×

শিক্ষা

জাবি হলে বাড়ছে শিক্ষার্থী, প্রশাসনের হুমকি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৯:২৪ এএম

জাবি হলে বাড়ছে শিক্ষার্থী, প্রশাসনের হুমকি

ফাইল ছবি

জাবি হলে বাড়ছে শিক্ষার্থী, প্রশাসনের হুমকি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি হলে ফিরে এসেছেন চার শতাধিক শিক্ষার্থী, ক্যাম্পাসে যানবাহনও চলতে শুরু করেছে। দুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে নিরাপত্তার দাবিতে শনিবার দিনভর বিক্ষোভ দেখিয়ে তালা ভেঙে হলে ঢুকে পড়েন শিক্ষার্থীরা। রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আরও অনেকে।

দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেছেন শিক্ষার্থীরা। যার মধ্যে ক্যাম্পাস ও হল পুরোপুরি খুলে দেওয়ার দাবিও রয়েছে। এদিকে সরকারিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা হল খোলার কোনো ঘোষণা না আসায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে সোমবারের মধ্যে হল ছাড়তে বলেছে।

দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও গতবছর ১৭ মার্চ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসে দর্শনার্থী প্রবেশ এবং সব ধরনের অনুষ্ঠান ও জমায়েত নিষিদ্ধ' করে কর্তৃপক্ষ।

হল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ বাড়ি ফিরে গেলেও তাদের একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের গেরুয়া, আমবাগান, ইসলামনগরসহ বিভিন্ন গ্রামে বাসা ভাড়া নিয়ে এবং মেসে থাকতে শুরু করেন। এছাড়া জুলাই থেকে অনলাইনে ক্লাসও শুরু হয়।

রোববার দুপুরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হল- হামলার সঙ্গে জড়িতদের নামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা করা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা এখনও গেরুয়া এলাকায় অবস্থান করছেন, তাদের পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনা, হল খুলে দিয়ে সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, হামলার সময় যারা আহত হয়েছেন, তাদের পাশাপাশি যারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, ক্যাম্পাস ও আশেপাশের সকল শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নেওয়া এবং ক্যাম্পাসে ‘অস্থিতিশীলতা তৈরির দায়ভার’ বহন করা।

এর মধ্যে একটি দাবি ইতোমধ্যে পূরণ করেছে প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় রোববার সন্ধ্যায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে যে হিসাব পাওয়া গেছে, তাতে ইতোমধ্যে চারশর বেশি ছাত্র ছেলেদের আটটি হলে উঠে পড়েছেন। রোববারও অনেকে উঠেছেন। ক্যাম্পাসের রাস্তায় রিকশা ও অটোরিকশা চলাচলও শুরু হয়েছে। তবে হলগুলোতে ক্যান্টিন বা ডাইনিং চালু না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বাইরের খাবারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

হলের একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থী গতকাল রাতে হলে ছিলাম। আজকেও অনেকে আসছে। ডাইনিং-ক্যান্টিন একটাও চালু করা হয়নি। তবে সিনিয়র ভাইয়েরা চেষ্টা করছেন কীভাবে খাবার ম্যানেজ করা যায়। আপাতত সবাই বাইরে খাচ্ছি। যারা এখনও বাড়িতে আছে, আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ করছি যেন হলে চলে আসে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নিরাপত্তা কর্মী মো. ইউনুস বলেন, পঞ্চাশজনের মত শিক্ষার্থী শনিবার রাতে হলে ছিল। আজকেও প্রায় ২০ জন আসছে। এখন পর্যন্ত হলের ডাইনিং-ক্যান্টিন খোলা হয়নি। তবে হলের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তারা পাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বিকালে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসনের মধ্য দিয়ে চলে ঠিকই, তবে এই মহামারিতে একটা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রের বিপরীতে যেতে পারে না।

আমাদের এখন নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই। শিক্ষার্থীরা হলে থাকবে কী থাকবে না সে ব্যাপারে আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। হয়তো শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানা যাবে। সে আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App