×

সম্পাদকীয়

যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ পাক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৯:২৪ পিএম

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ হাজার ১৫৫ জন সহকারী শিক্ষককে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি দেয়ার জন্য খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ৩০ নভেম্বর স্বাক্ষরিত খসড়া তালিকাটি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। তালিকা প্রকাশের পর থেকে নানা অনিয়মের কথা গণমাধ্যমে আসছে, যা দুঃখজনক। পদোন্নতির জটিলতা কেবল মাধ্যমিক শিক্ষকদের নয়, প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারসহ কলেজ পর্যায়ে নানা সমস্যা আছে। গতকাল ভোরের কাগজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাধ্যমিকে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকলেও কিছু শিক্ষককে পদোন্নতির তালিকায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পদোন্নতির ক্ষেত্রে কিছু শর্তকে আমলেই নেয়া হচ্ছে না। পদোন্নতি ইস্যুতে শিক্ষা প্রশাসনে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ টাকার ঘুষ লেনদেন হয়েছে জানিয়ে দুদকে অভিযোগ জমা পড়েছে। এতে করে যোগ্যরা পদোন্নতি থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কা করছেন। জানা গেছে, সরকারি মাধ্যমিকে সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষক পদোন্নতি পাবেন। কিন্তু নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে এরই মধ্যে পদোন্নতি দিতে মাউশি বাড়তি তালিকা করেছে। তালিকা তৈরিতে অনিয়মের কারণে শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ঝুলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীরা। সারাদেশে সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩৪৩টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সৃষ্টপদ রয়েছে মোট ১০ হাজার ৫৬৩টি। কিন্তু স্কুলগুলোতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৮ হাজার ৫৬৪ জন শিক্ষক। বাকি ১ হাজার ৯৯৯ জন শিক্ষকের পদই শূন্য রয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাহত হচ্ছে কাক্সিক্ষত শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষক সংকট, বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না থাকা, এক বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে অন্য বিষয়ে ক্লাস নেয়া, লাইব্রেরিয়ান সংকটসহ নানা সমস্যায় পর্যুদস্ত দেশের সরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলো। সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদা দেয়ার পর নিয়োগবিধি সংশোধনজনিত কারণে গত ২০১২ সাল থেকে সরকারি মাধ্যমিকে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে পাঠ্যক্রম পরিবর্তন হয়েছে। নতুন নতুন বিষয় পড়ানো হচ্ছে, অথচ সে জন্য নতুন নিয়োগ নেই! এতে জগাখিচুড়ি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর সরকারি স্কুলগুলোয় শূন্য পদ না থাকলেও গ্রামের স্কুলে শূন্য পদ তুলনামূলকভাবে বেশি। অবিলম্বে এ সংকটাবস্থা কাটাতে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি আমাদের দেশে শিক্ষক বাছাইয়ের প্রচলিত প্রক্রিয়া কতটা মানসম্মত তা ভেবে দেখা উচিত। শিক্ষক নিয়োগের প্রসঙ্গ এলেও নানা অনিয়মের বিষয়ও সামনে চলে আসে। আমরা চাই, মাধ্যমিকে যোগ্য শিক্ষকরা নিয়োগ পাক। শিক্ষক অযোগ্য হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীরা। সমাজের সর্বত্র তৈরি হবে গভীর ক্ষত, যা দেশ ও জাতির অকল্যাণ বয়ে আনবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App