×

জাতীয়

তিস্তা নিয়ে নতুন কিছু বলেননি মোদি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২১, ০৮:৩৩ পিএম

তিস্তা নিয়ে নতুন কিছু বলেননি মোদি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ছবি: ভোরের কাগজ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে তিস্তা প্রসঙ্গ উঠলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন কিছু বলেননি।

শনিবার (২৭ মার্চ) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পররাষ্টমন্ত্রী।

[caption id="attachment_274377" align="alignnone" width="879"] রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে একটি আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সফরটি যদিও কিছুটা সেরিমোনিয়াল, তারপরও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বহুমাত্রিক ও বিস্তৃত পরিসরে দুই পক্ষের মধ্যে অত্যন্ত অর্থবহ ও কিছুটা সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে।

এ সময় আন্ত:সীমান্ত নদী নিয়ে একে মোমেন বলেন, যৌথ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার ওপর বাংলাদেশের অলংঘনীয় অধিকারের বিষয়টি বরাবরের মতোই জোরালোভাবে উত্থাপন করেছেন  প্রধানমন্ত্রী। তিনি তিস্তার পানিবণ্টনের “অন্তর্বর্তী চুক্তি” দ্রুত সম্পাদনের জোর দাবী পুনর্ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, চুক্তিটি দ্রুত স্বাক্ষরে ভারত আন্তরিকভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং এ বিষয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমার—এই ছয়টি আন্তঃসীমান্ত নদীর পানিবন্টনের অন্তর্বর্তী চুক্তির ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্তকরণের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই বৈঠকের ফলে দুই প্রধানমন্ত্রী বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও বেগবান ও জোরদার হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। মানবসম্পদ ও ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, সন্ত্রাসবাদ অবসান ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রগতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জিত অভূতপূর্ব সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উৎসব যৌথভাবে উদযাপনের বিভিন্ন পরিকল্পনাও তাঁদের আলোচনায় স্থান পায়। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে ২০২২ সালে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুজিবনগর-নদীয়া সড়কটিকে “স্বাধীনতা সড়ক” নামকরণে বাংলাদেশের প্রস্তাবকে ভারত স্বাগত জানিয়েছে।

পররাষ্ট্র আরও জানান, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ভারসাম্য বাংলাদেশের অনুকূলে আনা এবং বাণিজ্য অবারিত করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ট্রেড ফেসিটিলিজ মেজার নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার অপসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। বাংলাদেশ থেকে পাটজাত পণ্য রপ্তানির ওপর ২০১৭ সাল থেকে ভারত কর্তৃক আরোপিত এন্টি ডাম্পিং প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে বর্ধিত হারে ভারতীয় বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে শক্তিশালী আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির প্রয়োজনীয়তার ওপর দুই নেতা জোর দেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। “ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় হাইওয়ে ” প্রকল্পে যুক্ত হতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা ভারতকে জানানো হয়েছে। ভারতীয় ভূখন্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে আরো বৃহত্তর পরিসরে একসেস চায় বাংলাদেশ। এজন্য বাংলাদেশ নতুন কিছু রুট অনুমোদনের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে। সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া “চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেল রুট” ব্যবহার করে ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল কানেক্টিভিটি স্থাপনের বিষয়ে আমাদের আগ্রহের কথাও ভারতকে জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে ক্রয়কৃত অবশিষ্ট ভ্যাক্সিন নিয়মিত সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানী ক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতা, বিশেষত নেপাল ও ভুটানকে সাথে নিয়ে উপআঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সীমান্তে একজন বাংলাদেশীও যেন কোনো কারণেই BSF কর্তৃক নিহত না হন, সেটি নিশ্চিত করার জোরালো দাবী উত্থাপন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। সীমান্তে শান্তি, সম্প্রীতি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার লক্ষ্যে দুদেশকে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাবার নির্দেশনা দিয়েছেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App