×

পুরনো খবর

গোলাপী স্বর্গ গড়লেন প্রেমিক, ফিরলো না প্রাক্তন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২১, ০৪:১০ পিএম

গোলাপী স্বর্গ গড়লেন প্রেমিক, ফিরলো না প্রাক্তন
গোলাপী স্বর্গ গড়লেন প্রেমিক, ফিরলো না প্রাক্তন
গোলাপী স্বর্গ গড়লেন প্রেমিক, ফিরলো না প্রাক্তন
গোলাপী স্বর্গ গড়লেন প্রেমিক, ফিরলো না প্রাক্তন

প্রাক্তনকে ফিরে পাওয়ার স্বপ্নে চীনের গুয়াংডং প্রদেশের হিটউ গ্রামে গোলাপী স্বর্গ গড়ে তুলেন যুবক জিয়াও জু।

চীনের গুয়াংডং প্রদেশের যুবক জিয়াও জু। প্রাক্তন বান্ধবীকে মুগ্ধ করার জন্য অনেক প্রচেষ্টার পর এই প্রদেশের হিটউ গ্রামে একটি ছোট্ট জঞ্জাল ভূমিকে তিনি গোলাপী স্বর্গে পরিণত করেছিলেন।  এক মাস ধরে দিনরাত খেটে  তিনি প্রায় ১০০,০০০ ইউয়ান (১৫,৫০০ ডলার) খরচ করে তার গ্রামের কাছাকাছি একটি হ্রদ থেকে উত্থিত দ্বীপকে রূপকথার ‘প্রেমের দ্বীপে’ পরিণত করেন।

নকল চেরি ফুল, ঝোলা, নদীর পাথরের ব্যবস্থা এবং আরও অনেক কিছু দিয়ে তিনি দ্বীপটি সাজান। তার প্রেমের গল্প শুনে গ্রামের অনেকই তাকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। সবার চেষ্টায় অবশেষে চোখ ধাধানো গোলাপী স্বর্গ গড়া হলো। যে দেখে সেই অবাক হয় এর সৌন্দর্যে। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি এমন ব্যতিক্রমী কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তা স্রেফ স্বপ্নই থেকে গেলো।  ফিরে এলেন না সেই প্রাক্তন বান্ধবী।

৩০ বছর বয়সী জিয়াও জু গুয়াংজু শহরে কাজ করার সময় তার প্রাক্তন বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তারপর তারা দুজনে একসাথে ছিলেন। একসময় তিনি তার বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখাশোনার জন্য হিটউ গ্রামে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তার গার্লফ্রেন্ড নগর জীবন ছেড়ে গ্রামে যেতে রাজি হননি। মেয়েটির পরিবারও গ্রামাঞ্চলে তার বসবাসের সম্মতি দেয়নি। তারাে বিচ্ছেদে বাধ্য হলো। তবে এখানেই গল্পের শেষ নয়। জিয়াও তাঁর প্রাক্তনকে দেখাতে চেয়েছিলেন, তিনি এখনও তাকে ভীষণ ভালবাসেন। তিনি তার প্রতি তার অনুভূতিগুলি গোলাপীি স্বর্গে  ফুটিয়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন। ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি বাড়ির কাছাকাছি হ্রদ থেকে উঠে আসা জঞ্জাল ভূমিকে তার ভালবাসার এক অনন্য প্রতীক হিসাবে  রূপান্তরিত করার কাজ শুরু করেছিলেন।

জিয়াও জু সেখানে কয়েক ডজন প্লাস্টিকের ফুলে ভরা নকল পীচ, চেরি গাছ এবং গোলাপী ডেইজি রোপণ করেছিলেন। পাথর দিয়ে পাকা রাস্তা তৈরি করেন। দোলনা স্থাপন করেন। স্থানীয়দের সহায়তায় এই গোলাপী স্বর্গে খিলানযুক্ত কাঠের সেতু নির্মাণ করেন। প্রেমের দ্বীপটি তৈরি করতে এক মাস সময় লেগে যায়।

প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে, জিয়াও জু তার প্রাক্তন বান্ধবীর কাছে এর ছবি পাঠান। তিনি জানান,  প্রাক্তনের জন্য তার মাঝে গভীর অনুরাগ আজও জীবন্ত। তার জন্যেই এই সমস্ত কিছু করেছেন তিনি। মুগ্ধ হওয়া সত্ত্বেও, ওই নারী তার আশা মতো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

প্রাক্তন বান্ধবী জিয়াও জু-কে বলেন, ‘আপনার আন্তরিক উৎসর্গের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ! আপনি আমার চেয়ে ভালো কিছু খুঁজে পাবেন।’

জিয়াও যখন তার এই প্রেমের দ্বীপ নষ্ট করার সিদ্ধান্ত নিল, তার ঠিক আগেই  গভীর অনুরাগের এই ব্যতিক্রমী চেষ্টার গল্পটি বিশ্বের বহু মানুষের মন জয় করে ফেলে। গ্রামে স্থানীয় এবং দর্শনার্থীরা ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাগ করে নিতে শুরু করে। দূর-দূরান্ত থেকে প্রেমিক প্রেমিকারা একবার  দেখার জন্য অনুরাগের এই দ্বীপে বেড়াতে আসতে শুরু করেন। তাদের ক্যামেরায় বন্দি গুয়াংডং প্রদেশের হিটউ গ্রামের এই গোলাপী  স্বর্গের ছবিগুলি চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায উই ভো-তে ভাইরাল হতে শুরু করে। এইভাবে জিয়াও জু'র দুঃখের কাহিনী সবার জানা হয়ে যায়।

গত কয়েক মাস ধরে, জিয়াও জুর গোলাপী দ্বীপটি অসংখ্য ছবি অনলাইনে প্রকাশ পায়। এ সময়ে শ কয়েকটি বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছে এই দ্বীপে। দ্বীপ দেখতে দেখতে প্রেমের অনন্য প্রতীক হয়ে উঠেছে। জিয়াও জু তার আসল মিশনে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও অনুরাগের দ্বীপটি অন্তত তার প্রেমের বার্তা পাঠানোর উদ্দেশ্যটি পূরণ করেছে। নির্মাতা তাতেই  এখন খুশি।

জিয়াং জু বলেন, `প্রেমের দ্বীপটি আমার ইচ্ছা পূরণ করেনি। তবে এটি অন্যকে পরিপূর্ণ করেছে। অন্যের ভালবাসা প্রত্যক্ষ করছে। এটিও একটি ভালো জিনিস।'  হিটউ গ্রামের উপসচিব জু জিংফেং বলেন, যে প্রেমের দ্বীপের অপ্রতিরোধ্য সাফল্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি পর্যটন টানার আশায় ইন্টারনেটে প্রচার শুরু করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।

সূত্র: অডিটিসেন্ট্রাল

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App