×

মুক্তচিন্তা

পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২১, ১২:০৭ এএম

এক বছরে রাজধানী ঢাকা শহরে বায়ুদূষণ ১০ শতাংশ হারে বেড়েছে বলে একটি যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে। রাজধানীর পুরান ঢাকার আশপাশের এলাকায় দূষণ সবচেয়ে বেশি বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। আবাসিক এলাকা ধানমন্ডি, গুলশান, বাড্ডা ও বনানীতে দূষণের মাত্রা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। বায়ুদূষণের এ ঘটনা প্রথম নয়। এর আগে গত বছরজুড়েই দূষিত বায়ু বইছিল ঢাকায়। এ অবস্থায় গবেষণা সংস্থার পর্যবেক্ষণটিকে অবশ্যই আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে এখনই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত। সংস্থাটি জানায়, ২০২০ সালে ঢাকা শহরের ৭০টি স্থানের গড় বস্তুকণা ২.৫ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৩৩৫.৪ মাইক্রোগ্রাম। ভ‚মি ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে ২০২০ সালে ৫টি এলাকার বস্তুকণা ২.৫ গড় মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৩৩৫.৪ মাইক্রোগ্রাম, যা ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় ১০.২ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বস্তুকণা ২.৫ গড় মান পাওয়া যায় প্রতি ঘনমিটারে ৩০৪.৩২ মাইক্রোগ্রাম। জানা গেছে, চলতি বছরে বায়ুদূষণের প্রভাবে বিশ্বের প্রায় ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটতে পারে। সেই সঙ্গে বায়ুদূষণ অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বায়ুদূষণ আমাদের জীবিকা এবং ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিচ্ছে। মানুষের জীবন হারানো ছাড়াও বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা খরচ পড়ছে প্রায় ২২৫ বিলিয়ন ডলার। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বায়ুমÐলীয় অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে এবং এর পরিবর্তনের কারণে বায়ুদূষণের প্রভাব আরো খারাপ হচ্ছে। এছাড়া কলকারখানাসহ বিভিন্ন জায়গার জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে অপরিকল্পিত নগরায়নকে বায়ুদূষণের জন্য সবচেয়ে দায়ী হিসেবে উল্লেখ করছে। গত ৪০ বছরে ঢাকা শহরে সুউচ্চ ভবন ও অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ৭৫ শতাংশ চাষযোগ্য জমি হারিয়ে গেছে। এছাড়া নন-কমপ্লায়েন্স শিল্প ও অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফলে শহরের বাতাস এবং ভ‚পৃষ্ঠের পানি দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশে পরিবেশের মারাত্মক সমস্যাগুলোর অন্যতম বায়ুদূষণ। শহরে বায়ুদূষণের প্রধান দুটি উপাদান হলো শিল্পকারখানা ও যানবাহন। বায়ুদূষণের উপাদানগুলো মূলত ধূলিকণা, সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রো কার্বন, কার্বন মনোক্সাইড, সিসা ও অ্যামোনিয়া। অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা স্থাপনে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে বায়ুদূষণ ক্রমাগত বাড়ছে। ক্ষতিকর উপাদানগুলোর ব্যাপকহারে নিঃসরণ ঘটছে। যাদের বেশিরভাগই দরিদ্র জনগোষ্ঠী, তারা সিসা দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে। এ কারণে বিশেষ করে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশে (আইকিউ) ও স্নায়বিক ক্ষতি হতে পারে এবং গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভপাত ও মৃত শিশু প্রসবের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে। পরিবেশ দূষণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এ ব্যাপারটি সম্পর্কে আমাদের সচেতনতা আছে। কিন্তু নেই সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ এবং অভিজ্ঞতা, যা কাজে লাগিয়ে বাস্তবায়ন করা যায় বসবাসযোগ্য পরিবেশ। জাতীয়ভাবে পরিবেশ রক্ষার জন্য এবং পানি সুরক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত, সচেতন হওয়া উচিত। সর্বোপরি, পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App