×

মুক্তচিন্তা

সাম্প্রদায়িক ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্থানের যুগপৎ ও নেপথ্য কৌশল

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২১, ১২:৪১ এএম

২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বছর পালনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হতে না হতেই করোনার কারণে তা সীমিত করা হয়। তবে স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী এবং উগ্র হঠকারী বিভিন্ন শক্তি বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বছর উদযাপনকে মোটেই ভালোর চোখে দেখেনি। সমাজের অভ্যন্তরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বছর পালন নিয়ে এসব অপশক্তি বিভিন্ন ধরনের কটূক্তি ও অপপ্রচার চালিয়েছিল। গত বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসের দিকে হেফাজত, খেলাফত এবং ধর্মীয় আরো কিছু গোষ্ঠী নানাভাবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে থাকে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা ও বুড়িগঙ্গায় নিক্ষেপ করার হুমকিও দেয়া হয়। অন্যদিকে বিএনপিসহ বেশকিছু রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠন সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি, সরকার উৎখাতের দিনক্ষণ ঘোষণা করছিল। ডিসেম্বর মাসে তাদের কিছু কর্মসূচি এমনভাবে পালিত হচ্ছিল যাতে বুঝা যাচ্ছিল হেফাজতসহ ধর্মীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে যুগপৎভাবে এরা বিএনপিসহ বেশকিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সরকার উৎখাতে অগ্রসর হচ্ছিল। এক্ষেত্রে বিএনপি এবং নাগরিক গোষ্ঠী হেফাজত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ভাস্কর্য ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিল। তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বিএনপিসহ সম্মিলিত নাগরিক সমাজ দেশে গণঅভ্যুত্থানের ডাক দিত। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তাদের সেই লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। অন্যদিকে হেফাজতের মূলনেতা বাবুনগরী এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক দেশব্যাপী ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলের নামে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, ভারত এবং দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে নানা ধরনের উত্তেজনাপূর্ণ উক্তি করে বেড়াচ্ছেন। তাদের এসব বক্তব্য ইউটিউবের মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে। একটি বিশেষ গোষ্ঠী তথাকথিত সামাজিক গণমাধ্যমে এসব বক্তব্য রাত-দিন প্রচার করে চলছে। মার্চ মাসের শুরুতে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিএনপি প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। তাতে ১৯৭১ সালের ওই সময়ের ঘটনার নানা বিভ্রান্তিকর ও বিকৃত তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ের ইতিহাস নিজেদের মতো করে তুলে ধরছে। গণমাধ্যমে বিএনপি নেতাদের সেসব বক্তব্যের কিছু অংশ প্রচারিত হচ্ছে, যা কখনো কখনো মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানা মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তবে বিএনপি কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার অংশ হিসেবেই এসব কর্মসূচি পালন করছে। একদিকে বিএনপি এবং নাগরিক সমাজের কিছু কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র, শেখ হাসিনার উন্নয়ন রাজনীতি ইত্যাদি নানা ধরনের উক্তি করে যাচ্ছিল, অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হেফাজতে ইসলাম ধর্মীয় ওয়াজের নামে দেশে ভিন্নধর্ম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নানা ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে আসছে। বুঝাই যাচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে হেফাজতে ইসলামকে সম্মুখে এগিয়ে নিয়ে কোনো কোনো মহল দেশে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি, ভারত বিরোধিতা ছড়িয়ে দেয়া এবং সরকারের উদ্যোগে ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ ১০ দিনের কর্মসূচির সমালোচনা করে বক্তব্য বিভিন্ন মাধ্যমে বিস্তৃত করে যাচ্ছিল। যেহেতু সরকার ১০ দিনের কর্মসূচি নিয়ে কিছুটা ব্যস্ত রয়েছে, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল ও ভুটানের শীর্ষ নেতারা ভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে, তাই দেশের অভ্যন্তরে ভারতের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ নিয়ে নরেন্দ্র মোদির আগমনকে বাধা দেয়ার একটি প্রয়াস লক্ষ করা গেছে। বাবুনগরী ঘোষণা করেছিলেন