×

পুরনো খবর

শৃঙ্খল ভাঙলেন বাঁধন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২১, ১২:৫৯ এএম

শৃঙ্খল ভাঙলেন বাঁধন

রবে না এ শৃঙ্খল উচ্ছৃঙ্খলতার বন্ধন কারাগার হবে হবে চুরমার, পার হবে বাধার গিরি মরু পারাবার- নির্যাতিত ধরা মধুর, সুন্দর প্রেমময় হোক, জয় হোক জয় হোক।

কাজী নজরুল ইসলামের এই দাপুটে কথাগুলোকে নিজের কথা বলে মনে করেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। যেন নজরুল তার কথাগুলো বলে গেছেন শব্দাকারে। এমনটাই বলছিলেন এ অভিনেত্রী। সম্প্রতি কাজী নজরুল ইসলামের জয় হোক নামক গানকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে মিউজিক্যাল ফিল্ম। এতে অভিনয় করেছেন বাঁধন। বান্দরবনের থানচি অঞ্চলের রেমাক্রিতে মিউজিক্যাল ফিল্মটির দৃশ্যধারণ করা হয়েছে। দৃশ্যধারণকালের বেশ কিছু স্থিরচিত্র বাঁধন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। সে স্থিরচিত্রের একটিতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জঞ্জাল প্যাঁচিয়ে ধরে রেখেছে বাঁধনকে। আর তিনি পাখির ডানার মতো দু’হাত মেলে উড়ে যেতে চাইছেন আকাশে সব কিছু ছিঁড়ে! নজরুলের গানের ভাবার্থ চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তা এ স্থিরচিত্র প্রমাণ দিচ্ছে। এছাড়াও আরো বেশ কিছু স্থিরচিত্রে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আমাদের সমাজ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধক নানা অবস্থা। মিউজিক্যাল ফিল্মটি নিয়ে বাঁধনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাঁধন জানান, নজরুলের এ গানটি শুনে, কথাগুলো শুনে তিনি তার প্রেমে পড়ে যান। এ যেন বাঁধনের নিজের কথা। তিনি বলেন, ‘প্রথম যখন গানটি শুনি গায়ে কাঁটা দিয়েছিল। আমি কান্না করেছিলাম। শুনছিলাম আর ভাবছিলামÑ এ তো আমারই কথা।’ টানা দুদিন শুটিং চলে মিউজিক্যাল ফিল্মটির। এ দুদিন বাঁধনসহ গোটা টিমকে নদীতে থাকতে হয়েছে। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে বাঁধন বলেন, ‘আমার পানিতে ভীষণ ভয়। কারণ আমি সাঁতার জানি না। তবু আমাকে দুদিন পানিতে থাকতে হয়েছে। বেহুলাকে যেমন পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল তেমন একটা দৃশ্য করার হয়। তবে ভেলার পরিবর্তে পানিতে গা ভাসিয়ে দিতে হয়েছিল আমাকে।’ সাঁতার না জানা বাঁধন এক অদ্ভুত ভাবনা নিয়ে নিজেকে ছেড়ে দেন নদীর পানিতে। ভেসেও থাকেন! এ অদ্ভুত ব্যাপারটির কথা শেয়ার করতে গিয়ে বাঁধন বলেন, ‘পিপলু ভাই যখন আমাকে পানিতে ভেসে থাকার কথা বললেন তখন প্রথমে ভয় কাজ করলেও যখন ভেসে থাকার জন্য পানিতে গা ছেড়ে দিলাম তখন মনে হচ্ছিল স্রোতে ভেসে এমন কোথাও চলে যাই যেখানে আমার মুক্তি! আর এই ভাবনা থেকেই পানিতে ভেসেছিলাম। কখন যে ভাসতে ভাসতে একটা পাথরে ধাক্কা খেয়ে স্রোতের বিপরীতে ভাসতে শুরু করি তা টেরই পাইনি।’ কিছু কিছু কাজ ও নিজের ভাবনা এক হলে তখন কাজের ক্লান্তি গা সওয়া হয়ে যায়। যেমনটা এ কাজের ক্ষেত্রে হয়েছে। কাজটি করতে গিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে, নাগরিক সভ্যতার বাইরে যেতে হয়েছিল তাকে। তবে সেখানে শহুরে জীবনে পাওয়া সব কিছু না পেয়ে আক্ষেপ করছেন না বাঁধন। বরং এই যে না পাওয়াÑ তার মাঝেই যেন তিনি পেয়েছেন অনেক কিছু, অনুভব করেছেন মানবিক জীবন আসলে কী! এ বিষয়টি নিয়ে বলতে গিয়ে বাঁধন বলেন, ‘জঙ্গলে গিয়ে আমাকে কাপড় পাল্টাতে হয়েছে। নেটওয়ার্ক নেই, নাগরিক কোলাহল নেই। তবু এ জীবন উপভোগ করেছি। নেটওয়ার্কের বাইরে থাকতে হবে, বা কোথায় যেয়ে থাকবÑ এসব মাথায় ছিল না। আমার মনে হয়েছে আমার ভেতরের না বলা কথাগুলো, চাপা কষ্টগুলো, ক্ষোভগুলোÑ আমি কিছুটা হলেও প্রকাশ করতে পেরেছি এই মিউজিক্যাল ফিল্মে। এটা রিলিজের পর দর্শক হয়তো বুঝতে পারবেন।’ কাজী নজরুল তার গানে সামগ্রিক মুক্তির কথা বললেও মিউজিক্যাল ফিল্মটিতে নারী মুক্তির বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে জানান বাঁধন। তিনি বলেন, নারীরা সব জায়গায় সব কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং তাদের ভেতরের ক্ষোভ কষ্ট ভয় এবং নিপীড়নগুলো মিউজিক্যাল ফিল্মের দৃশ্যে দৃশ্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, অর্ণবের সংগীতায়োজনে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন সুস্মিতা আনিস এবং মিউজিক্যাল ফিল্ম নির্মাণ করছেন পিপলু আর খান। ফেব্রুয়ারির ২৬ ও ২৭ তারিখে মিউজিক্যাল ফিল্মটির দৃশ্য ধারণ হয়। :: মেলা প্রতিবেদক

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App