×

সাহিত্য

শতবর্ষে মঞ্চে মঞ্চে স্মরিত হলেন তিনি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২১, ০৯:০৮ পিএম

শতবর্ষে মঞ্চে মঞ্চে স্মরিত হলেন তিনি

শতবর্ষে মঞ্চে মঞ্চে স্মরিত হলেন তিনি। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সারাদিন কবিতায়, কথামালায়, নাচে, গানে, নাটক মঞ্চায়নে, বত্রিশ নম্বরের আঙিনায় শ্রদ্ধার ফুলের অর্ঘে ভালোবাসা জানিয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমাকে।

বাংলা একাডেমি ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি গতকাল বুধবার সকালে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এরপর একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক রাশিদ আসকারী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন এবং কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

রাশিদ আসকারী বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজ জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতায় ধাপে ধাপে নিজেকে এবং তাঁর জাতিকে নির্মাণ করেছেন। গণতান্ত্রিক চেতনা ছিল তাঁর ব্যক্তিত্বের মর্মমূলে। রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু একই সঙ্গে সংগ্রামী ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি ক্ষমতার কেন্দ্রে সাধারণ মানুষের অধিষ্ঠান নিশ্চিত করতে চেয়েছেন।

আলোচকরা বলেন, শৈশব থেকেই সাহস, সংকল্প ও দেশ্রপ্রেমের অপর নাম ছিল শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি তৃণমূল থেকে তাঁর শক্তি সঞ্চয় করেছেন এবং ক্রমশ সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়াকে পরিণত করেছেন রাজনীতির কেন্দ্রীয় বিষয়ে। তিনি শুধু রাজনীতির দিকপাল ছিলেন না, একই সঙ্গে অর্থনীতি, সমাজনীতি, সমরনীতি- সবক্ষেত্রেই তাঁর দূরদর্শিতা ছিল অসামান্য। শামসুজ্জামান খান বলেন, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন মানে বাংলাদেশের জন্মকথাকে স্মরণ কারণ হাজার বছরের ইতিহাসে তিনিই বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ভাষাভিত্তিক-অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র উপহার দিতে সক্ষম হয়েছেন।

হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে এই ভূখণ্ডের মানুষ ‘বাংলাদেশ’ নামটির সঙ্গে পরিচিত হতে পারত না। বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে শুধু একটি স্বাধীন ভূখণ্ড উপহার দেন নি বরং একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় মূলনীতির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ গঠনের অন্তহীন প্রেরণা দিয়ে গেছেন।

জাতীয় জাদুঘর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের আয়োজনে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্লেষণ ও দিকনির্দেশনা’ শীর্ষক সেমিনার এবং সিনেপ্লেক্সে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মো. বদরুল আরেফীন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও রাজনৈতিক এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এ মালেক। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একক গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী কালীপদ শীল।

মূল প্রবন্ধে ডা. এস এ মালেক বলেন, মার্চ মাস বাঙালির একটি ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় মাস। ১৭ই মার্চ প্রকৃতঅর্থেই বাংলাদেশের জন্মদিন। কেননা ঐ দিন বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ কখনো স্বাধীন হতো না।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কে এম খালিদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির আবেগকে স্পর্শ করেছিল। সাড়ে সাত কোটি বাঙালি সেদিন তাকিয়ে ছিল বঙ্গবন্ধুর দিকে। তিনি জনগণের মুক্তির কথা বলেছিলেন। ঐতিহাসিক সেই ভাষণে ছিল সাধারণ দিকনির্দেশনা, প্রশাসনিক দিকনির্দেশনা, সামরিক দিকনির্দেশনা এবং সিদ্ধান্ত। মো. বদরুল আরেফীন বলেন, আজ ১৭ই মার্চ। বাঙালি জাতির আনন্দের দিন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা চিরন্তনভাবে চলতে থাকবে। ১৯৭১ এর ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর বজ্র কণ্ঠে জেগে উঠেছিল বাঙালি।

আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালির মুক্তি, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। সারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণের মধ্যে অন্যতম বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। আমরা গর্বিত।

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপি নাট্য উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। রাজধানীর নাটক সরণীর (বেইলী রোড) মহিলা সমিতি মিলনায়তনে এ নাট্য উৎসবের উদ্বোধন করেন নাট্যজন আতাউর রহমান, মামুনুর রশীদ, ম হামিদ ও সারা যাকের। উৎসবটি গত এক বছরে করোনাকালে প্রয়াত দশ বিশিষ্ট নাট্যজন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে। পাশাপাশি নাটকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দশজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা জানানো হয়। উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি।

উৎসবে মঞ্চায়িত হবে ১০ নাট্য প্রযোজনা। উৎসবের প্রথম দিন গতকাল বুধবার থিয়েটার আর্ট ইউনিট মঞ্চস্থ করেছে ‘কোর্ট মার্শাল’ নাটকটি। আজ বৃহস্পতিবার মঞ্চস্থ হবে ঢাকা নান্দনিকের ‘গ্রহণকাল’।

এছাড়া লোক নাট্যদলের (বনানী) নাটক ‘ঠিকানা’, শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের নাটক ‘রাইফেল’, নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বলের নাটক ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’, ঢাকা পদাতিকের নাটক ‘কথা ৭১’, খেয়ালী নাট্য গোষ্ঠীর নাটক ‘কদমতলী আর্মি ক্যাম্প’, প্রাঙ্গণেমোর এর নাটক ‘কনডেমড সেল’, পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) নাটক ‘কাল রাত্রি’ মঞ্চস্থ হবে।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে শিশু-কিশোর সমাবেশ ও আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে ইউসেপ স্কুল, কল্যাণপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, সালেহা স্কুল এন্ড কলেজ, হযরত শাহ আলী মডেল হাই স্কুল, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উদয়ন বিদ্যালয়, কচিকাঁচার মেলা, খেলাঘর ও এসওএস শিশু পল্লী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App