উনিশ বছরের তরুণী দানানির মোবিন। তিনি পাকিস্তানের একজন সোশ্যাল মিডিয়া ''ইনফ্লুয়েন্সার''। টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে তাকে ফলো করেন হাজার হাজার অনুগামী। তার পোস্ট করা ছোট একটা ভিডিও ইন্টারনেটে ঝড় তুলে। ভারতে বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো ভিডিওটি লুফে নিয়ে বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করছে। দানানিরকে স্যালুট জানাচ্ছেন বলিউড তারকারাও। ভিডিওর একটি বাক্য এমন, পাওরি হোরাই হ্যায়। যার সহজ অর্থ, 'আমাদের পার্টি চলছে।

ইনস্টাগ্রামে তার সেই পোস্ট প্রায় পঞ্চাশ লাখ মানুষ দেখে ফেলেছেন, আর সেই সংখ্যাটাও রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কী ছিল মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের ছোট্ সেই ভিডিওতে, যা দানানির মোবিনকে এভাবে রাতারাতি সুপারস্টারে পরিণত করেছে? ৬ ফেব্রুয়ারি ইনস্টাগ্রামে দানানির পোস্ট করেছিলেন তার বন্ধুদের সঙ্গে গাড়িতে চেপে বেড়াতে যাওয়ার একটা ছোট্ট ভিডিও।

সেই ভিডিওতে বন্ধুদের দেখিয়ে বলতে শোনা যায়, ইয়ে হামারি কার হ্যায়, অওর ইয়ে হাম হ্যায়, অওর ইয়ে হামারি পাওরি হোরাই হ্যায়! অনুবাদ করলে যার অর্থ দাঁড়ায়, এইটা আমাদের গাড়ি, আর এই হল আমরা বন্ধুরা, আর এই আমাদের পার্টি চলছে।

ইনস্টাগ্রামে দানানির মোবিনের ভিডিও সাড়া ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই বলিউডের সঙ্গীতশিল্পী যশরাজ মুখাটে সেটিকে ব্যবহার করে একটি 'ম্যাশ-আপ' ভিডিও পোস্ট করেন। সেটিও রাতারাতি পৌঁছে যায় লাখ লাখ ভিউয়ারের কাছে।

বলিউডের পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী এরপর টুইট করেন, দেশ ভাগের সত্তর বছর পর একটা বাচ্চা মেয়ে ভারত আর পাকিস্তানকে এক সূত্রে গেঁথে ফেলল। গ্রেট জব দানানির আর যশরাজ!

ইতোমধ্যে বিবিসি উর্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দানানির বলেছেন, তার ওই ছোট্ট ভিডিওটা এতটা সাড়া ফেলবে সেটা তিনি কখনও কল্পনাও করেননি। আমরা বেড়াতে বেরিয়ে মজা করছিলাম, গান শুনছিলাম। হঠাৎ কী মনে হল, আমার ফোনটা বের করে ভিডিওটা বানালাম আর পোস্ট করলাম। বাকিটা তো, যাকে বলে, ইতিহাস।

ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া তাদের মোবাইল অ্যাপের বিজ্ঞাপন করে ফেলেছে এই ''পাওরি'' দিয়ে। অনলাইন স্ট্রিমিং সার্ভিস নেটফ্লিক্সও ''পাওরির'' জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে এতটুকুও দেরি করেনি। দানানির মোবিনের বলা কথাগুলোকেই একটু অদলবদল করে তারাও লঞ্চ করেছে নিজস্ব বিজ্ঞাপন।

মাত্র দিন দশেক আগেও ভারতে প্রায় কেউই যে পাকিস্তানি তরুণীর নাম পর্যন্ত জানতেন না। অথচ মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের ছোট একটা কথা এখন ভারতের ইন্টারনেটকে মাতিয়ে রেখেছে।