৫০ বছরেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২১, ১২:১৯ এএম
২৬ মার্চ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। তাছাড়া এই মার্চ মাস বাঙালির জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ মাসেই বাংলাদেশের মানুষ বর্বর পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এরপর থেকে প্রতি বছর ২৫ মার্চ পালিত হয় গণহত্যা দিবস হিসেবে। ৫০ বছর আগে এই দিনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ পরিচালনা করে। এরপর থেকে দীর্ঘ ৯ মাসেরও বেশি সময় পর হানাদার বাহিনী পরাজয় স্বীকার করে নেয়ার আগ পর্যন্ত মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহতম গণহত্যা চালায়।
তবে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার ও দালালরা যে নিষ্ঠুরতম গণহত্যা চালায় আজ পর্যন্ত তা ব্যাপকভাবে প্রচার লাভ বা স্বীকৃতি পায়নি।
এ সময়ে ৩০ লাখ লোককে হত্যা, ৫ লাখেরও বেশি মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া হয়। বাংলাদেশে পরিচালিত পাকিস্তানি হানাদারদের গণহত্যা ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী গণহত্যা বলে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে দীর্ঘ ৯ মাসই এই গণহত্যা অব্যাহত রাখা হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের গণহত্যা প্রচার না পেলেও ইউরোপ ও আফ্রিকায় বিভিন্ন সময় পরিচালিত গণহত্যা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। খুবই দুঃখের ও লজ্জার বিষয় যে, একটি জাতির পরিচয় মুছে দেয়ার জন্য যে গণহত্যা চালানো হয় এবং যে গণহত্যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে নাৎসিদের হাতে ইহুদি হত্যাকাণ্ডকে লজ্জায় ফেলেছিল তা আজও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।
মানবাধিকার চরমভাবে ভূলুণ্ঠিত হওয়ার কারণেই তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে। অবিভক্ত পাকিস্তানে ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমগ্র বাংলায় অভূতপূর্ব বিজয় লাভ করে। ১৯৭১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম পাকিস্তানে সেনাপতিরা আওয়ামী লীগ এবং দলটির সমর্থকদের নির্মূল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রখ্যাত সাংবাদিক এন্থনি মাসকারানহাসের মতে, পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার লক্ষ্যবস্তু ছিল প্রশ্নাতীত। তারা প্রথমত, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সৈনিক এবং ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস), আনসার ও মুজাহিদ বাহিনীর সদস্য এবং দ্বিতীয়ত, হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। তাদের ভাষ্য ছিলÑ আমরা কেবল পুরুষ সদস্যদের হত্যা করছি এবং মহিলা ও শিশুদের ছেড়ে দিচ্ছি। আমরা সৈনিক, মহিলা ও শিশুদের হত্যা করার মতো কাপুরুষ নই। কুমিল্লা সেনানিবাসের কাছে থাকাকালে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এই মন্তব্য শুনতে পান। তৃতীয়ত, লক্ষ্যবস্তু ছিল আওয়ামী লীগারÑ কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত দলের সব কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবী। চতুর্থত, কলেজ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং কিছুসংখ্যক ‘বিপ্লবী’ ছাত্রী, পঞ্চমত, অধ্যাপক ও শিক্ষকদের মতো বুদ্ধিজীবী, যাদের পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিপ্লবী হিসেবে চিহ্নিত করে। (সূত্র : এন্থনি মাসকারানহাস, দ্য রেপ অব বাংলাদেশ, দিল্লি পাবলিকেসন্স।)
বাঙালি পুরুষ ছিল হানাদার বাহিনীর মূল লক্ষ্যবস্তু (বাংলাদেশ জেনোসাইড আর্কাইভের তথ্য মতে, শতকরা ৮০ ভাগ পুরুষ ছিল তাদের হামলার কেন্দ্রবিন্দু)। মহিলাদের অপহরণ করে সেনা ছাউনিতে নিয়ে সৈন্যরা ধর্ষণ করত। এই অবস্থা মাসের পর মাস চলতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ধাওয়া করে ধর্ষণ করা হতো। এ ক্ষেত্রে পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হত্যা করার আগে তাদের সামনে পরিবারের মহিলাদের ধর্ষণ করা হতো।
বাংলাদেশে ভয়াবহ গণহত্যা দেখে ঢাকায় নিযুক্ত একজন মার্কিন কূটনীতিক একটি মর্মভেদী বার্তা লেখেন, ‘আমাদের সরকার গণতন্ত্র দলনমূলক কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেনি, আমাদের সরকার নৈতিক দেউলিয়াত্বের নজির সৃষ্টি করেছে।’ Ñআর্চার ব্লাড, মার্কিন কূটনীতিক, ৬ এপ্রিল, ১৯৭১।
