মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজ বন্ধের পর এবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের পেজও বন্ধ করে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক মাধ্যমটির নীতিমালাবিষয়ক পরিচালক রাফায়েল ফ্রাঙ্কেল এ তথ্য জানান। খবর রয়টার্সের।
এমআরটিভি নামের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলটি রোববার অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে। চ্যানেলটির খবরে বলা হয়, সংঘাত মানুষের জীবন হুমকির মুখে ফেলবে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর সোমবার সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়
ফেসবুকের নীতিমালাবিষয়ক পরিচালক রাফায়েল ফ্রাঙ্কেল বলেছেন, ‘এমআরটিভি আমাদের বৈশ্বিক নীতিমালা অনুযায়ী সহিংসতা ও উসকানি রোধের নীতিমালাসহ কমিউনিটির মানদণ্ড বারবার লঙ্ঘন করছিল। তাই এমআরটিভির ও এমআরটিভির লাইভ পেজ ফেসবুক থেকে অপসারণ করেছি।’
গত নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। আটক করা হয় এনএলডির নেতা অং সান সু চিসহ দলের শীর্ষ নেতাদের। সেই থেকে রাজপথে সেনাশাসন বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। শান্তিপূর্ণ ওই বিক্ষোভ দমাতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ও বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটছে। দমন-পীড়ন এবং নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিও জান্তা আন্দোলন ঠেকাতে পারছে না।
এ পরিস্থিতিতে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার আশঙ্কায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘তাতমাদো ট্রু নিউজ ইনফরমেশন টিম’ নামের একটি ফেসবুক পেজ অপসারণ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ফেসবুকের এক মুখপাত্র বলেন, ভুয়া ও মনগড়া তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে যাতে বিভ্রান্ত করতে না পারে, সে জন্যই পেজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সোমাবার দেশটিতে অভ্যুত্থানের পর গত তিন সপ্তাহের মধ্যে সবেচেয়ে বড় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। রাস্তায় বিক্ষোভ বানচাল করতে সেনাবাহিনীও অবস্থান নেয়। কিন্তু পুলিশের গুলি, সেনা দম নিপীড়নের তোয়াক্কা করেনি মিয়ানমারের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণ।
এদিন আন্দোলনকারীরা ধর্মঘটের ডাক দেয়। এতে সাড়া দিয়ে রাজপথে নেমে আসে লাখো জনতা। তারা সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানায় দ্রুত দেশের শাসনক্ষমতা জনগণের হাতে ছেড়ে দিতে। তারা বিপুল ভোটে জয়ী অং সান সু চি ও তার সরকারের নেতাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানায়। দেশটির ব্যাবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখে রাজপথে যোগ দেন। সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও অফিস না করে নেমে আসেন বিক্ষোভরত জনগণের কাতারে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।