×

সারাদেশ

কোম্পানীগঞ্জে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ বাদল গ্রেপ্তার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২১, ০৮:৫২ পিএম

কোম্পানীগঞ্জে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ বাদল গ্রেপ্তার

মিজানুর রহমান বাদল

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে নোয়াখালী প্রেসক্লাব এলাকার একটি চা দোকানের সামনে থেকে তাকে একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নেওয়া হয়েছে। পরিবারের দাবি ছিল, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তাকে তুলে নিয়ে যায়।

পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, মিজানুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা পরে ঠিক করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি জানান, বাদল কয়েকজন নেতাকর্মীসহ প্রেসক্লাবের পশ্চিম পাশের রেডক্রিসেন্ট মার্কেটের একটি চা-দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস এসে সেখানে দাঁড়ায়। প্রায় এক মিনিট পর ওই মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন বের হয়ে বাদলকে তুলে নেয়। এরপর মাইক্রোবাসটি জেলা জজ আদালতের সড়ক হয়ে পশ্চিম দিকে শহরের মূল সড়কের দিকে চলে যায়।

মিজানুর রহমান বাদলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য একটি প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন লোক বের হয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।

বাদলের ছোট ভাই রহিম উল্যাহ চৌধুরী বিদ্যুৎ জানিয়েছেন, বিকেল চারটার দিকে তার বড় ভাইকে ডিবি পুলিশ জেলা শহর মাইজদীর একটি দোকানের সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। ভাইয়ের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

তবে সন্ধ্যা ছয়টায় ফেসবুকে মিজানুর রহমানের একটি পোস্ট পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেন রহিম উল্যাহ। বাদল লিখেছেন, সবাই ধৈর্য ধরুন। দেহে একবিন্দু রক্ত থাকতেও প্রিয় নেত্রী ও প্রিয় নেতার অপমান আমরা সইব না। কোম্পানীগঞ্জকে অপশাসনের হাত থেকে মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দেখা হবে মুক্ত কোম্পানীগঞ্জে।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কোম্পানীগঞ্জের চাপরাশিরহাট বাজারে আবদুল কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদল সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি মারা যান। ৯ মার্চ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা চত্বরে রাত ১০টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে পুনরায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আলা উদ্দিন নামের এক যুবলীগ কর্মীও মারা যান। এতে আরো বেশি অশান্ত হয়ে পড়ে কোম্পানীগঞ্জ।

এদিকে বুধবার রাতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাত ৯টার দিকে মিজানুর রহমান বাদল, ফখরুল ইসলাম রাহাত, মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু ও আবদুর রাজ্জাক বাহিনীর নেতৃত্বে প্রায় ৩ থেশে ৪ শত সশস্ত্র সন্ত্রাসী আমাকে ও আমার দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে বিনা উস্কানিতে সম্পূর্ণ একতরফাভাবে আমার পৌরসভা কার্যালয়ের চারপাশ থেকে ঘিরে বৃষ্টির মতো গুলি ছুঁড়ে ও বোমা বর্ষণ করে অতর্কিত হামলা করে।

কাদের মির্জা দাবি করেন, বাদলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিতে আমার ১০জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও ৫০ থেকে ৬০ জন নেতাকর্মী মারাক্তকভাবে আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে বসুরহাট পৌরসভায় গুলিবর্ষণ ও হামলার ঘটনা একতরফা দাবি করে কাদের মির্জা জানান, কিছু প্রিন্ট, ইলেক্টনিক্স মিডিয়া ও সংবাদ মাধ্যম সেই রাতের ঘটনাকে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বলে প্রচার করেছে। যা সত্যি নয়। সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে সংবাদ প্রচারের দাবি জানান কাদের মির্জা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App