×

অর্থনীতি

এক টেবিলে আবাসন খাতের সব সেবা দিতেই বিটিআই ব্রোকারেজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৯:৩৬ পিএম

এক টেবিলে আবাসন খাতের সব সেবা দিতেই বিটিআই ব্রোকারেজ

পরিচালক আয়েশা সিদ্দিকা

স্বনামধন্য রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার কোম্পানি বিল্ডিং টেকনোলজি এন্ড আইডিয়াস লিমিটেড (বিটিআই)। বাংলাদেশের শীর্ষ দশটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মধ্যে একটি। যারা দেশে প্রথম স্মার্ট লিভিং কনসেপ্ট উদ্বোধন করে। ১৯৮৪ সালে স্থপতি আরশি হায়দার বিটিআই প্রতিষ্ঠা করেন। শুরু থেকে বিগত তিন দশক ধরেই রিয়েল এস্টেট সেক্টরে বিটিআই নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

বিটিআই বাংলাদেশের প্রথম রিয়েল এস্টেট কোম্পানি যারা কোয়ালিটি সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট অনুসরণ করার কারণে ‘আইএসও ৯০০১’ কর্তৃক আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি রিহ্যাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

বিটিআইয়ের অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘বিটিআই ব্রোকারেজ’। আবসান খাতে হাতেগোনা যে কয়টি ব্রোকারেজ রয়েছে বিটিআই ব্রোকারেজ তাদের মধ্যে প্রথম অবস্থানে। আর এ প্রতিষ্ঠানটিকে সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্র্যান্ড এন্ড কমিউনিকেশন্সের নির্বাহী পরিচালক আয়েশা সিদ্দিকা দীর্ঘ ২৬ বছর কর্মজীবনের পনের বছর ধরেই রিয়েল এস্টেট মার্কিটিং এ আছেন। আয়েশা সিদ্দিকার মতে, এক ছাতার নিচে সব সেবা দিতেই বিটিআই ব্রোকারেজের সৃষ্টি।

ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ব্রোকারেজ তৈরির গুরুত্ব ও এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেছেন। বিস্তারিত জানাচ্ছেন মরিয়ম সেঁজুতি- ভোরের কাগজ : বিটিআই ব্রোকারেজ কেন তৈরি করা হয়েছে। এর কাজ কী? আয়েশা সিদ্দিকা : বিটিআই দীর্ঘ চার দশক ধরে আবাসন খাতে ব্যবসা করছে। সুতরাং দীর্ঘদিন আগে যে ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছিল তার এখন অবশ্যই একটা পরিবর্তন প্রয়োজন। হয়তো গত একযুগ আগেই ওই ফ্ল্যাটের গ্রাহক চিন্তা করেছেন ফ্ল্যাটটিকে বদলানোর। আবার অনেক সময় দেখা যায়, কোন সিঙ্গেল পরিবার হয়তো ছোট ফ্ল্যাট কিনেছিল। কিন্তু এখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার চাহিদা বেড়েছে। সুতরাং ছোট ফ্ল্যাট বিক্রি করে অথবা ভাড়া দিয়ে একটি বড় ফ্ল্যাট কিনতে চান।

তার সেই ছোট ফ্ল্যাট বিক্রি অথবা ভাড়া দেয়ার জন্য একটি প্লাটফরম দরকার। বিটিআই এর কিছু গ্রাহক রয়েছেন যারা বিটিআইয়ের উপরে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। আস্থার জায়গা থেকে তারা আমাদের কাছে আসেন তাদের এসব ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য। আবার দেখা যায়, একজন ল্যান্ড ওনার ১০টি ফ্ল্যাট পেলেন। তাদের তো ফ্ল্যাট বিক্রির অভিজ্ঞতা নেই।

আবার তার যদি কোনো ভাইবোন না থাকে বা থাকলেও কম- সেক্ষেত্রেও তারা আমাদের কাছেই আসেন। আগে আমরা এসব ফ্ল্যাট কিনে নিয়ে বিক্রি করতাম। তাতেও দেখা গেছে, একটা দীর্ঘ সময় ধরে এই টাকাটা আটকে থাকে। শুধু ফ্ল্যাট কেনাবেচাই না, অনেকের হয়তো জমির কাগজপত্রে সমস্যা আছে, কারো হয়তো রেজিস্ট্রেশন দরকার। এসব বিষয় নিয়ে সমাধান করতে গিয়ে আমাদের কাছে প্রতিনিয়ত চাহিদা বাড়তে থাকল।

রিয়েল এস্টেট মানে শুধু কেনাবেচা না, বাইরের দেশেও এ পদ্ধতি প্রচলিত আছে। নানা রিসার্চ করে এমন পরিকল্পনা থেকেই আমরা মূলত ব্রোকারেজ সার্ভিস চালু করেছি। ক্রেতার চাহিদা ও সাধ্যের মধ্যে যে সংযোগ ঘটানো তা রেগুলার ডেভেলপার অনেক সময়ই করতে পারে না। কিন্তু বিটিআই ব্রোকারেজ এ তা সম্ভব। বাজারে এ ধরনের প্রাকটিস আগেও ছিল। আমাদের সমসাময়িক এবং আগে-পরের অনেক কোম্পানিই এ ধরনের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এত প্রতিষ্ঠান থাকতে আমরা কেন এ প্লাটফর্মে এলাম। এর কারণ হচ্ছে, ইতোমধ্যে আমাদের বিটিআইয়ের ছয় হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছেন যারা আমাদের বিশ্বাস করেন। এ ছয় হাজারের মধ্যে অন্তত তিন হাজার গ্রাহকও যদি আমাদের এ প্লাটফর্মে আসেন তাহলে আমরা যেন সেই সার্ভিস দিতে পারি। এ চিন্তাধারা থেকেই আমরা ২০১৪-১৫ সালে খুবই কম পরিসরে ব্রোকারেজ ব্যবসা শুরু করেছিলাম।

