×

জাতীয়

ছুটির দিনে জমলো বইমেলা, তবে বিক্রি কম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২১, ০৭:৩২ পিএম

ছুটির দিনে জমলো বইমেলা, তবে বিক্রি কম

সোমবার ছুটির দিন সন্ধ্যায় বইমেলায় বইপ্রেমীদের ঘুরাফেরা। ছবি: ভোরের কাগজ

ছুটির দিনে জমলো বইমেলা, তবে বিক্রি কম

বইয়ের টানে সোমবার বইমেলায় একদল শিক্ষক। কিনলেন পছন্দের বই। ছবি: ভোরের কাগজ

ছুটির দিনে জমলো বইমেলা, তবে বিক্রি কম

দিনাজপুর থেকে আগত একদল শিক্ষক লেখক-গবেষক বইপ্রেমী। ছবি: ভোরের কাগজ

হরতালের কারণে হঠাৎই দর্শকশূন্য হয়ে যাওয়া বইমেলা একদিন পরেই জমে উঠেছে। পাঠক-বইপ্রেমী আর দর্শকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে গোটা বইমেলা চত্বর। বিশেষ করে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে সোমবার (২৯ মার্চ) বিকেলে যেন ঢল নামে মানুষের। চত্বর জুড়ে স্থাপন করা বেঞ্চগুলোতে তিল ধারণের জায়গা নেই। পবিত্র শবে বরাতের ছুটি ‍উপলক্ষে অফিস, আদালত, কর্মক্ষেত্র বন্ধ থাকায় মেলায় ভিড় বেড়েছে। বিকেল তিনটায় মেলা চত্বর উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকেই আসতে থাকে মানুষ।

তবে হঠাৎ করে জমে উঠলেও খুশি হতে পারছেন না স্টল মালিকরা। মেলায় যে হারে মানুষ এসেছে সে হারে বিক্রি জমে উঠেনি। অনেকেই দলবলসহ স্টলে আসছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ বই কিনছেন। তাই স্টলের সামনে জটলা থাকলেও বই বিক্রি তেমন হচ্ছে না।

স্টল মালিকরা বলছেন, মেলায় আগতরা বেঞ্চগুলোতে বসে আড্ডা আর গল্পগুজবে মেতেছে। অনেকেই ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারসহ এসেছেন। তবে তাদের মধ্যে বই কেনার বদলে আড্ডা আর ঘোরাঘুরির প্রবণতাই বেশি। অনেকে আবার মেলা চত্বরকে বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে ভাবছেন।

[caption id="attachment_274854" align="alignnone" width="1280"] দিনাজপুর থেকে আগত একদল শিক্ষক লেখক-গবেষক বইপ্রেমী। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

মেলায় এসে আড্ডায় মেতে ওঠা অরিত্র সরকার জানালেন, ছুটির দিন তাই মেলায় এসেছি। বইও কিনবো, তবে ফেরার আগে। এখন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে গল্প হচ্ছে। বই নিয়েও কথাবার্তা চলছে। কার লেখা ভালো, কোন বই কেনা যায়- এসবও কিন্তু আড্ডায় উঠে এসেছে।

ইতিহাস সম্মিলনী আয়োজিত একটি কর্মশালা শেষে বই মেলায় ঘুরতে এসেছেন দিনাজপুর মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক আলী সায়েদ, দিনাজপুর আজকের দেশবার্তা পত্রিকার সাংবাদিক আজহারুল আজাদ জুয়েল, দিনাজপুর কারেন্ট হাট কলেজের অধ্যাপক মীজানুর রহমান, দিনাজপুর সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল বিশ্বাসসহ ৮/১০ জনের একদল লেখক গবেষক শিক্ষক এবং বইপ্রেমী। দেখা গেল প্রত্যেকের হাতে হাতে বইয়ের ব্যাগ।

তারা জানালেন, মেলায় এসে বেশ ভালো লাগছে। এমন পরিচ্ছন্ন এবং ছিমছাম বই মেলাই চাই। যেখানে কারো সাথে কারো ধাক্কা লাগবে না। তবে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানলেও দুয়েকজনকে দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এমন হলে অসচেতন মানুষদের জন্য সচেতন যারা তাদেরও বিপদ ঘটবে। সবার উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে বই মেলায় ঘুরতে আসা। কিছু বই কেনা হয়েছে। পরিস্থিতি ভালো থাকলে আবারো মেলায় আসব আশা করছি।

মিরপুর থেকে আসা সুদেষ্ণা সেন বললেন, এমন নিরিবিলি মেলাই ভালো লাগে। আজকে অনেকগুলো বই কিনেছি। তবে আরো কিছু বই খুঁজছি। আগের বছরের চেয়ে এবার বইকেনার বাজেট যদিও কিছুটা কম। তাই বেছে বেছে বই কিনছি। তাছাড়া মেলায় আলোচিত কোনো বইও দেখছি না। তাই দেখে দেখে বই কিনছি, অনেককে কেনার উৎসাহ দিচ্ছি।

আগামী প্রকাশনীর বিক্রয় কর্মী মাহমুদুল হাসান মামুন জানালেন, সমাগম বেশি, তবে ক্রেতা কম । অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে, দু'একজন আসছে লিস্ট নিয়ে বই কালেকশন করতে। তবে আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না।

আহমদ পাবলিশিং হাউস এর বিক্রয় প্রতিনিধি আরেফিন বলেন, ৬৭ বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠান আমাদের। অথচ এবারের মেলায় আমাদের বিক্রির অবস্থা খুবই খারাপ। স্বাভাবিক সময়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বই মেলায় আমাদের বিক্রি হতো কমপক্ষে ৬০ হাজার টাকা। কিন্ত ছুটির দিনে ছয়শো টাকাও বিক্রি করতে পারিনি। আজকে যা বিক্রি হয়েছে তাতে আমাদের স্টাফ খরচও উঠবে না।

বেহুলা বাংলার বিক্রয়কর্মী শুভ জানালেন, গতকাল হঠাৎ করেই মেলা চত্বর ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। তবে আজ বহু মানুষ এসেছে মেলায়। স্টলে এসে ভিড়ও করছে। কিন্তু যে রকমটি আশা করছি তেমন বিক্রি হচ্ছে না। তারপরেও আশা রাখছি বিক্রি বাড়বে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App