×

শিক্ষা

ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর গ্যাঁড়াকলে মানবিকের শিক্ষার্থীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৯:০৯ এএম

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে এবার শিক্ষার্থীদের ওপর জিপিএর খড়্গ নেমে এসেছে। বিশেষ করে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা পড়েছেন গ্যাঁড়াকলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে সব বিভাগের পরীক্ষার্থীদের জন্য ভর্তির আবেদনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা (জিপিএ) বাড়ানো হয়েছে। ন্যূনতম জিপিএ অর্জন না করায় অনেক শিক্ষার্থীই এবার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না।

ঢাবির প্রকাশিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটে ভর্তির আবেদনের ন্যূনতম জিপিএ ৮ দশমিক ৫০ ধরা হয়েছে যা গতবছর ছিল ৮। একইভাবে বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটে আগের বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ৫০ বাড়িয়ে জিপিএ ৮ করা হয়েছে। সব বিভাগে আগের বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়লেও মানবিক বিভাগে পুরো ১ পয়েন্ট বাড়িয়ে ন্যূনতম জিপিএ ৭-এর স্থলে ৮ করা হয়েছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন মানবিকের শিক্ষার্থীরা।

ভর্তিতে ন্যূনতম যোগ্যতা বাড়ানোর বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেক হালিম ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের সামজিক বিজ্ঞান অনুষদ কোনো ন্যূনতম জিপিএ ঠিক করে না। সাধারণত অন্যান্য বিভাগ যে ন্যূনতম জিপিএ নির্ধারণ করে, সেটিই আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জন্য নির্ধারিত থাকে। তবে, এ বছর সব শিক্ষার্থীই এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। ফলে আগের জিপিএ বহাল থাকলে বিপুল পরিমাণ শিক্ষর্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু, এতো সংখ্যক শিক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সক্ষমতা ঢাবির নেই।

প্রায় একই ব্যাখ্যা দিয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এক পয়েন্ট বাড়ানোর প্রস্তাব করলেও আমরা শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় শূন্য দশমিক ৫ করেছি। এর বাইরে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। বিস্তারিত জানতে ‘ক’ ইউনিটের সমন্বয়ক ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যপক ড. ইমদাদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি। তবে, অধ্যাপক ইমাদুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগের জিপিএ বহাল রাখলে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। পরিবর্তিত একটি পরিস্থি’তিতে এবার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। শুধু জিপিএ নয়, পরীক্ষার মানবণ্টনসহ অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। আর এ বিষয়ে উপাচার্য আখতারুজ্জামান ভোরের কাগজকে বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে যা আছে তাই আমাদের চূড়ান্ত।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর তারা এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার ফল সমন্বয় করে এইচএসসির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতো বছর আগের এসব ফলাফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করায় অনেক শিক্ষার্থী তাদের কাক্সিক্ষত ফল লাভ করতে পারেননি। নানা কারণে অনেকেরই আগের পরীক্ষা খারাপ হতে পারে। তারা একটি সুযোগ পাওয়ার দাবি রাখে। এভাবে হঠাৎ করে একটি ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করার কোনো মানে হয় না। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আবেদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পূর্বের জিপিএ বহাল রাখার আহ্বান জানান তারা। পাশাপাশি গুচ্ছ পদ্ধতিতে প্রাথমিক বাছাই পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা। এ দাবিতে আজ রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন করার কথা রয়েছে তাদের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App