×

মুক্তচিন্তা

আপস নয়, মৌলবাদের উৎস নির্মূল করুন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২১, ১২:০৮ এএম

ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে মাদ্রাসার ছাত্রদের রাস্তায় নামিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, যাত্রীবাহী বাসে আগুন, ভাঙচুর, রাস্তা অবরোধ, রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টিসহ সন্ত্রাসের তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। বিশেষ করে হেফাজতের ডাকা তিন দিনের কর্মসূচিকে ঘিরে এক ভয়াবহ অরাজকতা সৃষ্টি হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে আসছিলেন হেফাজত নেতারা। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব অনেকটাই পরিকল্পিত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বেছে বেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ব্যাপক ভাঙচুরের পর কেপিআইসহ সরকারি বেশ কিছু স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। এদের ছাড় দিলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকবে। যে কোনো মূল্যে এদের দমন করতে হবে। নির্মূল করতে হবে মৌলবাদের উৎস। মুক্তিযুদ্ধের শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল কার্যক্রমে অনেকটাই সফলতা মিলেছে, সহিংস হামলার ঘটনা হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু জঙ্গি বা উগ্রবাদী কার্যক্রম থেমে আছে, এ কথা বলার অবকাশ নেই। অতি সম্প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে সে কাজ অবিলম্বে বন্ধের দাবি তোলে হেফাজতে ইসলাম। হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছিলেন, যে কোনো দল ভাস্কর্য বসালে তা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেয়া হবে। জামায়াত সমর্থিত হেফাজত-খেলাফতের মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক নেতারা যেসব কথা বলেছেন, সেগুলো সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চরম অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়। এই উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাট্টা দেশের মানুষ। সমস্বরে দাবি উঠেছে, উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার। সংগঠন হিসেবে হেফাজতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি। মৌলবাদী গোষ্ঠী আশকারা পেয়ে মাথায় উঠেছে। এর আগে পাঠ্যপুস্তক কেলেঙ্কারি ও পাঠ্যপুস্তককে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িকতার অপরাজনীতির সঙ্গে সরকারের আপসরফার যে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে, তা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। চিহ্নিত মৌলবাদী গোষ্ঠী নীরবে সংগঠিত হচ্ছে। সামনে হয়তো আরো বড় কোনো হুমকি আসবে। বর্তমান সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানা ধরনের আন্তর্জাতিক ও জাতীয় চাপ উপেক্ষা করে প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিও কার্যকর হয়েছে। এজন্য তিনি নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। এ ক্ষেত্রে তিনি সাহস ও দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা মনে করি, আজ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ যখন হুমকির মুখে তখন সপক্ষের সব সংগঠন রাজনৈতিক ছাত্র যুব মুক্তিযোদ্ধা নারী পেশাজীবীসহ সব দলকে এক প্ল্যাটফর্মে আসতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭টি মামলা হয়েছে। আরো কিছু মামলার প্রস্তুতি চলছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। কোনোভাবেই আর ছাড় দেয়া যাবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App