আজ রবিবার (২৭ মার্চ) দোল পূর্ণিমা বা হোলি উৎসব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবটি বাংলাদেশে দোলযাত্রা বা দোল পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। দোল পূর্ণিমা বাংলা এবং উড়িষ্যার প্রধান ধর্মীয় উৎসব যা প্রতি বছর পালিত হয়।
এ উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন মন্দিরে পূজা, হোমযজ্ঞ, প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। এছাড়াও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দোল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর উৎসবটি শুধু পূজা, হোমযজ্ঞ ও প্রসাদ বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী দোলযাত্রা উদযাপন করার আহ্বান করেছে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।
এদিকে দোল পূর্ণিমার দিনে হেফাজত ইসলাম আহুত হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। এক বিবৃতিতে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত জনগণের বিশাল একাংশের ধর্মীয় অনুভূতিকে বিবেচনায় নিয়ে আহুত হরতাল প্রত্যাহার করা হবে মর্মে আশা প্রকাশ করেন।
হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি বছর ফাগুন পূর্ণিমা রাতে ন্যাড়া পোড়া হয়। এই বছর দোল পূর্ণিমা বাংলার ১৪ চৈত্র এবং ইংরেজির মার্চের ২৮ তারিখ । দোলযাত্রার পরদিন হোলি উৎসব অর্থাৎ সোমবার পালিত হবে।
দোলযাত্রা হিন্দু বৈষ্ণবদের উৎসব। বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, এ দিন শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে রাধিকা এবং তার সখীদের সঙ্গে আবির খেলেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি। এ কারণে দোলযাত্রার দিন এ মতের বিশ্বাসীরা রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহ আবিরে রাঙিয়ে দোলায় চড়িয়ে নগর কীর্তনে বের হন। এ সময় তারা রং খেলার আনন্দে মেতে ওঠেন। এই দিনে অনেক বাড়িতেই রাধা-গোবিন্দের পূজাও করা হয়। এই পূর্ণিমা তিথি তাই অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। বিশ্বের অনেক স্থানে উৎসবটি শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা নামে অধিক পরিচিত হলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মাদ্রাজ, উড়িষ্যা প্রভৃতি স্থানে দোল উৎসব এবং উত্তর, পশ্চিম ও মধ্য ভারত ও নেপালে হোলি নামে পরিচিত। কোনো কোনো স্থানে এ উৎসবকে বসন্ত উৎসবও বলা হয়।
দ্বাপর যুগ থেকে পুষ্পরেণু ছিটিয়ে রাধা-কৃষ্ণ দোল উৎসব করতেন। সময়ের বিবর্তনে পুষ্পরেণুর জায়গায় এসেছে আবির। সারাদেশে সকাল থেকে শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত এ উৎসব চলবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পরস্পরকে আবির মাখিয়ে এ উৎসব উদযাপন করবেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।