মোদি ঢাকায় এলে শাপলা চত্বরে কাপনের কাপড় পরা হবে। দুঃখজনক অভিজ্ঞতা হলো বাংলাদেশের কিছু কিছু বাম ছাত্র সংগঠনও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরুদ্ধে মিছিল করার কথা ঘোষণা করেছে। বিএনপির মহাসচিব দক্ষিণ এশিয়ার ৫ দেশের সরকার প্রধানদের আগমনকে স্বাগত জানাননি বরং এটিকে তিনি সরকারের উন্নয়ন সাফাই গাওয়ার বিদেশিদের সনদ হিসেবে অভিহিত করেছেন। গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হেফাজতে ইসলাম শানে রিসালাত নামে এক সমাবেশের আয়োজন করে। মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক ভাস্কর্যবিরোধী যে বক্তব্য প্রদান করেন তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একজন সংখ্যালঘু তরুণ ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস প্রদান করে তাতেই স্থানীয় হেফাজত সমর্থকরা শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে বড় ধরনের হামলা করে। এতে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে। প্রায় ৮৫টি সনাতন ধর্মাবলম্বীর বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট, নিরীহ মানুষের ওপর হামলা করে। এতে কয়েকজন নারী-পুরুষ শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। তাদের ঘরবাড়িতে থাকা টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, জিনিসপত্র লুট করা হয়। ভাঙা হয় ৭টি মন্দির এবং রক্ষিত প্রতিমা। এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ৬১ বছরের একজন স্বাধীন নামের যুবলীগ কর্মীর নাম গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। বিএনপি উক্ত যুবলীগ কর্মীর পরিচয়টিকে খুব আগ্রহের সঙ্গে প্রচার করে বলার চেষ্টা করেছে যে বাংলাদেশে যত সাম্প্রদায়িক দুর্ঘটনা ঘটানো হচ্ছে তার পেছনে আওয়ামী লীগ জড়িত থাকে। পরে অবশ্য স্থানীয় যুবলীগ এক বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে যে, ৬১ বছর বয়সের স্বাধীন নামক ইউপি সদস্য কখনো যুবলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। স্বাধীন ১৫ তারিখের সমাবেশে অন্যতম একজন হেফাজতের কর্মী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে দোষ চাপানোর একটি অপচেষ্টা এখানে করা হয়েছে। যেসব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিংবা যারা মসজিদের মাইক ব্যবহার করে সঙ্ঘবদ্ধভাবে গ্রামের নিরীহ মানুষদের ওপর হামলা চালিয়েছে তাদের বিচারের বিষয়টি বিএনপি কিংবা বামপন্থি দলগুলোর কোনো বক্তব্যে পাওয়া যায়নি। হেফাজতের ইসলামের পক্ষ থেকেও নয়। অন্যদিকে মাগুরা এক আসনে কয়েকটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামে মোটরসাইকেলযোগে বেশকিছু তরুণ হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের দাওয়াত দিয়ে বিরাট চিঠি বিতরণ করে আসে। বিষয়টি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্যই শুধু নয়, সবার জন্যই বেশ উদ্বেগজনক। প্রতিটি মানুষ তার ধর্ম পালন করবে, সেখানে অন্য ধর্মাবলম্বীদের বলার বা ধর্মান্তরিত করার প্রচেষ্টা মোটেও কাম্য নয়, গ্রহণযোগ্যও নয়। ধর্ম মানুষের জন্মগতভাবে প্রাপ্ত বিষয়। যে শিশু যে ধর্মাবলম্বী পরিবারে জন্মগ্রহণ করে সে তার ঐতিহ্য হিসেবেই সেই ধর্মাবলম্বী পরিচয়ে বড় হয়। প্রতিটি মুসলমানও একইভাবেই বড় হন। সুতরাং অন্য ধর্মাবলম্বীকে তার ধর্ম ঠিক নয়, সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক নির্ধারিত নয়, এমন দাবি করা কতটা ধর্ম সম্মত কিংবা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাপ্রসূত সেটি যে কোনো বিবেকবান মানুষেরই বোঝার বিষয়। পৃথিবীর সবকিছুই যদি সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি হয় তাহলে ৪ হাজার ২০০টি ধর্ম এবং ধর্মানুসারীরাও সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছানুসারেই ধর্মীয় বিশ্বাস, আচার, অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। মানুষ হিসেবে আমাদের অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম, বিশ্বাস ও আচার-আচরণ সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল থাকা মানুষ হিসেবে উত্তম কাজ হতে পারে। একুশ শতকে আমরা জ্ঞানবিজ্ঞানে অনেক কিছু বুঝতে শিখেছি, সভ্য হওয়ার শিক্ষাও লাভ করছি। কিন্তু আমরা যদি এভাবে অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি বিদ্বেষহীন মানসিকতা পোষণ করি কিংবা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস আচরণকে কটাক্ষ করি অথবা তাদের বিশ্বাসরত দেবদেবীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও ভাঙচুর করার মতো ঘটনা ঘটাই, তাহলে সেটি ধার্মিক মানুষ হিসেবে আমাদেরই অপূর্ণতা বলে প্রতীয়মান হবে। তাছাড়া এমন