×

আন্তর্জাতিক

সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রথম দেখা গেল সু কিকে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২১, ০৬:০৫ পিএম

সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রথম দেখা গেল সু কিকে

সু কির মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ। ফাইল ছবি

মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারির সেনাঅভুত্থানের পর ক্ষমতা হারান ও গৃহবন্দি হন দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু কি। এর পর আর তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। সোমবার (১মার্চ) এই প্রথম তাকে প্রকাশ্যে দেখা গেলো। তিনি অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার অংশ নেন। এ সময় তাকে ‘সুস্থ’ আছেন বলে দেখা যায়। ভিডিওতে তিনি তার আইনী সহযোগিতাকারী টিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। এ দিন নতুন করে দুটি মামলা করা হয়েছে সু কির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সু কির বিরুদ্ধে জান্তা সরকারের দায়ের করা মামলার সংখ্যা চারটিতে দাঁড়ালো। সামনের দিনগুলোতে আরও অনেক মামলা হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা এ বিচার শুনানি এবং নতুন করে দুটি মামলাকে গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলন দমানোর লক্ষ্যে সু কির ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল বলে মনে করছেন।

১ ফেব্রুয়ারি আটকের পর মিয়ানমার নেত্রী সু কির বিরুদ্ধে দেশটির জান্তা সরকার দুটি অভিযোগে একাধিক মামলা করেছে। এরপর থেকে দেশটিতে অব্যাহতভাবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং সেনা শাসনের অবসানের দাবিতে চলছে বিক্ষোভ। গণতন্ত্রপন্থি জনসাধারণ রাজপথে নেমে এসে প্রতিদিন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী সু কি ও তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের অবিলম্বের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু জান্তা সরকার তাতে কোনোভাবে সাড়া দিতে রাজি নয়। বিক্ষোভ যতো তীব্র হচ্ছে ততই সেনাবাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠছে। দেশটির রাজপথকে রক্তে ভাসিয়ে দিচ্ছে। গত রবিবার ছিলো দেশটির চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। এদিন অন্তত ১৮ জন মানুষ গণতন্ত্রের জন্য রাজপথে নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছেন। এরপরও গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে, সেনাবাহিনীর চোখ রাঙানি, রক্তপাত আর মৃত্যুভয় উপক্ষো করে সোমবার ফের বিক্ষোভের প্রস্তুতির ডাক দিয়েছে এ আন্দোলনের নেতারা। রাজপথে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার নেক্কারজনক ঘটনায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সারাবিশ্বের নেতারা। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক দেশ প্রাণহানীর নিন্দা জানিয়ে দেশটিতে দ্রুত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আবহ্বান জানিয়েছে।

অভুত্থানের পর সোমবার রাজধানী নেপিদোর একটি আদালতের শুনানীতিই ৭৫ বছর বয়সী সু কিকে প্রথম দেখা গেলো। গত এক মাস ধরে জানা যায়নি, সু কিকে আসলে ঠিক কোথায় আটকে রেখেছে সেনাবাহিনী। গণমাধ্যমে কয়েকটি প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছিল, নেপিদোতে নিজের বাসভবনে তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে তাকে গোপন কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়।  তবে সু কিকে কোথায় রাখা হয়েছে, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নেপিদোর একটি অজ্ঞাত স্থানে সু কিকে বন্দী করে রাখা হয়েছে।

সু কিকে বন্দির কয়েকদিন পরই তার ব্যবহার করা রেডিও বিদেশ থেকে আনা হয়েছে এবং এতে দেশটির আমদানি আইন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে মামলা করে সেনাবাহিনী। দ্বিতীয় মামলাটি করা হয় করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচনী সমাবেশ করার অভিযোগে। সেনাবাহিনী অভিযোগ করে, এতে করোনাকালীন বিশেষ পরিস্থিতির আইন অমান্য হয়েছে। প্রথম মামলায় সু কির তিন বছর জেল হতে পারে। দ্বিতীয় মামলার শায়েস্তা স্পষ্ট না হলেও, গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দোষী প্রমাণিত হলে সু কি ভবিষ্যতে হয়তো নির্বাচনে লড়তে পারবেন না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App