এমনকি পাকিস্তানের নিজস্ব কমিশনের একটি রিপোর্টও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করতে পারেনি। যুদ্ধোত্তর পাকিস্তানে ১৯৭১ সালে সংঘটিত ঘটনাবলির ব্যাপারে অনুসন্ধান করে রিপোর্ট পেশ করার জন্য হামুদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশন পাকিস্তান সরকারের কাছে দুটি রিপোর্ট পেশ করে। মূল রিপোর্ট পেশ করে ১৯৭২ সালে এবং পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে একটি সম্পূরক রিপোর্ট পেশ করে। কিন্তু পাকিস্তান সরকার রিপোর্ট দুটি পেশের পর বহু বছর কেটে গেলেও তা প্রকাশ করেনি। ১৯৭৪ সালের অক্টোবরে পেশ করা সম্পূরক রিপোর্টটিকে পাকিস্তান সরকার ২০০০ সাল পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে আগলে রাখে।
পাকিস্তান সরকার ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে হামুদুর রহমান কমিশন গঠন করে। এই কমিশনকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান (সাবেক পশ্চিম পাকিস্তান) বাহিনীর পরাজয়ের কারণ উদঘাটনের দায়িত্ব দেয়া হয়।
পাকিস্তান এমন একটি দেশ, যাকে ‘সেনারাষ্ট্র’ হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে, সারাবিশ্বে যা পুলিশি রাষ্ট্র হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। জন্মের পর এক দশক পূর্ণ না হতেই এটি সশস্ত্র বাহিনীর করায়ত্ত হয়। ১৯৫৮ সালে স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান একজন সেনানায়ক হিসেবে পাকিস্তানের শাসনভার গ্রহণ ও সামরিক আইন জারি করেন এবং অতি সম্প্রতি জেনারেল মুশাররফ পর্যন্ত দেশটিতে সশস্ত্র বাহিনীর শাসন কায়েম ছিল।
বাংলাদেশে (তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান) ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে মানবাধিকার পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল। মার্চের আগে থেকেই পাকিস্তান বাহিনীর নৃশংসতা ও বর্বরতা শুরু হয়ে যায় এবং তা চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ২৫ মার্চ রাতে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান বাহিনীর এক লজ্জাজনক আত্মসমর্পণের আগ পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ড অব্যাহত ছিল। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতা ও হত্যাযজ্ঞ ইতোমধ্যে কেবল বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা ও দালিলিক প্রমাণের মর্যাদা পায়নি বরং আন্তর্জাতিক গবেষক, ইতিহাসবিদ, পণ্ডিত ও সংবাদ মাধ্যমের কাছে যথাযথ গুরুত্ব লাভ করেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের ১৯৭১ সালের ৪ জুলাই সংখ্যার একটি ক্ষুদ্র উদ্ধৃতি সেদিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের একটি ধারণা দিতে পারে ‘বিশ্ব কী বুঝতে পারছে না, তারা ঘাতক বিনা আর কিছুই নয়?’ প্রশ্নটি হচ্ছে, তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে বহু বছর ধরে বসবাসকারী এক বিদেশির। তিনি বলেন, ‘তারা হত্যা করেছে এবং এখনো করছে। কেবল বাংলাদেশিদের দমন এবং তাদের দাস বানিয়ে রাখার অভিপ্রায়ে তারা এই হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। তারা গ্রামের পর গ্রাম নিশ্চিহ্ন করছে, দেখামাত্রই গুলি করছে এবং ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের গুলি থামছে না।’
জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান এবং তার শীর্ষস্থানীয় জেনারেলরা বাঙালি বুদ্ধিজীবী তথা সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের হত্যার পরিকল্পনা করে। তারা নির্বিচারে লাখ লাখ হিন্দুকে হত্যা এবং অবশিষ্টদের ভারতে বিতাড়নের মনস্থ করে। তারা কমপক্ষে আগামী একটি প্রজন্ম পশ্চিম পাকিস্তানের অনুগত করার লক্ষ্যে পূর্ব পকিস্তানের অর্থনৈতিক ভিত্তি ধ্বংস করে দেয়ারও পরিকল্পনা করে।
