×

জাতীয়

মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে জাহাজভাঙা শ্রমিকরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২১, ১০:৫৮ এএম

মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে জাহাজভাঙা শ্রমিকরা

ফাইল ছবি

জাহাজভাঙা শ্রমিকদের মৃত্যু অথবা আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণের জন্য এখন থেকে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ভাঙার উদ্দেশ্যে পুরাতন জাহাজ বিক্রয়কারী ব্রিটিশ শিপিং কোম্পানিগুলোর মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে। স্বল্পমূল্যে ও বিপদজনক পরিবেশে জাহাজ ভাঙার জন্য শ্রমিকদের মৃত্যু ও আহত হলে শ্রমিক অথবা তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে এসব মামলা করতে পারবে। খবর দ্যা গার্ডিয়ান। বাংলাদেশী জাহাজ ভাঙা শ্রমিকদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল দক্ষিণ এশিয়ায় জাহাজ বিক্রয়কারী লন্ডনভিত্তিক একটি শিপিং কোম্পানির আপিলের ভিত্তিতে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের আপিল বিভাগ সম্প্রতি এ রায় দেন। বিশ্বের যে কোনো আদলতে এ সংক্রান্ত এটিই প্রথম রায়। রায়ের ফলে ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে তিন লাখ টনের একটি জাহাজ ভাঙার কাজে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় শ্রমিক খালিদ মোল্লার মৃত্যুতে তার স্ত্রী হামিদা বেগমকে মামলা করার অধিকার দেওয়া হয়। তিনি লন্ডনভিত্তিক মারান শিপিং কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে পারবেন। কাজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করে এই রায় এশিয়ার অন্যান্য জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের কাজের পরিবেশকে নিরাপদ ও উন্নত হতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই রায় চলমান আরো দুইটি দীর্ঘসময় চলমান ঘটনায় স্বল্প আয়ের দেশগুলোর দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে পরিবেশ দূষণ ও ক্ষতির কারণে লন্ডনভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি ও তাদের সহায়কদের বিরুদ্ধ মামলা করতে অনুমোদন দিবে। গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট নাইজেরিয়ান কৃষক ও মৎসজীবীদের পরিবেশ দূষণের অভিযোগে তেল ও গ্যাসভিত্তিক কোম্পানি রয়েল ডাচ শেল ও তাদের সহযোগী অ্যাংলো ডাচ এনার্জির বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের আদালতে মামলার অনুমোদন দেয়। তবে পরিবেশ দূষণের দায় অস্বীকার করে আসছে শেল। ২০১৯ সালে আরেকটি রায়ে সুপ্রিম কোর্ট পানি দূষণের অভিযোগে জিম্বাবুয়ের গ্রামবাসীদের যুক্তরাজ্যভিত্তিক খনি খননকারী প্রতিষ্ঠান ভেন্ডাটার বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের আদালতে মামলা করার অনুমতি দেয়। প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায়, গত ১৫ বছরে চট্টগ্রামে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পে অন্তত ২১৬ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে চলতি বছরেই নিহত হয় ৭ জন। এছাড়াও অনেক শ্রমিক গুরুতর আহত ও পঙ্গু হয়ে পড়েছেন। নোংরা, বিপদজনক এবং অনিশ্চিত কাজের পরিবেশের জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়ে আসছে চট্টগ্রাম। শিপিং কোম্পানিগুলো শেষ মুহুর্তে জাহাজের মালিকানা পরিবর্তনের ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে এখানকার শ্রমিকদের প্রতি দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ পায়। এসব ক্ষেত্রে উপর থেকে পড়ে, বিস্ফোরণে ও দুর্ঘটনায় প্রতিবছর শত শত শ্রমিক নিহত ও আহত হচ্ছেন। এসব শ্রমিক অধিকাংশই চুক্তিবিহীনভাবে কাজ করেন। এছাড়া জাহাজ থেকে নির্গত তেল ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল সমুদ্রতীরবর্তী পরিবেশ দূষণ করছে। ফলে এ পরিবেশে থাকা শ্রমিকরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। লন্ডনভিত্তিক আইনি সংস্থা ‘ লে ডে’ বলছে, এমন পরিবেশে হানিফ মোল্লার নিহত হওয়ার ঘটনা প্রত্যাশিত ছিল। মারান-এর এ ধরনের কাজে ঝুঁকি সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত ছিল। ‘লে ডে’র পরিচালক মার্টিন ডে আপিল বিভাগের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App