×

পুরনো খবর

‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’র একদিন...

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২১, ০১:০৫ এএম

‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’র একদিন...
‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’র একদিন...

চ্যাপলিনের ‘দ্য কিড’ অথবা বাদল রহমানের ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ কিংবা আজিজুর রহমানের ‘ছুটির ঘণ্টা’Ñ যতবারই এ ধরনের শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখা হয়, ততবারই বিস্মিত হতে হয়; সম্প্রতি স্বাধীন চলচ্চিত্রকার দেবাশীষ দাসের নির্মিতব্য স্বল্পদৈর্ঘ্য ‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’র গল্প ও লোকেশনের ন্যারেটিভ শুনে এ চলচ্চিত্রটির প্রতি তুমুল আগ্রহ জন্মে। দেবাশীষ দাস চলচ্চিত্রটি প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘মায়ের হাত থেকে এক রহস্যময় মানুষের পিছু পিছু লোকালয় থেকে হারিয়ে যায় দশ বছর বয়সি মুকুল। আর এখান থেকেই শুরু হয় তার জগৎদর্শন। নানান ঘটনা, নানান মানুষের সান্নিধ্য পেয়ে মুকুল তার মায়ের কাছে ফিরে তো আসেই কিন্তু এই হারিয়ে যাওয়া মুহূর্তে তার এক আশ্চর্য বোধের উদয় হয়, মুকুল শুধু আর তার মায়ের সন্তান নয় সে পৃথিবীর সন্তানে পরিণত হয়। এমনকি এই চলচ্চিত্রে আমরা শিশুদের মনোজগতের পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রকাশের চেষ্টা করব।’ এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটিতে মুকুল নামের মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন ‘জলের গান’ ব্যান্ডের কর্ণধার রাহুল আনন্দ ও ঊর্মিলা শুক্লার একমাত্র সন্তান চন্দ্রবিন্দু তোতা। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে সে। বয়স ১০। পাপেট তৈরি এবং ছবি আঁকা, ভেন্ট্রিলোকুইস্ট করা, স্টপমোশন-অ্যানিমেশন করার মতো নানান সৃজনশীল কাজে সময় কাটে তার। চলচ্চিত্রটির অন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন অভিনেতা আহমেদ রুবেল, রিফাত চৌধুরী, সাইফুল জার্নাল এবং গাজী মাহতাব হাসান। চলচ্চিত্রটির পোশাক পরিকল্পনায় রয়েছেন ঊর্মিলা শুক্লা। শেষমেশ সঙ্গী হওয়া ২০১৯-২০ সালে জাতীয় অনুদানপ্রাপ্ত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’ টিমের। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়াতে শুরু হয় ‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’ চলচ্চিত্রের শুটিং। এর ঠিক আগের দিনই ট্রেনে করে অভিনয়শিল্পী সাইফুল জার্নাল ও তোতার সঙ্গে লালনের শহরের উদ্দেশে রওনা দেয়া। রূপসী বাংলাদেশের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দেখতে টিম পা ফেলে কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ জংশনে। তখন দুপুর ক্রমশ গড়িয়ে চলছে বিকালের পথে। প্ল্যাটফর্মে নামার পর রিসিভ করেন কয়েকজন চলচ্চিত্রকর্মী, যারা এ চলচ্চিত্রটিতে কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে অটোরিকশা ধরে সোজা পৌঁছে যাওয়া কুষ্টিয়ার ফেয়ার গেস্টহাউসে। সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন নির্মাতা দেবাশীষ দাস