×

সারাদেশ

অসমাপ্ত রাণীনগর সড়কের কাজ, ধুলা বালিতে নিত্য দুর্ভোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২১, ০৩:১১ পিএম

অসমাপ্ত রাণীনগর সড়কের কাজ, ধুলা বালিতে নিত্য দুর্ভোগ

নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কের দৃশ্য।

নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার কাজ না হওয়ায় খানা খন্দে ভরপুর হয়ে গেছে রাস্তাটি। রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখায় খানা খন্দে ও ধুলা আর বালিতে নিত্য দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ? এমন ভাবনা যেন সাধারণ মানুষকে ব্যকুল করে তুলেছে। দ্রুত এই সড়কের কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এদিকে রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ না হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল। তিনি বলেন, জনস্বার্থে দ্রুত সড়কটির কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে।

জানা যায়, রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়কটি ছিলো এলজিইডি’র আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকা জুড়ে মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষে গত চার বছর আগে এলজিইডি থেকে সড়ক জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এই সড়কটি রাণীনগর সদর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্য দিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহা সড়কের সাথে মিলিত হয়েছে। রাস্তাটি প্রসস্ত এবং মজবুত থাকার জন্য গত ২০১৮ সালে টেন্ডার দেয়া হয়। দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তা এবং ২৬টি কালভার্ট ও চার টি সেতু নির্মানে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু নির্মানে সময় দেয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এখন পর্যন্ত রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পরে থাকায় রাস্তা জুড়ে ছোট বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে খানা খন্দে ও ধুলা আর বালিতে নিত্য দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। এছাড়া দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এপর্যন্ত কালভার্ট এবং সেতু নির্মান কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার। অধিকাংশ সেতু-কালভার্ট ভেঙ্গে কাজ না করেই ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে পার্শ্ব রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় হতাশায় পরেছেন এলাকাবাসি। রাস্তার এমন বেহাল দশার অযুহাতে পরিবহন মালিকরা দফায় দফায় বৃদ্ধি করছেন ভাড়া।  ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন পথচারীরা, রাস্তার যাত্রীসহ উপজেলার লাখ লাখ মানুষ।

পথচারী ও রাস্তার যাত্রী মকলেছুর রহমান, নাহিদ হোসেন, বকুল, হাসান, এমরানসহ কয়েকজন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারি মালামাল পরিবহন, জরুরী রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে। এছাড়া রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখায় রাস্তায় খানা খন্দে ও ধুলা আর বালিতে নিত্য দুর্ভোগ আমাদের । এই সড়কের কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভাল জানেন।

যানবাহন চালক খালেদ, একরামুল, হাবিব, রুবেল, জাফের আলীসহ আরো অনেকে বলেন, এই সড়কে  আমাদের নিত্য দুর্ভোগ। যাত্রীরা রাস্তার ধুলা-বালি ও রাস্তার খানা খন্দের দুর্ভোগের কারনে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে চায় না। রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর পর্যন্ত যেতে আগে সময় লাগতো ১০ মিনিট এখন সড়কের এমন দশার কারনে যেতে সময় লাগে ৩০ মিনিট। রাণীনগর থেকে কালীগঞ্জ যেতে প্রায় এক ঘন্টাও বেশি সময় লাগে। এই সড়কটিকে ঘিরে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ চালু করেন আবার কাজ বন্ধ রেখে আবার চলে যান। যেন দেখার কেউ নেই। উপজেলার লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ লাগব করতে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, নিদিষ্ট সময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। দ্রুত এই সড়কের কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিত দেওয়া হয়েছে। যদি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু না করে তাহলে তাদের চুক্তিনামা বাতিল করাসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App