×

জাতীয়

ফের কঠোর হচ্ছে সরকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২১, ০৮:৫৩ এএম

ফের কঠোর হচ্ছে সরকার

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার প্রতিদিনই বাড়ছে। উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে রোগীদের। গতকাল বিএসএমএমইউতে করোনা পরীক্ষার জন্য রোগীদের দীর্ঘ লাইন -মামুন আবেদীন

দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে আবারো কঠোর অবস্থানে সরকার। করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। সংক্রমণ বাড়ায় হাসপাতালগুলোকেও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল সোমবার বলেন, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, তা নিশ্চিত করতে আবারো ভ্রাম্যমাণ আদালত বসবে। মাস্ক না পরলে-স্বাস্থ্যবিধি না মানলে জরিমানা করা হবে। এ বিষয়ে জেলা পর্যায়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে ইতোমধ্যে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

দেশে আবারো করোনার সংক্রমণ বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানা, ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ না মানা, মাত্রাতিরিক্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া, মাস্ক ব্যবহার না করা অন্যতম কারণ। নতুন করে যুক্ত হয়েছে করোনার টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে অনীহা।

এদিকে সংক্রমণ বাড়ার প্রভাব ইতোমধ্যেই হাসপাতালগুলোতে পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতাল আর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) বেডের ওপর চাপ বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমও বলেছেন সে কথাই। একদিন আগে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, গত দুই মাসে আমার কাছে কখনোই আইসিইউ বেডের জন্য কোনো অনুরোধ আসেনি। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে ফোন পাচ্ছি আইসিইউ বেড পাওয়া যাচ্ছে না। আগে আমরা দেখছিলাম যাদের কোমর্বিডিটি আছে তাদের আইসিইউ লাগত। এখন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই তরুণ, সুস্থ এবং তাদের বেশির ভাগেরই আইসিইউ লাগছে।

করোনা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন জানিয়ে গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যে হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে উদ্ভ‚ত পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমাদের হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও অক্সিজেনের কোনো স্বল্পতা নেই। মন্ত্রী বলেন, জাতীয় দিবসকে কেন্দ্র করে আমরা যে অনুষ্ঠানগুলো করব সেগুলো যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যবিধি প্রণয়ন করে। তারা যাতে স্বাস্থ্যবিধি পালন করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যে কোনো কাজেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, যাতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে না পারে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে সংক্রমণ কমিয়ে রাখার জন্য কিন্তু দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। কাজেই এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যাতে করোনা না বাড়ে সেই দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।

হাসপাতালের প্রস্তুতি সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া বলেন, হাসপাতালগুলোতে রোগী বাড়ছে। ঢাকার তিন-চারটি সরকারি হাসপাতালের প্রতিই মানুষের আগ্রহ বেশি। ফলে ওই হাসপাতালগুলোতে ভিড়ও বেশি। আর তাই চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় করা যায় না। এমন অনেক হাসপাতাল আছে যেখানে বেড খালি থাকলেও রোগীরা সেখানে যেতে চান না। এখন করোনা রোগী আবার বাড়তে শুরু করেছে। তাদের মধ্যে যাদের অবস্থা জটিল তাদের জন্যই আইসিইউ দরকার হয়। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেড খালি আছে তবে ঢাকায় কিছুটা সংকট রয়েছে। আমাদের হাতে এখনো বেশ কিছু আইসিইউ বেড ও যন্ত্রপাতি রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেড স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান আছে।

৩০ মার্চ থেকে স্কুল ও কলেজ খোলার যে তারিখ সরকার ঠিক করেছে, ভাইরাসের সংক্রমণ এভাবে বাড়লে তা পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে বলে শিক্ষামন্ত্রী এর আগেই জানিয়েছিলেন। গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রীও একই কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। সংক্রমণ যদি বেড়ে যায় তাহলে নিশ্চয় তারা তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন। আর যদি করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে হয়তো তারা তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App