×

সারাদেশ

পদ্মা-মেঘনায় আজ থেকে দুই মাস মাছ ধরা নিষেধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২১, ০৯:৩২ এএম

পদ্মা-মেঘনায় আজ থেকে দুই মাস মাছ ধরা নিষেধ

ফাইল ছবি।

চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকায় অভয়াশ্রম শুরু আজ ১ মার্চ। অভয়াশ্রম চলাকালে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অর্থাৎ ২ মাস এই এলাকায় সব ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরায় সম্পূর্ণরূপে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। শুধু তাই নয়, এই ২ মাস জাটকা ইলিশ বিক্রি-বিপণন ও রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জাতীয় মাছ ইলিশ সম্পদ রক্ষায় সরকার ২০০৬ সাল থেকে প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল ২ মাস দেশের ৪টি নদী অঞ্চলকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে আসছে। কয়েক বছর আগে চাঁদপুর-শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর ৬০ কিলোমিটার অঞ্চলকে পঞ্চম অভয়াশ্রম হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় সরকার মার্চ-এপ্রিল ২ মাস অভয়াশ্রম ঘোষণা করে পদ্মা-মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে জেলেরা ইতোমধ্যে তাদের নৌকা ও জাল ডাঙ্গায় তুলে ফেলছেন। গত শনিবার সরেজমিন চাঁদপুরের নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা তাদের ব্যবহৃত নৌকাগুলো রাখার ব্যবস্থা করছেন। একদিন বাদেই ২ মাস তাদের নৌকাগুলো সেখানে বাঁধা থাকবে।

তবে মাছ ধরা না ধরা নিয়ে হতাশাগ্রস্ত জেলে পরিবারগুলো। তারা জানান, প্রত্যেক বছর ২ মাস গাঙ্গে অভিযান চলে। এই ২ মাস আমাগো নৌকাগুলান উরফে উঠাইয়া রাহন লাগে। সরকার আমাগোরে ৪০ কেজি কইরা চাল দেয়। এই ৪০ কেজি চাল আবার বাড়িতে আইন্না ওজন দিলে কয়েক কেজি কম অয়। সরকার আমাগো কতা ভাবে না। হেরা কি জানে না যে চাল খাইয়াই কি মানুষ বাঁচতে পারে?

পুরানবাজার রণাগোয়াল এলাকার কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী জানান, সরকার ঘোষিত জাটকা নিধন বন্ধে ২ মাস নদীতে সব ধরনের জাল ফেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে জেলেরা নৌকা ডাঙ্গায় উঠাতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে করে জেলে পরিবারগুলো মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েন। তাছাড়া আমাদের ঋণের টাকা পরিশোধ করতেও বেশ বেগ পেতে হয়। সরকার যে ৪০ কেজি চালের সহযোগিতা দেয় তা দিয়ে একটি পরিবার কোনোমতেই চলতে পারে না।

কয়েকজন জেলে জানান, সরকার তাদের ভালোর জন্যই ২ মাস নদীতে জাল ফেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু এর বিনিময়ে সরকার তাদের যে সহযোগিতা দিয়ে থাকে তাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলতে মারাত্মক হিমশিম খেতে হয়। এই ২ মাস যদি বিকল্প কোনো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হতো, তবে তার মতো দরিদ্র জেলেদের বৌ-বাচ্চা নিয়ে বেঁচে থাকা সহজ হতো।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জেলে জানান, সরকার প্রকৃত জেলেদের জন্য জেলে কার্ডের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সেখানে স্থানীয় জেলে নেতারা স্বজনপ্রীতি করছেন। তারা এমন লোককে ভিজিএফ কার্ড দিয়েছেন যে যাদের বংশের কেউ-ই জেলের কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেই।

এছাড়া তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, সরকার ভিজিএফ কার্ডের পাশাপাশি ছাগল পালনসহ অন্যান্য সুবিধা দিয়ে থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব সুবিধা প্রকৃত জেলেরা পান না। ভবিষ্যতে এসব বিষয় কর্তৃপক্ষকে ভালো করে খতিয়ে দেখার দাবি জানান তারা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App