এবং চলচ্চিত্রটির সঙ্গে জড়িত অন্যরা। শুটিং সেটসহ সবকিছু ঠিকঠাক প্রস্তুত করতে কদিন আগে থেকেই কুষ্টিয়ায় অবস্থান করছিলেন তারা। হ পড়ুন : পৃষ্ঠা-১০ গেস্টহাউসে খাওয়া-দাওয়া পর্ব শেষ করে একদল চলে যায় কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ ডাক বাংলোয়। যেখানে ছিলেন চলচ্চিত্রটির নির্বাহী প্রযোজক ফজলে হাসান শিশির। ছিলেন এ চলচ্চিত্রে পরিচালনা টিমের সদস্য পার্বণ মাজহার, সুস্ময় ও রাজন তালুকদার। অভিনয়শিল্পীরা ফেয়ারেই ছিলেন। রাতে ডাকবাংলোতে নির্মাতার সঙ্গে শুটিংয়ের বিষয়ে কিছু পরিকল্পনার কথাবার্তা সেরে নেন কলাকুশলীরা। ২৮ ফেব্রুয়ারি খুব ভোরে শুটিং স্পটের উদ্দেশে রওনা দেয়া। অভিনয়শিল্পীরাও চলে আসেন সকাল-সকালই। কুষ্টিয়ার জগতিতে অবস্থিত এই সুগার মিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই মনোরম। জায়গাটি সুগার মিলের কোয়ার্টার এরিয়া। কাঠবিড়ালী ও পাখিদের অভয়ারণ্য। ছায়াডাকা-পাখিডাকা পরিবেশ। একপর্যায়ে শুটিংয়ে জন্য প্রস্তুত হয়ে যান চলচ্চিত্রকর্মী সবাই। কোথায় প্রথমে শট টেক হবে তা ঠিক হয়ে যায়। তোতা ও সাইফুল জার্নাল দুজনেই সেটে হাজির হয় তাদের কস্টিউমে। সাইফুল জার্নালকে দেখা যায় রহস্যময় ছড়কিওয়ালা লুকে। হাতে ছড়কির ছড়ি, পরনে পাখি পোশাক। যার পরিকল্পনা করেছেন ঊর্মিলা শুক্লা। এদিকে তোতার লুকে খুব একটা পরিবর্তন নেই। খুব সাদামাটা ভাবেই সে প্রস্তুত। এর আগেও সে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছে। সেদিনকার অভিজ্ঞতা নিয়ে ওই রাতে তোতা জানায়, আজ তার ভালোই লাগছে। সবচেয়ে ভালো লাগছে যখন শুটিংটা শুরু হয়। প্রথমদিকে সে খুব এক্সাইটেড ছিল। এছাড়া এই জার্নিটাও সে এনজয় করছে। এর আগেও তোতা বেশ ক’বার ক্যামেরার সামনে-পেছনে টুকটাক কাজ করেছে। সে বলে, ‘ক্যামেরার পেছনে আমার যতটুকু কঠিন মনে হয়েছে, সামনে অনেক সহজ। আমি আগে ভাবতাম সামনে গেলে অনেক কঠিন হবে যে কেমনে করব! সামনে গিয়ে দেখি এটা ব্যাপারই না। তখন আমি স্থির হইছি, যাক ভালোই হলো।’ প্রথম দিনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন চলচ্চিত্রটির সঙ্গে জড়িত সবাই। রোদকে থোড়াই কেয়ার করে একাগ্র ও উদ্দীপনা নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদিন কেটে যায় বিভিন্ন দৃশ্যায়নের ব্যস্ততায়। সন্ধ্যার পর স্পট থেকে ফিরে আসা হয়। রাতে খাবারের পর সাইফুল জার্নালের কাছে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা শুনতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সুন্দর একটা টিমের সঙ্গে গোছানো চিন্তার একটা সহজ যাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা সবাই যাচ্ছি। আরেকটু সহজ করে বললে, এক ধরনের গোছানো একটা প্রক্রিয়া, আমরা শিল্পী ও কলাকুশলীরা সুন্দর একটা নৌকায় উঠে গেছি; এর মধ্যে অনেক চর জাগবে, ঢেউ বা ঝড় আসবেÑ কখনো নৌকা উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে। এখন ক্যাপ্টেন এটা কোন গন্তব্যে নিয়ে থামায়, সেটা তার ভাবনা।’ পরেরদিন শুটিংটিমকে ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ফেরা। :: রাব্বানী রাব্বি

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App