×

মুক্তচিন্তা

অগ্নিঝরা মার্চ আমার অহংকার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২১, ১২:০৮ এএম

মো. জিল্লুর রহমান আমার মতো অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। কিন্তু এর তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারছি। স্বাধীনতা অর্জন করতে আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। পাহাড়সম মনোবল নিয়ে কখনো কোনো জাতি পরাধীন থাকতে পারে না। বাঙালি জাতি এমনই এক বীরের জাতি। স্বাধীনতা আমাদের অহংকার। মার্চ মাস আমাদের অগ্নিঝরা গৌরবের মাস। অহংকার ও প্রেরণার মাস। স্বাধীনতা ঘোষণার মাস। আনুষ্ঠানিক সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরুর মাস। সারা বিশ্ব জানে, দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ ও দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। বিশ্বের অন্য কোনো দেশের ইতিহাসে এমন চিত্র দেখা যায়নি। স্বাধীনতা আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহস জোগায়। আমাদের দেশ দ্রæত উন্নত হচ্ছে। আমরা এখন একটি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক হতে চলেছি। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বের দরবারে আমাদের দেশ একদিন নেতৃত্ব দেবে। বিজয়ের পতাকা আমাদের সব সময় উড়বে। একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া ঐতিহাসিক ভাষণ রেডিওতে প্রচার না করায় প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বাংলার মানুষ। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে বেতারকর্মীরা। বন্ধ হয়ে যায় রেডিওর সম্প্রচার। ফলে ৮ মার্চ সকালে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রেডিওতে প্রচারে বাধ্য হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে বাঙালি জাতি নতুন করে স্বাধীনতায় উদীপ্ত হয়ে ওঠে। ঘরে ঘরে শুরু হয় স্বাধীনতার প্রস্তুতি। এক কথায় গোটা পূর্ব বাংলা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পরিচালিত হয়। শুরু হয় অদম্য সাহস আর আত্মপ্রত্যয়ের স্বাধীনতার সংগ্রাম। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারি ভাষার জন্য যে আগুন জ্বলে উঠেছিল, মার্চে এসে সেই আগুন যেন ছড়িয়ে পড়ে বাংলার সর্বত্র। এরপর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ৬ দফা এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে নতুন বার্তা। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এর আগে ২৫ মার্চ রাত ১টার দিকে পাকিস্তানি সৈন্যরা বঙ্গবন্ধুকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিরা বাঙালির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বাঙালি নিধনে নামে। ঢাকার রাস্তায় সৈন্যরা নির্বিচারে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষককে হত্যা করে। এরপরের ঘটনাপ্রবাহ প্রতিরোধের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর আহŸানে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা হয়। আবালবৃদ্ধবনিতা যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে জাতি লাভ করে স্বাধীনতা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির এ ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণে অগ্নিঝরা এ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব বীর সেনানির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। সতিশ সরকার রোড, গেন্ডারিয়া, ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App