×

মুক্তচিন্তা

দ্রুত রায় কার্যকর করা হোক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:০১ পিএম

বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) পাঁচ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিজিৎ পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। আমরা চাই রায় দ্রুত কার্যকর হোক। দেশে লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের ওপর হামলার ঘটনা শুরু ২০০৪ সালে। ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও লেখক হুমায়ুন আজাদকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে ১২ আগস্ট তিনি মারা যান। ২০১৫ সাল ছিল বিভীষিকাময়। ওই বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি লেখক অভিজিৎ রায়কে টিএসসি এলাকায় কুপিয়ে হত্যার পর একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটে চাপাতি হামলায়। ওই বছর অন্তত ২২ জনকে হত্যা করা হয়। এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে নব্য জেএমবি, আনসার আল ইসলামসহ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের নাম আসে। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এই সদস্যদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল ব্লগার, লেখক, প্রকাশকদের হত্যা করে মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেয়া। মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে জখম করে অভিজিৎ রায়কে। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ২৭ ফেব্রুয়ারি অভিজিতের বাবা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অজয় রায় শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘদিন পর ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম। মামলায় ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জন সাক্ষ্য দেন। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা করেন ১৬ ফেব্রুয়ারি। আমরা আশা করব, অভিজিৎ হত্যাসহ সব ব্লগার হত্যার রায় যাতে দ্রুত নিষ্পন্ন হয় তার জন্য সচেষ্ট থাকবেন সংশ্লিষ্টরা। এর বাইরে ওই ঘটনায় যারা পরিকল্পনাকারী, সহায়তাকারী এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভ‚মিকা রেখেছে- এ রকম অনেককে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের দাবি। বর্তমান সরকার ধর্মীয় উগ্রপন্থাসহ সব রকম জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্র মতবাদের কোনো স্থান নেই। প্রকৃতপক্ষে জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের হাত ধরে দেশে ধর্মীয় রাজনীতি এবং জঙ্গিবাদের উদ্ভব ঘটে। যে কোনো মূল্যে এদের নির্মূল করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App