×

পুরনো খবর

ধর্ষণের প্রতিবেদন: ক্ষমা চাইলেন ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার এসপি-সার্জন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৫:৪৪ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ৭ বছরের এক মেয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১১ বছর বয়সী আরেক ছেলে শিশুর বিরুদ্ধে করা মামলায় নির্যাতনের শিকার শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষায় ভিন্ন প্রতিবেদন দেওয়ায় নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল এসপি-সার্জনসহ সংশ্লিষ্টরা। পরে সিভিল সার্জনসহ ৯ চিকিৎসক এবং এসপিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তলব আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই ১২ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার পর বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের অব্যাহতির আদেশ দেন। আদালতে ছেলে শিশুর জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. শাহপরান চৌধুরী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুল ইসলাম।

এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ৭ বছরের এক মেয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১১ বছর বয়সী আরেক ছেলে শিশুর বিরুদ্ধে করা মামলায় নির্যাতনের শিকার শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একাধিক চিকিৎসক ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদন দেওয়া এবং তদন্তে গাফিলতির জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট ৯ চিকিৎসক এবং এসপিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ডাক্তারদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশদের ক্ষেত্রে আইজিপিকে প্রধান করে পৃথক তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন এবং তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এছাড়া ধর্ষণ মামলার কার্যক্রম ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেন আদালত। ১১ বছর বয়সী শিশুর জামিন আবেদনের ওপর শুনানিতে এ বিষয়ে দাখিল করা নথিতে ধর্ষণ বিষয়ে ভিন্ন তথ্য বা অমিল পাওয়ায় গত ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট এসব আদেশ দেন।

ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিছুর রহমান, নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম আরিফুল হক, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. একরামুল রেজা, ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা বোর্ডের সদস্য ডা. ফাহমিদা আক্তার, ডা. তোফায়েল হক, ডা. ফরিদা ইয়াসমিন এবং নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ মো. শাহরিয়ার, ডা. তাসনিম তামান্না ও ডা. মো. শফিকুল ইসলাম।

২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার পিতা নাসিরনগর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৪ সেপ্টেম্বর তার ৭ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। মামলায় আসামি তার প্রতিবেশী, যার বয়স উল্লেখ করা হয় ১৫ বছর।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে পরদিন নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ৮ সেপ্টেম্বর শিশুটিকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ অবস্থায় ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একটি ডাক্তারি প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

এদিকে আসামি হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করলে গত ৩ নভেম্বর এর শুনানি হয়। সেদিন আসামির বয়স প্রমাণের জন্য তার জন্মসনদ দাখিল করা হয়। জন্মসনদ অনুযায়ী তার বয়স ছিল ১০ বছর। এ অবস্থায় হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে এক মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মামলার কেস ডকেট (সিডি) এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App