ঘটনা বর্তমান যুগে মুহূর্তের মধ্যে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার ফলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া অন্য দেশেও ঘটতে পারে। সেখানে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম ও জীবন-জীবিকা নিয়েও আঘাত আসতে পারে। এই বোধটি সবার মধ্যেই থাকা উচিত। বর্তমানে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির মুহূর্তে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জীবন-জীবিকা, বিশ্বাস ইত্যাদির ওপর যে কারো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেশে একটি অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা হতে পারে। তাছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের যে অসামান্য অবদান ছিল সেটি বাংলাদেশ রাষ্ট্র, সমাজ এবং জনগণ কখনো অস্বীকার করতে পারবে না। ভারতে এখন কোন দলের সরকার ক্ষমতায় আছে সেটি বিবেচ্য বিষয় নয়। বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে ভারতের সরকার প্রধান হিসেবে নরেন্দ্র মোদি ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তিতে ঢাকায় আসছেন। তার আগমন উপলক্ষে উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সমঝোতা হওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এতে উভয় দেশেই লাভবান হবে। সুতরাং নরেন্দ্র মোদির আগমনকে যারা সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছেন তারা পাকিস্তানি ভাবাদর্শের অন্ধ বিশ্বাস থেকে বের হতে পারেনি। এমনকি যেসব বাম ছাত্র সংগঠন নরেন্দ্র মোদির আগমনকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে কণ্ঠ মিলাচ্ছে তারা তাদের উগ্র হঠকারী বাম চিন্তাকে উগ্র ডান ডান সাম্প্রদায়িক চিন্তার কাছে সমর্পণ করতে যাচ্ছে। এ দেশে পাকিস্তান কাল থেকেই অনেক উগ্র বাম ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ভুল রাজনীতির কারণে জনগণ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়েছে, স্বাধীনতা উত্তরকালেও উগ্র বাম, হঠকারী রাজনীতি করতে গিয়ে নিজেরাই খণ্ড-বিখণ্ড হয়েছে। বাংলাদেশে এখন তাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতাই নেই। অথচ প্রকৃত বাম ধারার রাজনীতি সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ এবং উগ্র হঠকারিতা থেকে দেশের রাজনীতিকে মুক্ত করার জন্য নিজেদের মেধা ও মননের চর্চা করে থাকে। সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশের অভ্যন্তরে অসংখ্য হতদরিদ্র মুসলমান পরিবার রয়েছে যাদের অর্থ ও কর্মসংস্থানের অভাবে জীবন কোনোভাবেই ভালো চলছে না। তাদের পাশে উগ্র ডান এবং উগ্র বাম- কেউ খুব একটা ধারাচ্ছে না। যারা অন্যদের ধর্মান্তকরণের জন্য এমন মরিয়া হয়ে উঠেছে তাদের উচিত নিজ ধর্মের হতদরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। অন্যায়, অবিচার, ঘুষ, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। কিন্তু সেই পথে তাদের দেখা যায় না। বুঝাই যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামীবিরোধী উগ্র ডান-বাম সবাই যার যার অবস্থান থেকে তৎপর হচ্ছে। কেউবা ধর্মকে অপব্যবহার করে মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামানোর চেষ্টা করছে, কেউবা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, আধিপত্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, সম্প্রসারণবাদ, কর্তৃত্ববাদ, ভারতীয় আগ্রাসন ইত্যাদি কঠিন কঠিন শব্দ ব্যবহার করে মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে চাচ্ছে। একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী দলটি এখন দৃশ্যত চুপচাপ মনে হলেও নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে। আওয়ামী লীগের মূল এবং অঙ্গসংগঠনগুলোর স্থানীয় নেতাকর্মীরা রাজনীতির জটিল বিষয়গুলো কতটা বোঝেন এবং খবর রাখেন তা নিয়ে সন্দেহ আছে। অনেক সময় তারাও সাম্প্রদায়িক নানা শক্তির ফাঁদে পা দেন। আওয়ামী লীগে সে কারণে এখন আত্মপ্রসাদ গোনার কোনো সুযোগ নেই। সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী ডান-বাম এবং বিএনপির মতো আওয়ামীবিরোধী, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ইত্যাদি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক দল যুগপৎভাবে সরকার উৎখাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই উচ্চারণই তাদের সবার মুখ থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্মে শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ কতটা এসব প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করছে- তাই দেখার বিষয়।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App