×

জাতীয়

পিছু হটছে প্রাণঘাতী করোনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৮:৪০ এএম

বিশ্বের দেশে দেশে টিকাদান চালু

দেশে দেশে করোনার দাপট দৃশ্যত কমতে শুরু করেছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক ব্যবহার ও সর্বশেষ, করোনার টিকা প্রয়োগের ফল পেতে শুরু করেছে বিশ্ব। বছরখানেক ‘শীতনিদ্রা’ কাটিয়ে আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠছে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিশ্ব। মহামারি প্রতিরোধে অর্ধ ডজনের বেশি অনুমোদিত করোনাটিকার গণপ্রয়োগ শুরু হয়েছে প্রায় আড়াই মাস হলো। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনটির দাপট একাধিক দেশে দৃশ্যমান থাকার পরও গত কয়েক সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে শনাক্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ১৬ শতাংশের বেশি কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকাদানের সুফল দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি, মৌসুমি প্রভাবে শক্তি হারাচ্ছে ভাইরাস। তবে ভাইরাসের নতুন কয়েকটি ধরনের ‘অনিশ্চিত’ গতিবিধি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে এখনো। পাশাপাশি, করোনার স্বাস্থ্যগত আচরণবিধি অবহেলার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে বলেও সতর্ক করেন তারা। বিশ^জুড়েই স্কুল-কলেজ খুলে দেয়াসহ সামাজিক বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

করোনা মহামারির আঘাতে অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ব্রিটেনে মহামারির বিস্তার গত কয়েক মাসে কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। ইতোমধ্যেই সেদেশে প্রায় দেড় কোটি লোকের প্রথম ডোজের টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে। তাদের পরিকল্পনা, যত বেশি সম্ভব মানুষকে যত দ্রুত সম্ভব টিকার অন্তত প্রথম ডোজটি দিয়ে দেয়া। বিগত কয়েক সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যর সংখ্যা কমে আসার প্রবণতা দেখা গেছে ভারতেও। অবশ্য দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করে গত বছর সেপ্টেম্বর থেকেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকার প্রথম ডোজে অন্তত তিন মাসের জন্য কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে ৭৫ শতাংশ সুরক্ষা নিশ্চিত সম্ভব। দ্বিতীয় ডোজটি টিকাভেদে ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের ব্যবধানে নিতে হবে। ব্রিটিশ গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ ইতোমধ্যেই একবার কোভিড পজিটিভ হয়েছেন, তাদের অন্তত ৯০ শতাংশের শরীরে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে ‘এন্টিবডি’ তৈরি হয়ে গেছে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসেবে, গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত করোনাতাণ্ডবে ১১ কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এ ভাইরাসে। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৪ লাখ ৫৪ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করা এ সংস্থাটির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিগত মধ্য জানুয়ারির পর থেকেই সপ্তাহের গড় মৃত্যু কমছে বিশ্বজুড়েই। সূচকের রেখাটি টানা নেমে এসেছে নিচের দিকে। তবে এই করোনাযুদ্ধে এখনই আশাবাদী হয়ে ওঠার মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। চলমান বিপর্যয়ের ধাক্কাতেই আগামী সাড়ে তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ তিরিশ হাজার মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন তারা। ৫ লাখ ৫ হাজার মানুষ ইতোমধ্যেই মারা গেছেন দেশটিতে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যে গত ডিসেম্বরে টিকাদান শুরু হওয়া দেশটির দেড় কোটি লোক টিকার দুটি ডোজই নিয়েছেন ইতোমধ্যেই। আরো চার কোটি লোক নিয়েছেন টিকার প্রথম ডোজ।

অন্যদিকে, এ মুহূর্তের বড় সংকট হয়ে উঠেছে, বিশ^জুড়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকা উৎপাদন ও সেগুলোর সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার প্রশ্নটি। তুলনামূলক কম জনসংখ্যাবিশিষ্ট ধনী দেশগুলো ইতোমধ্যেই টিকার চালানের বড় অংশ নিজেদের দখলে নিয়ে নিলেও অনেক দেশ রয়েছে, যেখানে টিকার একটি ডোজও পৌঁছানো সম্ভব হয়নি এখনো। কীভাবে এ সংকট আশু কাটিয়ে ওঠা যায়, আপাতত তা নিয়ে কাজ করছে জাতিসংঘসহ বিশে^র শীর্ষ মহল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App