের সঠিক পথেই পা দিয়েছে বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে এ জাতির পদার্পণ ঘটেছে। উন্নত বিশ্বের সোপানে উঠতে এগিয়ে যেতে হবে আরো জোরে, নিরলসভাবে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অর্জিত হয় ঐতিহাসিক বিজয়। এককভাবে আওয়ামী লীগই লাভ করে তিন-চতুর্থাংশের বেশি আসন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। গঠিত হয় মহাজোট সরকার। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা এবং শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার নেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে রেকর্ড সৃষ্টি করে তিনি চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছেন। তার গৃহীত পদক্ষেপে দেশবাসী আজ তার সুফল পাচ্ছে। এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন শেখ হাসিনার। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও কয়েকবার তাকে কারানির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। বারবার তার জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। অন্তত ১৯ বার তাকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তার লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল। সহজ সারল্যে ভরা তার ব্যক্তিগত জীবন। মেধা-মনন, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তার আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। মিয়ানমার সরকারের ভয়াবহ নির্যাতনে আশ্রয়হীন ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে তাদের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করে ‘বিশ্ব মানবতার বিবেক’ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের চলতি অধিবেশনে বিশ্ব নেতারা তার এই মানবিক দৃষ্টান্তের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ়চেতা মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলি তাকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। একবিংশ শতাব্দীর অভিযাত্রায় দিনবদলের মাধ্যমে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার সুনিপুণ কারিগর শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখতেন সেই স্বপ্ন আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা নেতারা ও গণমাধ্যম নানা উপাধি দিয়েছেন। দীর্ঘ ৪০ বছর দলের সভানেত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলেন বলেই রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনা অপরিহার্য। মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App