×

মুক্তচিন্তা

শবেবরাতে করণীয়

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২১, ১২:২৮ এএম

শবেবরাতে করণীয়

করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুহার। এমন পরিস্থিতিতে মুসলমানদের দ্বারে উপনীত মুক্তির রজনী, ভাগ্যের রজনী পবিত্র শবেবরাত। এ রজনীতে মানুষের জন্ম-মৃত্যু ও রিজিকের বার্ষিক বাজেট নির্ধারিত হয়, আল্লাহপাকের অবারিত রহমত, অনুগ্রহ ও মাগফিরাত বান্দাদের ওপর অবতীর্ণ হয় এবং দোয়া ও তওবা কবুল হয়, শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতই হচ্ছে শবেবরাতের রাত। এ রাতে মুসলমানরা সারা রাত ইবাদত-বন্দেগি, নফল ইবাদত, দোয়া দরুদ ও মুনাজাতের মাধ্যমে কাটিয়ে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে। (ইবনে মাজাহ)। ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ; সুতরাং নফল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ। প্রতিটি নফল ইবাদতের জন্য তাজা অজু বা নতুন অজু করা মোস্তাহাব। বিশেষ ইবাদতের জন্য গোসল করাও মোস্তাহাব। ইবাদতের জন্য দিন অপেক্ষা রাত শ্রেয়তর। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ১৪ শাবান দিবাগত রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো; কেননা, এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন; কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি ক্ষমা করব; কোনো রিজিকপ্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব; আছ কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব। এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৩৮৪)। তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা ভাইরাসের আক্রমণের কারণে এ বছর মসজিদে গিয়ে জনসমাগম করে শবেবরাতের রাতে ইবাদত-বন্দেগি করার বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে। ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে মসজিদে গিয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষযে। তাই সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। করোনা ভাইরাস যেহেতু মানুষের হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়, মানুষ নিজেই এর বাহক তাই নিজেকে, অন্য মুসল্লিকে রক্ষার জন্য মসজিদে গমন থেকে বিরত থাকতে হবে। যেহেতু আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দিলে ভাইরাস বেরিয়ে মসজিদের মেঝেতে পড়বে এবং যেহেতু ভাইরাস ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে- সেহেতু অন্য মুসল্লি যদি ওই মেঝেতে নামাজ পড়ে, জীবাণু তার হাতে লাগে এবং স্পর্শকৃত হাত দ্বারা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ স্পর্শ করে তাহলে সে মুসল্লি সংক্রমিত হতে পারে। তাই শবেবরাতের নামাজ মসজিদে না পড়ে ঘরে আদায় করা উচিত। করোনা ভাইরাস আমাদের শিখিয়েছে, মানুষ শিল্পে, শিক্ষায়, শক্তিতে, সমরাস্ত্রে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে যতই উন্নতি লাভ করুক না কেন ক্ষুদ্র একটি ভাইরাসের কাছে সে কত অসহায়। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে শবেবরাতের রাতে আলোকসজ্জা না করে, আতশবাজি না ফুটিয়ে, মসজিদে জনসমাগম না করে ঘরে বসে ইবাদত-বন্দেগি করতে হবে, তওবা এস্তেগফার করতে হবে, বেশি বেশি করে পড়তে হবে- ১. লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জোয়ালেমিন। ২. আল্লাহুম্মারফা আন্নাল বালা ওয়াল ওয়াবা। ৩. আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারসি ওয়াল জুনুনি, ওয়াল জুজামি। ৪. হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল, আলাল্লাহি তাওয়াক কালনা। সর্বোপরি সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

সাইফুল হক সিরাজী : শিক্ষক ও লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App