×

বিশেষ সংখ্যা

দাওয়াল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৮:৪৭ পিএম

দাওয়াল
বুঝমান হবার পর থেকে হাফিজ জানে, বছরের এক বিশেষ সময়ে, যখন ধান কাটার মৌসুম আসে, খুলনা ও বরিশালে ক্ষেত থেকে ধান তোলার জন্য দল বেঁধে দিনমজুর যায় ফরিদপুর এবং ঢাকা থেকে। ওরা ধান কেটে গৃহস্থের ঘরে উঠিয়ে দেয়। শ্রমের বিনিময়ে কর্তিত ধানের একটা অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে পায় শ্রমিকরা। সবাই ওদের ‘দাওয়াল’ নামে চেনে। হাজার হাজার মজুর যায় নৌকায় চড়ে। ফেরার সময় নিজেদের অংশের ধান নিয়ে আবার নৌকায় ফিরে আসে। দু’মাসের জন্য পরিবার-পরিজন আর ঘরবাড়ি ছেড়ে যায় ওরা বাঁচার প্রয়োজনে। হাফিজ আগে কোনোদিন দাওয়াল হয়ে ধান কাটতে যায়নি ভিন এলাকায়। এবারই প্রথম। বেশ কাটছিলো হাফিজের দিন। গত বছর রেশমিকে বিয়ে করার পর হঠাৎ করেই যেনো দায়িত্ব বেড়ে গেছে তার। নিজের বিয়ে করা স্ত্রীর সাধ-আহ্লাদ পূরণ করতে মা’র কাছে হাত পাততে লজ্জা পাচ্ছিলো হাফিজ; তার ওপর বাবা হঠাৎ অসুস্থ, শয্যাশায়ী হয়ে পড়লে সংসারে চরম অনটন নেমে আসে। বড় ভাইয়ের আয় সামান্যই, সে আয়ে বাবার বড় সংসার চলে না। রমজান হাফিজের বন্ধু, বেশ কয়েক বছর ধান কাটতে গেছে ‘দাওয়াল’ হয়ে। রমজানের পরামর্শেই হাফিজ এবার দাওয়াল হয়ে বরিশাল যাত্রা করলো নৌকায়। রেশমি প্রথম আপত্তি করলেও, সংসারের বাস্তবতা মেনে রাজি হলো। যাত্রার আগে রমজানের পরামর্শে মহাজনের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে সংসার খরচের জন্য মা’র হাতে আর হাত খরচের জন্য রেশমির হাতে কিছু টাকা দিয়ে গেলো। নৌকায় বিশজন দাওয়াল হাফিজরা, সবাই মিলে মহাজনের কাছ থেকে নৌকা নিয়েছে, শর্ত হলো ফিরে এসে নিজেদের ধানের একটা অংশ নৌকা ভাড়া হিসেবে মহাজনকে দেবে। এসব কোনো কাজেই হাফিজের সামান্য ভ‚মিকা নেই, সে বড্ড আনাড়ি, সবই করেছে রমজানের পরামর্শে। সচ্ছন্দেই ওরা বরিশাল পৌঁছালো। প্রায় দু’মাস ধরে শ্রম দিয়ে যে ধান ওরা পেলো, তাতে সবাই খুশি। দু’চোখে স্বপ্ন নিয়ে ওদের নৌকা ভাসালো ফরিদপুরের দিকে। নৌকা এগিয়ে যাচ্ছে বাড়ির দিকে; হাফিজের চোখে বুভুক্ষু মা-বোন-পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাবা-ভাই ও রেশমির মুখ। সবাই পথ চেয়ে আছে, আর কোনো মতে কষ্টে বেঁচে আছে; অপেক্ষায় আছে, কখন তাদের সন্তান-স্বামী-ভাই ফিরে আসবে ধান নিয়ে; পেট ভরে ক’দিন ভাত খাবে এই আশায়। হঠাৎ ওদের নৌকার পথ রোধ করা হলো, ‘ধান নিতে পারবে না, সরকারের হুকুম! ধান জমা দিয়ে যেতে হবে, নতুবা নৌকা সমেত আটক ও বাজেয়াপ্ত করা হবে!’ মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো হঠাৎ! বিনা মেঘে বজ্রপাত হলো! কণ্ঠে কণ্ঠে হাহাকার উচ্চারিত হলো। সবার সম্মিলিত অশ্রু আর কাকুতি-মিনতিতে কিছুই হলো না। শেষ পর্যন্ত সমস্ত ধান নামিয়ে রেখে একটা কাঁচা রসিদ ধরিয়ে দিয়ে দাওয়ালদের ছেড়ে দেওয়া হলো। ২. ভগ্নহৃদয় নিয়ে হাফিজ আর তার সহকর্মীরা বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বাড়ির দিকে যাত্রা করলো নৌকায়। একটুক্ষণের মধ্যে নদীতীরে দেবদূত হয়ে উপস্থিত হলেন দীর্ঘদেহী এক যুবক। হাফিজ তাকে চেনে না। তীর থেকে যুবক তাদের আহ্বান করলেন। নৌকা তীরে ভিড়ছে, মধ্যবয়সী একজন মজুর চিৎকার করে উঠলো, ‘খোকা ভাই! আপনে কুনতে শুনলেন আমগর দুর্দশার খবর?’ নৌকার সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করছে, ‘কে এই খোকা ভাই?’ মধ্যবয়সী লোকটি আবেগে কাঁপছে থরথর করে, ‘আল্লাহ পাঠাইছে আমগরে উদ্ধারের জন্য তাঁরে। শেখের বেটা শেখ মুজিব! আমগর মতো দুঃখী মানুষের নেতা! তুমগর কারুরই মনে নাই টুঙ্গীপাড়ার শেখ মুজিবুর রহমানের কথা?’ একটু আগেও যারা চিনতে পারছিলো না তাঁকে, এবার অনেকেই চিনতে পারলো শেখ মুজিবকে। এই তো গেল বছর স্কুলের মাঠে ভাষণ দিয়েছিলেন স্কুলের মাঠে! সবার মাথায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন! আগে পাকিস্তানের জন্য ভোট চাইছিলেন, তারপরে মায়ের ভাষায় কথা বলার দাবিতে! মা কে মা বলে ডাকা যাবে না! পশ্চিমাদের এ কেমন আবদার! গর্জে উঠেছিলো সেদিন স্কুলের মাঠ! ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই!’ সেই শেখ মুজিব! মধ্যবয়সী লোকটি তখন আবেগভরা কণ্ঠে বলছে শেখ মুজিবের কথা, ‘তুমরা জানো না আমাদের খোকা ভাই সেই ছোটবেলা থেকে গরিব-দুঃখী মানুষের জন্য কাজ করেন; এই যে দেখো আমরা এইখানে বিপদে পড়ছি, আমরা কেউ তারে ডাইকা আনি নাই, কিন্তু কতদূর থিকা ছুইটা আসছেন খোকা ভাই! যখন উনি ইস্কুলে পড়তেন, তখন একবার রাস্তায় একজন বৃদ্ধকে শীতে কাঁপতে দেখে নিজের গায়ের চাদর খুলে দিছিলেন। একবার দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিছিলো, গরিবের ঘরে খাদ্য নাইÑ হাতে পয়সা নাই! খোকা ভাই নিজের বাড়ির উগারের ডুলি ভাইঙ্গা গরিব ক্ষুধার্ত মানুষের হাতে তুলে দিলেন ধান।’ নৌকা পাড়ে ভিড়লো; দাওয়ালরা সবাই শেখ মুজিবকে ঘিরে দাঁড়ালো, শেখ মুজিব কিছুটা বক্তৃতার ঢংয়ে কথা বললেন, ‘ভায়েরা আমার! সব খবরই আমি পেয়েছি! খবর পেয়েই আমি ছুটে এসেছি এখানে। মেহনতী মানুষের জীবন-জীবিকা যেখানে বিপন্ন সেখানে সরকারের এ যথেচ্ছচার মেনে নেয়া যায় না। ধান কেটে যারা গৃহস্থের গোলা ভরলো, তাদের শ্রম-ঘামের মূল্য কিছুতেই আমরা কেড়ে নিতে দেবো না। আমাদের ভোটে পাকিস্তান হলো, আর আজ আমরাই বঞ্চিত হচ্ছি! আমাদের মুখের ভাষা-মায়ের ভাষা তারা কেড়ে নিতে চায়! তোমরা হতোদ্যম হইও না। আমরা কাজ করেছি, ধান কেটেছি এবার আমরা শ্রমের মূল্য চাই! কেন আমাদের ধান কেড়ে নেওয়া হবে? বাড়িতে ক্ষুধার্ত পরিবার-পরিজন আমাদের অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছে। এ ঘটনা শুধু এখানেই নয়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় খেটে খাওয়া মানুষের মুখের অন্ন আজ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, কেন! আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই! আমরা থানায় যাবো, প্রয়োজনে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে দেখা করবো! আমি যাবো তোমাদের সাথে। তোমরা অন্তত তিনজন চলো আমার সাথে!’ শেখ মুজিবের বক্তব্যে হাফিজ উত্তেজিত, সে-ও যাবে খোকা ভাইয়ের সাথে। হাফিজসহ তিনজন গেলো খোকা ভাইয়ের সাথে থানায়। থানার বড়বাবু আগে থেকেই চিনতেন শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি তাঁকে সমীহ করেই কথা বললেন। বড়বাবু বললেন, ‘আমি বুঝতে পারছি দরিদ্র মানুষের কষ্ট; কিন্তু কী করবো বলুন! সরকারি নির্দেশ আমার তো পালন করতেই হয়! আমি তো অসহায়!’ শেখ মুজিব কিছুটা উত্তেজিত, বললেন, ‘এটা কেমন নির্দেশ বলুন! আমার মানুষ না খেয়ে কষ্ট করবে, অথচ তার পরিশ্রমের রোজগার কেড়ে নেওয়া হবে! খাদ্য মজুরদের ভিন্ন পথ কি নেই?’ বড়বাবু বললেন, ‘ওদের কি রসিদ দেয়া হয়নি?’ শেখ মুজিব হাফিজের হাত থেকে সাদা কাগজের কাঁচা রসিদটি নিয়ে বড়বাবুর সামনে তুলে ধরলেন, ‘এই দেখুন, সাদা কাগজে কাঁচা রসিদ! এই রসিদ দেখালে গোপালগঞ্জ গোডাউন থেকে কি ধান দেবে? সমস্যা কি এখানেই! শত শত জায়গায় ঘটেছে এই ঘটনা! আপনি জানেন, আমি খুলনায় গিয়েছিলাম। সেখানে ফরিদপুর জেলার দাওয়ালদের প্রায় দুইশত নৌকা আটক হয়েছে ধান সমেত। রাতে দাওয়ালরা ‘আল্লাহু আকবর’, ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ ধ্বনি দিয়ে যাচ্ছিলো ধান নিয়ে; পুলিশ বাহিনী লঞ্চ নিয়ে তাদের ধাওয়া করে বাধা দেয়, জোর করে নদীর পাড়ে এক মাঠে সমস্ত ধান নামিয়ে রাখে, যদিও সরকারি গুদামে সে ধান ওঠে নাই। বৃষ্টিতে সব ধান ভেসে গেছে। আমি খবর পেয়ে খুলনা গেলাম, তখনও অনেক নৌকা আটক রয়েছে ধানসহ। দাওয়ালদের নিয়ে সভা করে আমি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের বাড়িতে শোভাযাত্রা করে হাজির হলাম। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম চৌধুরী সাহেব আমার সাথে আলাপ করলেন এবং ওয়াদা করে বললেন, সরকারের কাছে টেলিগ্রাম করবেন। আমি নিজেও টেলিগ্রাম করেছি। ফল কী হবে জানি না।’ বড়বাবু কণ্ঠ নরম করে বললেন, ‘জানি না কীভাবে আপনাকে সাহায্য করবো! আমি বরং আপনার সাথে যেতে পারি। ওদের কাঁচা রসিদগুলো স্বাক্ষর দিয়ে-সিল দিয়ে কিছুটা পাকা করে দিতে পারি। তাতে হয়তো গোপালগঞ্জে গিয়ে ওদের ধান পেতে অসুবিধা হবে না। তাছাড়া আমি গোপালগঞ্জ সদর থানার বড়বাবুর কাছে একটা বার্তাও পাঠিয়ে দেবো।’ বড়বাবু নদীতীরে গিয়ে দাওয়ালদের কাঁচা রসিদে সিল-স্বাক্ষর দিয়ে পাকা করে দিলেন। দাওয়ালদের নৌকা ভাসলো গোপালগঞ্জের দিকে। ৩. ‘দাওয়াল’ জীবনের প্রতি হাফিজের আর কোনো আগ্রহ থাকলো না। থানা সদরের একটা দোকানে গোমস্তার কাজ পেলো হাফিজ। নিরন্নের সংসার একবেলা খেয়ে বুকে ঘষে চলছে। বছর পেরিয়ে গেলো দাওয়ালদের অনেকের জীবনেই পরিবর্তন এলো, গোপালগঞ্জ মহকুমার কয়েক হাজার লোক খুলনা, যশোর ও অন্যান্য জায়গায় রিকশা চালিয়ে এবং কুলির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করছে তখন। হাফিজ তার দুই মাসের দাওয়াল জীবনের স্মৃতি ভুলতে পারছে না। বড্ড রোমাঞ্চকর মনে হয়েছিলো তার; বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ, হাফিজের কাছে মহার্ঘ স্মৃতি হয়ে রইলো; এর মধ্যে একদিন খবর পেলো শেখ মুজিব আসছেন গোপালগঞ্জে জনসভা করতে; হাফিজ অপেক্ষা করলো শেখ মুজিবের সাথে দেখা করতে। জনসভা শেষে শেখ মুজিব যখন মঞ্চ থেকে নামছেন, হাফিজ গিয়ে তাঁর সামনে দাঁড়ালো। হাত তুলে নিঃশব্দ সালাম জানালো। শেখ মুজিব সামনে হাফিজকে দেখেই প্রশ্ন করলেন, ‘তুই হাফিজ না? কিরম আছিস তুই?’ এতোদিন পর মুজিব ভাই ওর নাম মনে রেখেছেন দেখে জীবনে হাফিজ দ্বিতীয়বার ধাক্কা খেলো। কোনো ভ‚মিকা না করে হাফিজ শেখ মুজিবের হাত ধরে বললো, ‘মিয়াভাই আমি আপনের সাথে থাকতে চাই।’ শেখ মুজিব কিছুটা অবাক, ‘আমার সাথে থেকে তুই কী করবি?’ হাফিজ হাত না ছেড়েই বললো, ‘আমি আপনের ফুটফরমাশ খাটবো, আপনে যা বলবেন তাই করবো! আমারে আপনের সাথে লইয়া যান মিয়াভাই, আমি আপনের খেদমত করতে চাই।’ শেখ মুজিব হাফিজের কথায় হাসলেন, ‘আমার সাথে থাকলে তোর সংসার কে চালাইবো? আমি তো গরিব মানুষ? এক কাজ কর, তুই থাক এখানেই, আমার পক্ষে কাজ করতে থাক; দেখি তোর জন্য আমি কী করতে পারি।’ চলে গেলেন শেখ মুজিব। হাফিজ বিস্ময় চোখে তাকিয়ে থাকলো শেখ মুজিবের চলে যাওয়া পথে। নিজেকে নিয়ে বেশি কিছু ভাববার যোগ্যতা রাখে না হাফিজ; তবু নিজেই একান্তে বসে নিজের কথা ভাবে। কী মন্ত্র আছে শেখ মুজিবের কথায়? কী জাদু আছে তাঁর চোখের ভাষায়? কেন হাফিজ সব ফেলে চলে যেতে চাইলো শেখ মুজিবের সাথে? বুঝতে পারে না হাফিজ; কিন্তু কিছুতেই চিন্তা থেকে মুছে ফেলতে পারে না শেখ মুজিব নাম! হাফিজ রয়ে গেলো গোপালগঞ্জে। শেখ মুজিবের নামে যা-কিছু শোনে তার সাথেই থাকে, এভাবেই হাফিজ কখন আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হয়ে গেলো, কেউ জানে না। শেখ মুজিব জেলে গেলে হাফিজ একা একা কাঁদে, মসজিদ-মাজারে শিরনি দেয়; নিজের দারিদ্র্যের কথা না ভেবে ফকির-মিসকিনদের খাওয়ার আয়োজন করে। হাফিজের কার্যকলাপে সবাই অবাক হয়, দু’চারজন মুখ টিপে হাসে। সত্তরের নির্বাচনে হাফিজ উদয়াস্ত খাটলো; ’৭১-এ যুদ্ধে চলে গেল কাউকে কিছু না জানিয়ে। দিন সপ্তাহ মাস কেটে গেল, সবাই ভাবলো, পাগলটা নিশ্চয়ই অপঘাতে মরেছে কোথাও! ১৯৭১-এর ডিসেম্বরের বিশ তারিখ হাফিজ কাঁধে একটা স্টেনগান নিয়ে বাড়িতে ফিরে এলো। ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুুক্তি পেয়ে দেশে ফিরলেন। হাফিজের সেদিন কী আনন্দ! অনেক্ষণ ধরে আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়লো। তারপর দশজন ফকির খাওয়ালো হাফিজ। বঙ্গবন্ধু যেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র জমা দিতে বললেন; পরদিনই হাফিজ থানায় গিয়ে অস্ত্র জমা দিয়ে এলো। অতঃপর কেমন নিশ্চুপ হয়ে গেলো সে। আবার একটা দোকানে গোমস্তার কাজ পেলো। হঠাৎ একদিন থানা থেকে একটা জিপ এসে দাঁড়ালো হাফিজের দোকানের সামনে, একজন দারোগা এসে প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি কি হাফিজ? দাওয়াল হাফিজ?’ হাফিজ মাথা নাড়লো; তুলে নিয়ে গেলো হাফিজকে থানার জিপ। হাফিজ জানতে চাইলো, কী অপরাধ তার? দারোগা সাহেব বললেন, ‘আমি তো বলতে পারবো না; বঙ্গবন্ধু আপনাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেছেন শুনেছি।’ হাফিজ আর কোনো কথা বললো না, চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসলো। সর্বত্র ছড়িয়ে গেলো, হাফিজকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে; দাওয়াল হাফিজ চললো মুজিব ভাইয়ের সাথে দেখা করতে ঢাকায়, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App