×

সারাদেশ

সেই ৯৫০ টাকার আম দেখতে জনতার ঢল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২১, ১০:০৮ পিএম

সেই ৯৫০ টাকার আম দেখতে জনতার ঢল

রাজশাহীর মোহনপুরে স্বপ্নে পাওয়া হলুদ রঙের সেই আম দেখতে জনতার ঢল নেমেছে আব্দুর রাজ্জাক নামের এক যুবকের বাড়িতে। তিনি আমটি ৯৫০ টাকায় ওয়াজ মাহফিল থেকে কিনে নেন। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) তার বাড়িতে প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ ভিড় জমিয়েছেন।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের একটি ওয়াক্তিয়া মসজিদের উন্নতিকল্পে এক ইসলামি জলসার আয়োজন করে মসজিদ কমিটি। এতে প্রধান অতিথি করা হয় রাজশাহী-৩ (পবা- মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দীনকে। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম। স্থানীয়রা মসজিদের বার্ষিক এ ওয়াজ মাহফিলে যোগ দিয়ে দান করেন স্বতঃস্ফুর্তভাবে। ওয়াজ চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। ওই সময় একটি আম দান করেন ফাহিমা বেগম নামে স্থানীয় এক নারী। অসময়ে লাল টুকটুকে আমটি নজর কাড়ে এলাকাবাসীর।

মধ্যরাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাকা আমটির দিকেই সবার নজর। এক পর্যায়ে আমটি কিনতে দাম হাকাতে শুরু করেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। ২০ টাকা থেকে শুরু হওয়া আমের দাম গিয়ে ঠেকে ৯৫০ টাকায়! কিনে নেন আব্দুর রাজ্জাক নামের এক যুবক।

স্থানীয়রা জানান, বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে দান করা বস্তুগুলো ডাকের মাধ্যমে কিনে নেয়া হয় এবং সেই টাকা দানের মধ্যে গণ্য হয়। আম দেখে গভীর রাত জেগে আমটি ক্রয়ের জন্য দাম হাকান। সবশেষ ৯৫০ টাকয় বিক্রি হয় আমটি। আমটির সঙ্গে মুঠোফোনে সেলফিও তুলতে দেখা যায় অনেককে। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।

ফাহিমা বেগম ভোরের কাগজকে বলেন, পরপর তিনদিন আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয় যে, আমার বাড়ির সামনের গোরস্থানে আম গাছের নিচে আম পড়ে আছে। স্বপ্নে দেখে সেখানে যাই এবং আমও দেখতে পাই। তবে ভয় হচ্ছিল আমটি নিতে। একবার ফিরে আসি। তবে অদৃশ্য আওয়াজে আমাকে আবারো সেখানে যেতে বাধ্য করা হয়। বাধ্য হয়ে পরের বার গিয়ে আমটি নিয়ে আসি এবং মসজিদে দান করে দেই।

ফাহিমার ছেলে মোহাম্মদ মিঠুন জানান, গোরস্থানের ওই জায়গায় কয়েকটি আমের গাছ রয়েছে। সেখানো প্রচুর আম ধরে। এছাড়া সেই আমগুলো সামান্য টক। তবে আমটির নাম তিনিও বলতে পারেন নি।

আম ক্রয় করা আব্দুর রাজ্জাক নামের ওই যুবক ভোরের কাগজকে বলেন, এসব বিষয় কিছুই জানতাম না। পরে লোকমুখে শুনছি এরকম ঘটনা। মসজিদের জিনিস বেশি দামে কিনলেও কোনো লোকসান নেই।

এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটির সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সাদেকুল আলম ভোরের কাগজকে জানান, পুরো ওয়াজ মাহফিলের অন্যতম আগ্রহের বস্তু ছিল আমটি। এ রকম অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি ধারণা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেটিই হয়েছে। সোনার নাকফুলের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা হলেও একটি আমের দামই হাঁকিয়েছেন ৯৫০ টাকা।

তবে রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জিএমএম বারি ডলার অসময়ে রঙিন আমে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সবেমাত্র গাছে মুকুল ফুটেছে। আর সেই রকম কোনো আম এই অসময়ে হয় তা আমার জানা নেই। তবে কিছুদিন আগেই ‘বারি-১৪’ নামের রঙিন আমের জাত জাতীয় নিবন্ধন বোর্ডে অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু এই ‘বারি-১৪’ অসময়ে পাওয়া অসম্ভব। ওই রঙিন আম হয়ত বাইরের কোনো দেশের হতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App