×

সারাদেশ

মুক্তিযোদ্ধা সহায়তাকারীদেরও তালিকা করা দরকার: সিইসি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২১, ০৯:৩৮ পিএম

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, যারা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করেছেন শুধু তারাই মুক্তিযোদ্ধা নয়। যারা ঘরে বসে রান্না করেছেন, জীবনবাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন তারাও মুক্তিযোদ্ধা। আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। আমার হাতে রাইফেল ছিল, গ্রেনেড ছিল। আমাদের অবস্থান ছিল হয় মরবো, না হয় মারবো।

কিন্তু ওরা কারা, যারা রান্না করে খাইয়েছিলেন, যারা বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করেছিলে? প্রশ্ন রাখেন সিইসি। সুতরাং সকলেই মুক্তিযুদ্ধে ছিল। এরাও মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধার অনেক তাৎপর্য। কথা হলো মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করা ঠিক হয়নি এমন মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, এই স্বাধীনতা সহজে আসে নাই। এটাকে রক্ষা করা এবং দিনে দিনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমার আপনার সকলের দায়িত্ব। এসব কথা বলতে বলতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে উপলক্ষে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ইসি সচিব মো হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.), বীর মুক্তিযোদ্ধা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. এস এম আনোয়ারা বেগম, ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএম নূরুল হুদা বলেন, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের ৭ তারিখ পটুয়াখালী মুক্ত হবার পর ৮ তারিখে পুরো জেলা দখল করে নেই। এর কয়েকদিন পরে তখন টাকা পয়সা হাতে ছিল না। আমার ক্যাম্পে ৩০০ লোক। কীভাবে খাওয়াবো?

একদিন আওয়ামী লীগ নেতা কাশেম আমাকে পোস্ট অফিসে যেতে বললেন। একটা রিকশা নিয়ে পোস্ট অফিসে গেলাম। যাওয়ার পরে পোস্ট অফিসের কয়েকজন কর্মচারী লাল কাপড়ে মোড়া একটি পোটলা আমার হাতে দেন। আমি বললাম এতে কী আছে? তারা বললেন, খুলে দেখেন। পরে খুলে দেখি ওর মধ্যে ১০, ২০, ৫০ টাকার নোট। তবে ১০০ টাকার নোট ছিল কি না আমার মনে নেই। টাকা কোথায় পেলে এমন প্রশ্ন করলে তারা বলেন- ‘পাকিস্তান বাহিনীর সদস্যরা বাড়িতে মানি অর্ডার করার জন্য দিয়েছিল। একটা টাকাও তারা পাঠায়নি।

এসব গল্প বলতে গিয়ে সিইসির কণ্ঠ ভারি হয়ে আসে। এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন- ‘এরা যে টাকাগুলো পাঠায়নি, কত বড় ঝুঁকি তারা নিয়েছিল! পাকিস্তান বাহিনী জানতে পারলে তাদের লাশ নদীতে ভাসতো। এই হলো মুক্তিযোদ্ধা।

ড. এস এম আনোয়ারা বেগম বলেন, ১৯৭১ সালে সবাই মুক্তিযোদ্ধা ছিল। আমরা বন্দুক ও গ্রেনেড নিয়ে যুদ্ধ করেছি বলেই মুক্তিযোদ্ধা হব, সেটা হতে পারে না। কারণ ওই সময় আমরা যুদ্ধ করলেও বেশিরভাগ মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের যারা সহযোগিতা করেছেন তারাও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App