×

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমার অভ্যুত্থান: রাজপথের আন্দোলনে আত্মত্যাগের কাহিনী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২১, ১২:০৫ পিএম

মিয়ানমার অভ্যুত্থান: রাজপথের আন্দোলনে আত্মত্যাগের কাহিনী
মিয়ানমার অভ্যুত্থান: রাজপথের আন্দোলনে আত্মত্যাগের কাহিনী
মিয়ানমার অভ্যুত্থান: রাজপথের আন্দোলনে আত্মত্যাগের কাহিনী

মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের সহিংসতার সঙ্গে দমন করছে সামরিক বাহিনী। এই অবস্থায় অনেক কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের। ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। গত পয়লা ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী দেশের পুরো ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা চাইছে তাদের গণতান্ত্রিক-ভাবে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে পুনর্বহাল করা হোক। তাদের আত্মত্যগের গল্প নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।

মিয়ানমারের সংখ্যালঘু এক নারী আন্দোলনকারী বলেন, আমরা যারা সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মানুষ, আমাদের দাবিগুলো আরও গভীরতর। আমরা এমন এক ফেডারেল গণতান্ত্রিক দেশ চাই, যেখানে মিয়ানমারের সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জায়গা থাকবে। আমার এক বছর বয়সী একটা ছোট্ট মেয়ে আছে। আমি চাই না যেরকম স্বৈরতন্ত্রের অধীনে আমরা বেড়ে উঠেছি, ওর বেলাতেও সেটাই ঘটুক। আমি আমার স্বামীকে বলেছি, যদি আমাকে গ্রেফতার করা হয় বা এই বিক্ষোভে আমার মৃত্যু হয়, ও যেন আমাদের মেয়েকে দেখাশোনা করে, যেন জীবন চালিয়ে নেয়। আমরা আমাদের জীবনেই এই বিপ্লব শেষ করে যাব এবং আমাদের সন্তানদের জন্য এই কাজ রেখে যাব না।

মিয়ানমার বিক্ষোভে সামনের সারিতে কাজ করা মেডিক্যাল কর্মকর্তা নন্দ বলেন, তিনি কাজ করেন মায়িক শহরের এক হাসপাতালে। ৭ই মার্চের সেই সন্ধ্যায় তখন কারফিউ বলবৎ হতে যাচ্ছে। আমি আমার গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছি, গাড়ির জানালায় কালো কাঁচ। আমি একজন অর্থোপেডিক সার্জন, তার স্ত্রী, এক চিকিৎসক এবং তার পরিবারকে তুলে নেই। রাতের অন্ধকারে আমরা তাদের ব্যাগ গাড়িতে তুলি এরপর একটা নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেই। এর মাত্র একদিন আগে সরকারি কর্মকর্তারা মায়িকের হাসপাতালগুলোতে এসে বিক্ষোভে অংশ নেয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, মেডিকেল অফিসার এবং নার্সদের নাম জানতে চায়। তখন যেসব ডাক্তার সরকারি চাকরি করেন, তারা সিদ্ধান্ত নিলেন, সবাই আত্মগোপনে যাবেন। আমার ওপর দায়িত্ব পড়লো কিছু ডাক্তারকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার। এই আন্দোলনের এক বড় শক্তি ছিল মেডিকেল কর্মীরা। এখন তাদেরও চলে যেতে হলো।

ইয়াঙ্গনের বাসিন্দা চলচ্চিত্র নির্মাতা মং জানান, যখন বিক্ষোভ শুরু হলো, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, প্রতিটি দিন তিনি ধরে রাখবেন। যাতে করে বোঝা যায় কীভাবে এই আন্দোলন গড়ে উঠছে। সেদিন আমি ছিলাম ইয়াঙ্গনের বারগায়া স্ট্রিটে, ব্যারিকেডের পেছনে একেবারে সবার সামনের কাতারে। এখন আমি যখন কোনো বিক্ষোভে যাই, আমাকে সাথে আগুন নিরোধী দস্তানা এবং একটা হেলমেট সাথে রাখতে হয়। একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং বিক্ষোভকারী হিসেবে আমি প্রতিদিনই বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্রতিদিনই একটি শর্ট ফিল্ম বানানোর সিদ্ধান্ত নেই।

ফিও একজন নারী গবেষক জানান, আরও দুশ বিক্ষোভকারীর সঙ্গে তিনি ইয়াঙ্গনের দক্ষিণের এক জেলা সানচুয়াংয়ে এক বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছিলেন। তখন তাদের কোণঠাসা করে ফেলে সামরিক বাহিনী। তাদেরকে সেখান থেকে যেতে দেয়া হচ্ছিল না। সেখান থেকে অন্তত ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সেদিন ছিল ৮ই মার্চ, যখন নিরাপত্তা বাহিনী এলো তখন দুপুর প্রায় দুইটা। ওরা এসে আমাদের আটকে ফেললো। তখন আমরা দেখলাম, বিভিন্ন বাড়ির লোকজন দরজা খুলে এবং হাত নেড়ে তাদের ওখানে যেতে বলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App