×

মুক্তচিন্তা

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি দরকার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২১, ১২:২১ এএম

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে পূর্ণ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পথে বাংলাদেশ। ২০২৬ সালে এ উত্তরণ ঘটবে বাংলাদেশের। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) কর্তৃক দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সুপারিশ প্রাপ্ত হলো। গত শনিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আনন্দ সংবাদ জানান। বাংলাদেশের জন্য এই অর্জন অনেক মর্যাদার। এর ফলে নতুন অবয়বে সারাবিশ্বের সামনে অভ্যুদয় ঘটবে বাংলাদেশের। তবে উন্নয়নশীলে উত্তরণ ঘটার পর এ রাষ্ট্রের সামনে নতুন কিছু চ্যালেঞ্জও সৃষ্টি হবে। যার জন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি নেয়ার কথাও ভাবতে হবে আমাদের। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উন্নয়নশীল দেশের যাত্রাপথে বাংলাদেশকে অতিক্রম করতে হবে বহু বাধা, হারাতে হতে পারে কিছু সুবিধা। তবে মর্যাদার বিবেচনায় এটি তুচ্ছ। সরকারপ্রধান বলছেন, উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য সরকার এখন থেকেই পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমরা আশাবাদী হই। ১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে সিডিপির সব শর্ত পূরণ করে ২০১৮ সালে। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোনো দেশ পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ‚ড়ান্ত সুপারিশ পায়। সিডিপি তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করে অনেক এগিয়ে গেছে। এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। উদ্যোক্তারা পণ্যের বৈচিত্র্যকরণের পাশাপাশি কারখানা ও শ্রমিকের দক্ষতা বাড়াতে বিনিয়োগ করবেন। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নতুন বাজারে নতুন পণ্য রপ্তানির সুযোগ তৈরি করবেন। উত্তরণের সব পর্যায়েই কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে। এগুলোর মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। যেমনÑ শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশ সুবিধা থাকবে না, ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে মেধাস্বত্ব আইনের যে শিথিল প্রয়োগ সেটা থাকবে না, অভ্যন্তরীণ বাজারে রপ্তানি প্রণোদনা বা ভর্তুকিসহ বিভিন্ন মেধাস্বত্ব আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে যেসব নীতি-সহায়তা দেয়া আছে, সেগুলো থাকবে না। ফলে সেই সুবিধাগুলো উত্তরণের প্রস্তুতি পর্বে চেয়েছে বাংলাদেশ। সিডিপির বিধান অনুযায়ী, উত্তরণের সুপারিশ পাওয়ার পর একটি দেশ তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত প্রস্তুতিকাল ভোগ করতে পারে। করোনা ভাইরাস মহামারির বাস্তবতায় উত্তরণ প্রক্রিয়াকে টেকসই ও মসৃণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে সিডিপির কাছে প্রস্তুতির জন্য পাঁচ বছর সময় চাওয়া হয়। এখন উত্তরণের চ‚ড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ায় পাঁচ বছরের প্রস্তুতিকাল শেষে ২০২৬ সালে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে আনুষ্ঠানিক উত্তরণ ঘটবে। ওই বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এর চ‚ড়ান্ত স্বীকৃতি আসবে। এই সময়ে আমাদের লক্ষ্য হবে প্রবৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত করে, মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটিয়ে এবং অর্থনৈতিক নাজুকতা কাটিয়ে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আবিভর্‚ত হওয়া। সর্বোপরি সুশাসন প্রতিষ্ঠার দিকে নজর দিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App