হামুদুর রহমান কমিশনের রিপোর্টে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতার বর্ণনা রয়েছে। তারা কয়েকটি শ্রেণিতে বিভিন্ন অভিযোগ পরীক্ষা ও বিবেচনার প্রয়াস চালানÑ ক) ২৫ মার্চ রাতে ও ২৬ মার্চ অপারেশন পরিচালনাকালে ঢাকায় অতিরিক্ত বল ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার, খ) সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর ‘নির্মূল অভিযান’ পরিচালনাকালে গ্রামাঞ্চলে নির্বিচারে হত্যা ও অগ্নিসংযোগ, গ) কেবল সামরিক অভিযানের শুরুতে নয়, ’৭১ সালের ডিসেম্বরে চরম সংকটকালীন দিনগুলোতেও চিকিৎসক ও প্রকৗশলীদের মতো পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা ও গণকবরে সমাধিস্থ করা হয়, ঘ) ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি অফিসার ও সৈনিক এবং ইপিআর ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের নিরস্ত্র বা বিদ্রোহ দমনের অজুহাতে তাদের হত্যা করা হয়, ঙ) সামরিক আইনের দায়িত্ব পালনকারীদের দ্বারা বা তাদের নির্দেশে পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের হত্যা বা তাদের নিজ বাসভবন থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া, চ) উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রতিশোধ গ্রহণ এবং নির্যাতনের অংশ হিসেবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অফিসার ও জওয়ানদের দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানের বিপুলসংখ্যক নারীকে ধর্ষণ এবং ছ) হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা।
এটা এখন সবার জানা যে, ভারতীয় সেনাবাহিনী ঢাকার কাছাকাছি চলে আসার পর ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একদল সিনিয়র অফিসার এবং তাদের বেসামরিক দোসররা এক গোপন বৈঠকে মিলিত হয়। তারা আটক ও হত্যার উদ্দেশ্যে ঢাকায় বসবাসরত পেশাজীবীদের পুরোধা ব্যক্তিসহ ২৫০ জনের একটি তালিকা তৈরি করে। পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এসব বুদ্ধিজীবীকে আটক ও হত্যা করা হয়। তাদের কয়েকটি দলে ভাগ করে ঢাকার উপকণ্ঠে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে নিয়ে তাদের দ্রুত হত্যা করা হয়।
বাংলাদেশের গণহত্যা নিঃসন্দেহে অধিকতর সতর্ক ও সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেয়া সিদ্ধান্তের আলোকে পরিচালিত আধুনিক হত্যাযজ্ঞের অন্যতম। শীর্ষস্থানীয় পাঁচ পকিস্তানি জেনারেলের একটি চক্র এই হত্যাকাণ্ডের নীলনকশা তৈরি করে। এরা হচ্ছেনÑ প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান, জেনারেল টিক্কা খান, চিফ অব স্টাফ জেনারেল পীরজাদা, নিরাপত্তা প্রধান জেনারেল উমর খান এবং গোয়েন্দা বাহিনী প্রধান জেনারেল আকবর খান। নিম্ন পদস্থ সেনা কর্মকর্তা ও সাধারণ জওয়ানরাও গণহত্যা এবং পাশবিক নির্যাতন পরিচালনারু সঙ্গে যুক্ত ছিল। এসব স্বপ্রণোদিত জল্লাদ বাঙালি জাতি বিশেষ করে সংখ্যালঘু হিন্দু বিদ্বেষী ছিল। পূর্ব পাকিস্তান কমান্ডের সেনানায়ক জেনারেল নিয়াজি বাঙালিদের বানর ও মুরগির সঙ্গে তুলনা করতেন। তিনি বলতেন, ‘এ অঞ্চলটি নিম্নভূমি এবং লোকগুলোও নীচু শ্রেণির’।
‘অপারেশন সার্চলাইট’র মূল উদ্দেশ্য ছিল ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবাদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করা, বাস্তবে এর উল্টোটাই ঘটেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার তিনটি পর্যায়Ñ
১) ‘অপারেশন সার্চলাইট’ ছিল প্রথম পর্যায়। মার্চ থেকে মে মাসের প্রথম দিক পর্যন্ত এই অপারেশনের কার্যকরিতা ছিল। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এই অপারেশনের কার্যক্রম শুরু হয়।
২) ‘সার্চ এন্ড ডেস্ট্রয়’ হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়। মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পরিচালিত এই অপারেশন চলাকালে সুপরিকল্পিতভাবে গ্রামের পর গ্রাম জনশূন্য করে দেয়া হয়। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী পর্যায়। এ সময় বাঙালিরা সংঘবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানিদের হামলা প্রতিহত করতে শুরু করে। একই সময়ে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী মহিলাদের অপহরণ, ধর্ষণ এবং গৃহবন্দি করতে শুরু করে।
৩) ‘স্কর্চড আর্থ (পোড়া মাটি)’ ছিল তৃতীয় পর্যায়ের অপারেশন। এটি ডিসেম্বরের সূচনায় শুরু হয়। এই অপারেশনে ১ হাজার ডাক্তার, আইনজীবী ও প্রকৌশলীর মতো বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এই গণহত্যার কয়েকদিন পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনীর কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে।
ফারাজী আজমল হোসেন : লেখক ও সাংবাদিক।