বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ১১ মিনিটে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ মেলার উদ্বোধন করেন তিনি।

মূলত প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার পরই খুলে গেছে বইমেলার দ্বার। এবারের মেলার মূল থিম ‘বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী’।

অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ বঙ্গবন্ধু রচিত ও বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘আমার দেখা নয়াচীন’-এর ইংরেজি অনুবাদ ‘নিউ চায়না-১৯৫২’ গ্রন্থের উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি মনোনীতদের মাঝে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার হস্তান্তর করেন এবং পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান এবং স্বাগত বক্তৃতা দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

প্রতি বছর ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের স্মরণে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে মাসব্যাপী বইমেলা শুরু হলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার বিলম্ব হয়েছে। ২৮ দিনব্যাপী বইমেলা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও, করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে মেলাটি যে কোন সময় বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।

এই প্রথমবারের মতো, একটি প্রবেশ পয়েন্ট রয়েছে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের তিনটি প্রবেশ পয়েন্টের সাথে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ (আইইবি) পাশে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে এর সংক্রামণ ঠেকাতে বইমেলায় নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা। প্রবেশ পথে রয়েছে ‘নো মাস্ক-নো এন্টি’ সম্বলিত লোগো।

সব মিলিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩টি প্রবেশ পথ ও ৩টি বাহির পথ রয়েছে। প্রত্যেক প্রবেশ পথে সুরক্ষিত ছাউনি রয়েছে, যাতে বৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যে মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।

বইমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলা এলাকাজুড়ে ৩ শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইমেলা সম্পূর্ণ পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত রয়েছে। মেলাপ্রাঙ্গণ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (সমগ্র মেলাপ্রাঙ্গণ ও দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত এবং দোয়েল চত্বর থেকে শহীদ মিনার হয়ে টিএসসি, দোয়েল চত্বর থেকে চাঁনখারপুল, টিএসসি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত) নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। মেলার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত ধূলিনাশক পানি ছিটানো এবং প্রতিদিন মশক নিধনের সার্বিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।

১৯ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

দর্শনার্থীদের মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য কঠোরভাবে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলতে হবে। সেখানে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা, হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।