×

ফিচার

কাবুলে বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ২০ বছর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২১, ০২:১২ পিএম

কাবুলে বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ২০ বছর

বামিয়ানের পর্বতগাত্রে পাওয়া কৃত্রিম গুহা। এরকম প্রায় ১০০০টি গুহা এখানে খুঁজে পাওয়া গেছে। এগুলি বৌদ্ধভিক্ষুদের বসবাস ও উপাসনার জন্য ব্যবহৃত হত বলে মনে করা হয়।

কাবুলে বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ২০ বছর

বামিয়ানের গুহার প্রাচীর ও ছাদে অঙ্কিত রঙীন চিত্র। ধ্বংস হওয়া বুদ্ধমূর্তিদুটিকে ঘিরে এ'রকম অনেকগুলি গুহা আবিস্কৃত হয়েছে।

কাবুলে বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ২০ বছর

মূর্তিটি ধ্বংসের আগে ও পরে।

কাবুলে বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ২০ বছর

ভিক্ষুদের তৈরি করা অসংখ্য গুহা।

কাবুলে বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ২০ বছর

সবচেয়ে উঁচু বুদ্ধ মূর্তি।

কাবুলে বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ২০ বছর
কাবুলে বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ২০ বছর
কাবুলে বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ২০ বছর

আফগানিস্তানের বামিয়ান উপত্যকার ১৫০০ বছরের পুরনো বুদ্ধমূর্তি ।

আফগানিস্তানের বামিয়ান উপত্যকার ১৫০০ বছরের পুরনো প্রকাণ্ড দুটি বুদ্ধমূর্তি ধ্বংস করেছিল তালিবান। সম্প্রতি ২০০১ সালের আলোড়িত সেই ঘটনার ২০ বছর হলো। তালিবান নেতা মোল্লা মুহম্মদ ওমরের নির্দেশে সেইসময় এই ঐতিহ্যকে ধ্বংস করা হয়। এর আগেও ১২২১ খ্রিষ্টাব্দে মোঙ্গল সম্রাট চেঙ্গিজ খান বামিয়ান আক্রমণ করে মূর্তি ধ্বংসের চেষ্টা করে। আফগানিস্তানের রাজধানীর কাবুল থেকে ২০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত জনবিরল বামিয়ান উপত্যকার অবস্থান। এটি দেশের কেন্দ্রভাগে অবস্থিত। ষষ্ঠ শতাব্দীতে বৌদ্ধদের অন্যতম কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছিল বামিয়ান। কয়েক হাজার বৌদ্ধ ভিক্ষুর বসবাস ছিল তখন এই উপত্যকায়। অসংখ্য বৌদ্ধ বিহার, মঠ ও বৌদ্ধ শিল্পকর্মের প্রত্নতাত্ত্বিক অস্তিত্বর কারণে এই পর্বতগাত্রটি বর্তমানে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। ভিক্ষুদের হাত ধরে পার্বত্য অঞ্চলটিতে তাদের শিল্প ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে। লাল বেলেপাথরের পাহাড়ের গায়ে গুহা তৈরি করে তারা বসবাস করতেন। এই পাথর দিয়েই গড়েন বুদ্ধের প্রকাণ্ড মূর্তি৷ খবর ডয়েচ ভেলের। [caption id="attachment_271916" align="aligncenter" width="1280"] বামিয়ানের গুহার প্রাচীর ও ছাদে অঙ্কিত রঙীন চিত্র। ধ্বংস হওয়া বুদ্ধমূর্তিদুটিকে ঘিরে এ'রকম অনেকগুলি গুহা আবিস্কৃত হয়েছে।[/caption] চীনের বৌদ্ধ ভিক্ষু ও পরিব্রাজক সুয়েনজাং সপ্তম শতাব্দীতে এখানে এসেছিলেন। যিনি হিউয়েন সাঙ নামেও পরিচিত। বামিয়ান উপত্যকার কথা তিনি লিখেছেন এভাবে, কয়েক ডজন মন্দির আর হাজারো ভিক্ষুর বসবাস সেখানে। বুদ্ধের দণ্ডায়মান মূর্তি ৫০ মিটার উঁচু, যার থেকে সোনালী আভা ছড়িয়ে পড়ে। [caption id="attachment_271917" align="aligncenter" width="987"] মূর্তিটি ধ্বংসের আগে ও পরে।[/caption] সবচেয়ে উঁচু মূর্তিটি ছিল ৫৩ মিটার উঁচু দীপঙ্কর বুদ্ধের প্রতিভূ। ইতিহাসবিদদের মতে, এর নির্মাণশৈলীতে গ্রিকদের হেলেনিস্টিক বৈশিষ্টের সঙ্গে বৌদ্ধ শিল্পকলার মেলবন্ধন ঘটে। [caption id="attachment_271918" align="aligncenter" width="700"] ভিক্ষুদের তৈরি করা অসংখ্য গুহা।[/caption] প্রায় এক হাজার খ্রিষ্টাব্দে বামিয়ান উপত্যকা মুসলিম শাসনের অধীনে আসে। তখনও বহাল তবিয়েতে ছিল মূর্তিগুলো। বিশ শতকেও জায়গাটি অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে টিকে ছিল। [caption id="attachment_271920" align="aligncenter" width="800"] সবচেয়ে উঁচু বুদ্ধ মূর্তি।[/caption] তবে ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর বদলে যায় চিত্র। কৌশলগত গুরুত্বের কারণে সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে আমেরিকার মদতপুষ্ট মুজাহিদিনদের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয় বামিয়ান উপত্যকা। বিভিন্ন শাসনামলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য হিসেবে হাজার বছর টিকে থাকলেও ২০০১ সালের মার্চে তালেবানরা বামিয়ানের বৌদ্ধ মূর্তি ধ্বংস করে। কাবুলের জাতীয় জাদুঘরও তছনছ করে তারা। ধ্বংসের পরে ইউনেস্কো বামিয়ানকে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। সেখানে আবারো বৌদ্ধ মূর্তি গড়ে তোলার বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উঠলেও এখন পর্যন্ত তার কোনটি বাস্তবায়ন হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App