×

সম্পাদকীয়

আঞ্চলিক সহযোগিতা আরো অগ্রসর হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২১, ১২:২৪ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এবারের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলে আলোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে আগামী দিনে কানেক্টিভিটি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যৌথ সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ ছাড়া আটটি নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কে নতুন গতি সঞ্চার হয়েছে। ভারতে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পরে তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে গভীর সম্পর্কের ভিত রচিত হয়েছিল, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিষয়টিও আরো গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে বলা যায়। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে বরাবরই একটি বিষয় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা হলো সীমান্তে হত্যাকাণ্ড। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণভাবেই অগ্রহণযোগ্য। বৈঠকে শেখ হাসিনা তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করা এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি চূড়ান্ত করা হবে বলে বরাবরের মতো আশ্বাসের বাণী শুনিয়ে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে যে কয়টি বিষয় নিয়ে খুব বেশি টানাপড়েন চলছে, তার মধ্যে তিস্তা ইস্যু একটি। উত্তরাঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন তিস্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশেষ করে তিস্তা অববাহিকার ৫ হাজার ৪২৭টি গ্রামের মানুষ তাদের জীবিকার জন্য এই নদীর ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। তাই তিস্তার পানির প্রবাহ কমে যাওয়া আমাদের জীবন ও জীবিকায় আঘাতস্বরূপ। সময় এসেছে তিস্তা নিয়ে নতুন করে ভাবনার। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সীমান্ত হত্যা দমন করা। আমরা জানি, উভয় দেশের সীমান্ত এলাকা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল। অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য ইতোমধ্যে সীমান্তে কয়েকটি সীমান্ত হাট চালু করা হয়েছে। হাটের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পুরো সীমান্ত এলাকাকে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে উভয় দেশের জন্য অর্থনৈতিকভাবে কীভাবে লাভজনক করা যায় সেই জায়গায় মনোযোগী হওয়া দরকার। যেখানে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা, মানুষ পাচার এবং চোরাচালান বন্ধে যৌথ উদ্যোগ ও দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা ও আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে দুই দেশ কাজ করছে, সেখানে সীমান্তে গুলি-হত্যা কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত নয়। রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ভারত বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্যও ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মানবিক কারণেই প্রতিবেশী মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের বাড়তি দায়িত্ব বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই বড় বোঝা। আমরা আশা করছি, দ্রুত এই সংকটের সমাধানে ভারত সহযোগী হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। ভারতের কাছে আমাদের প্রত্যাশা দীর্ঘদিনের। নদীর পানি বণ্টন, জলবায়ু ইস্যু, সীমান্ত নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো সমাধানে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App