পাকিস্তানে হিজড়াদের সমাজবিরোধী কার্যকলাপ থেকে সরিয়ে আনতে প্রথমবারের মতো তাদের জন্য ব্যক্তি উদ্যোগে মাদ্রাসা চালু করা হয়েছে।

হিজড়াদের মাদ্রাসাপ্রধান রিনা খান বলেন, বেশিরভাগ পরিবার হিজড়াদের গ্রহণ করে না। তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। ফলে হিজড়ারা অন্যায় কাজ ও বিভিন্ন সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়।

তিনি বলেন, এক সময় আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম। কান্না আটকে রেখে রিনা খান নিজের খারাপ সময়ের কথা বলেন, তার পরিবার ১৩ বছর বয়সে অস্বীকার করেছিল তাকে। পরে তিনি ভিক্ষা করতে বাধ্য হন। ১৭ বছরে একটি হিজড়া দলে যোগ দেন। বিয়ে ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে তাকে দিয়ে নাচানো হতো। পরে তিনি এসব ছেড়ে দেন।

[caption id="attachment_273281" align="aligncenter" width="770"] মাদ্রাসা প্রধান রিনা খান। ছবি: আলজাজিরা[/caption]

এই মাদ্রাসাপ্রধান আরও বলেন, স্কুলটি করতে সরকারের কাছ থেকে সহায়তা পায়নি। যদিও কিছু কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের চাকরির জন্য সহায়তা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি শিক্ষার্থীদের সেলাই প্রশিক্ষণ দেন। কিছু অনুদানের পাশাপাশি তহবিল সংগ্রহের আশায় ছাত্রদের সেলাই এবং হাতের কাজ শেখাচ্ছেন।

পাকিস্তানের সংসদ তৃতীয় লিঙ্গকে ২০১৮ সালে স্বীকৃতি দিযয়েছে। তাদের ভোটাধিকার প্রদান করে। তবুও হিজড়া সম্প্রদায়টি দেশের প্রান্তিকেই রয়ে গেছে। জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রায়ই ভিক্ষা, নাচ এবং বেশ্যাবৃত্তির কাজ করে।

[caption id="attachment_273282" align="aligncenter" width="770"] হিজড়াদের সেলাই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন রিনা খান। ছবি আলজাজিরা[/caption]

ইসলামাবাদের জেলা প্রশাসক হামজা শফকাত বলেন, মাদ্রাসাটি মূলধারার সমাজে তাদের একীভূত করতে সহায়তা করতে পারে। আমি আশাবাদী যদি অন্য শহরগুলোতেও এই ব্যবস্থা করা যায় তবে উন্নতি হবে।

এর আগে ঢাকায় হিজড়াদের জন্য একটি মাদ্রাসা চালু হয় এবং গত বছর পাকিস্তানের করাচিতে খ্রিস্টান ট্রান্সজেন্ডার গোষ্ঠী নিজস্ব গির্জা শুরু করেছে।

পাকিস্তানের ২০১১ সালের আদমশুমারিতে প্রায় ১০ হাজার হিজড়ার কথা বলা হলেও ট্রান্স রাইটস গ্রুপ বলছে সংখ্যাটি তিন লাখেরও বেশি হতে পারে।