তখনো এ বিষয়ে আলাদা ডিপার্টমেন্ট তৈরি হয়নি। এরপরে প্রয়োজনের তাগিদে এ সার্ভিসটাকে আলাদা করা হলো। সেই থেকেই ‘বিটিআই ব্রোকারেজ’ সার্ভিসের শুরু। এক কথায় বলতে গেলে আবাসন খাতের ছাতা হচ্ছে ব্রোকারেজ। আমরা বলি, ‘অ্যা ট্রাস্টেড প্ল্যাটফর্ম ফর হ্যাসেল ফ্রি সার্ভিস’।

ভোরের কাগজ : বিটিআই ব্রোকারেজ কোন কোন ধরনের সেবা দিয়ে থাকে? আয়েশা সিদ্দিকা : ব্রোকারেজ সার্ভিসের প্রথম দিকে আমরা পুরনো ফ্ল্যাটগুলো কিনে নিতাম। এরপরে গ্রাহক দেখে বিক্রি করতাম। কিন্তু তাতে আমাদের অনেক মূলধন আটকে যেত। বহির্বিশ্ব থেকে ধারণ নিয়ে আমরা আগ্রহী গ্রাহকের সঙ্গে একটা সমঝোতায় এলাম যে, তার প্রপার্টিকে আমরা প্রমোট করবো, বিক্রি করব। এর পরিবর্তে তিনি আমাদের একটা সার্ভিস চার্জ দিবেন।

ব্রোকারেজের মাধ্যমে আমরা যে কোনো রেসিডেনসিয়াল ও কমার্শিয়াল স্পেস বিক্রি ও বাসাভাড়া দিয়ে থাকি। এ ছাড়াও রেজিস্ট্রেশন, মিউটেশনসহ যে কোনো লজিস্টিক সাপোর্ট ইন্টেরিয়র সার্ভিস, প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস এবং হোম শিফটিং সাপোর্ট দিয়ে থাকি। ব্রোকারেজ শুধু বিটিআই নিয়েই কাজ করে না, পাশাপাশি যে কোনো ইনডিভিজুয়াল প্রপার্টি ও অন্যান্য ডেভেলপারের প্রপার্টি নিয়েও কাজ করে। সেই হিসেবে সবাই আমাদের গ্রাহক।

ভোরের কাগজ : গ্রাহক আপনাদের কাছে কেন আসবে?

আয়েশা সিদ্দিকা : আমি মনে করি, বিটিআইকে যারা চিনে ও জানে, অর্থাৎ বিটিআইয়ের সুনামের জন্যই বিটিআই ব্রোকারেজে মানুষ সুবিধা নিতে আসবে। কারণ বিটিআই ৪ দশকের যেসব সুনাম অর্জন করেছে, যেমন- বিটিআই কথা রাখে, সঠিক সময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করে, বিটিআই টাকা নিয়ে ঝামেলা করে না। বিটিআইয়ের সেই আস্থার জায়গা আমরা ব্রোকারেজেও ধরে রেখেছি। ভোরের কাগজ : বিটিআই যে সুনাম অর্জন করেছে, বিটিআই ব্রোকারেজ কী ততটাই সফলতা পেয়েছে?

আয়েশা সিদ্দিকা : আমি মনে করি, বিটিআইয়ের ধারাবাহিকতায় বিটিআই ব্রোকারেজও তাদের আস্থার জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। কারণ আমরা সবসময় যাচাই-বাছাই করে প্রপার্টি নেই।

একটা প্রপার্টি নেয়ার আগে আমরা সেই এলাকার মার্কেট সার্ভে করি। ওই প্রপার্টি অবস্থান, কত বছরের পুরনো, কাগজপত্র সঠিক কিনা, ওই এলাকার নতুন-পুরনো ফ্ল্যাটের দাম কত- এসব তথ্য নেয়ার পরেই আমরা একটা দাম নির্ধারণ করি এবং আমরা সেই দামেই বিক্রি করে থাকি। এ ছাড়াও আমরা একই সময়ে বিক্রেতাকে তার টাকা এবং ক্রেতাকে তার প্রপার্টি হস্তান্তর করি। বিটিআইয়ের মতো বিটিআই ব্রোকারেজেও আমরা মানি রিসিট ছাড়া কোনো অর্থ নেই না।

ভোরের কাগজ : এখানে কোন শ্রেণির গ্রাহক বেশি আসে?

আয়েশা সিদ্দিকা : বিটিআই ব্রোকারেজে সাধারণত মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন বেশি আসেন। তবে ১ কোটি টাকার মধ্যের ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি থাকে। আমরা সর্বস্তরের লোকদের জন্যই বাসস্থানের ব্যবস্থা করছি।

ভোরের কাগজ : বিটিআই ব্রোকারেজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? আয়েশা সিদ্দিকা : আমাদের লক্ষ্য এবং আমরা বিশ্বাস করি, এক সময় রিয়েল এস্টেট এর সমস্ত কেনাবেচা ও ভাড়া হবে ব্রোকারেজের মাধ্যমে। তাই আমরা বলতেই পারি, একদিন সমস্ত প্রপার্টি বিটিআই ব্রোকারেজের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। ব্রোকারেজ টিকে থাকবে কারণ আমরা অনেক বেশি বিশ্বস্ত, অনেক বেশি স্বচ্ছ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App