×

জাতীয়

৬ পণ্যের মজুত দ্বিগুণ করেছে টিসিবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২১, ০৮:৩৪ এএম

৬ পণ্যের মজুত দ্বিগুণ করেছে টিসিবি

অতীতকালে সাধারণত ঈদ সামনে রেখেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিত ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে নিন্দামন্দও কম শুনতে হয়নি তাদের। ফলে বর্তমান যুগে কৌশল কিছুটা বদলে ফেলেছে তারা। এখন পণ্যের দাম বাড়ানো হয় রোজার মধ্যে নয়, বরং রোজা সামনে রেখে, রোজা শুরুর এক-দেড় মাস আগে থেকেই। ফলে সাধারণ মানুষের সামনে অন্তত এটুকু বলা যায় কই, রোজার মধ্যে তো পণ্যের দাম বাড়েনি কোনো!

সরেজমিন বাজার ঘুরে এবারো দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে এরই মধ্যে দাম বেড়েছে ভোজ্যতেলের। দাম বেড়েছে মসুর ডাল ও চিনির। তাল মিলিয়ে দাম বেড়েছে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজেরও। রোজার সময় এসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে। সেই চাহিদাকে পুঁজি করে সাধারণ মানুষের পকেট কেটে অনৈতিক মুনাফা লুটে নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সব ধরনের নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুরের পর্যাপ্ত মজুত গড়ে তোলা হয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় বেশি। এদিকে রমজান সামনে রেখে নিত্যপণ্যের মজুত, সরবরাহ ও এর যৌক্তিক মূল্য নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। যে কোনোভাবেই হোক রমজানে নিত্যপণ্যের যৌক্তিক মূল্য, সরবরাহ ও মজুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কাছে জানতে চেয়েছেন, রমজানে প্রয়োজনীয় এই ৬টি নিত্যপণ্যের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সরবরাহ, যৌক্তিক মূল্য ও পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করতে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে? মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বাণিজ্যমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদকে অবগত করেছেন যে, রোজায় বাজার স্বাভাবিক রাখতে ৬টি পণ্য টিসিবির মাধ্যমে আমদানি করা হবে। টিসিবির সুলভমূল্যে বিপণন সক্ষমতাও দ্বিগুণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে ভোগ্যপণ্য আমদানির বিষয়টিও নজরদারিতে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজানে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা ও খেজুরের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। এর বাইরে মসুর ডাল, বেসন, পেঁয়াজ, ময়দাসহ কয়েকটি পণ্যের চাহিদাও কিছুটা বাড়ে। এর মধ্যে স্বাভাবিক সময়ে প্রতি মাসে সয়াবিন, পামসহ ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে দেড় থেকে দুই লাখ টন, যার ৯০ শতাংশই আমদানিনির্ভর। রোজায় এ চাহিদা ২০ শতাংশের মতো বাড়ে। একই অবস্থা চিনির ক্ষেত্রেও। বছরব্যাপী দেশে ১৮ থেকে ২০ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে রমজানে চাহিদা কিছুটা বেশি থাকে।

জানা গেছে, সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) রোজার সময়ের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ১৭ হাজার টন ডাল, ৬০০ টন ছোলা, আড়াই কোটি লিটার ভোজ্যতেল, ১৩ হাজার টন চিনি ও অন্যান্য পণ্যের মজুত নিয়ে সুলভ মূল্যের বাজার ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতি নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ভোজ্যতেলসহ আরো কিছু পণ্য আমদানির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। টিসিবি বলেছে, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় দ্বিগুণ মজুত সক্ষমতা নিয়ে তারা রোজার আগেই মাঠে নামছেন। আরো কিছু পণ্যের মজুত বাড়াতে বিভিন্ন উৎস থেকে পণ্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে।

টিসিবি সূত্র জানায়, পণ্য মজুত বাড়ানো হচ্ছে এবং পবিত্র শবেবরাত থেকে বিক্রি শুরু হবে। এ বছর সারাদেশে প্রায় ৫০০টি খোলা ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করা হবে। তবে তা যথেষ্ট কিনা, তা নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারে ক্রেতার আচরণেও পণ্যের দাম বাড়ে। তিনি ক্রেতা সাধারণকে অতিরিক্ত পণ্য কিনে বাজারকে চাপে না ফেলার অনুরোধ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App