×

সারাদেশ

অক্ষত ইয়াবা সিন্ডিকেট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৯:১০ এএম

দুই বছরে ৪০ আত্মসমর্পণকারী জামিনে মুক্ত

গত পৌনে তিন বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ক্রসফায়ারে তিন শতাধিক মাদক কারবারীর মৃত্যুর পরও অক্ষত আছে কক্সবাজারের শক্তিশালী ইয়াবা সিন্ডিকেট। মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের সময় প্রাণ বাঁচাতে আত্মসমর্পণ করা ইয়াবা কারবারীদের অধিকাংশ জামিনে ছাড়া পাওয়ায় ফের জোরেশোরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এই সিন্ডিকেট। মাত্র দেড়-দুই বছর কারাবাস করে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন অন্তত ৪০ জন। এছাড়া পলাতক ইয়াবা ব্যবসায়ীরাও এলাকায় ফিরে এসেছেন।

এরপর থেকে সড়কপথের পাশাপাশি সমুদ্রপথেও বেড়েছে ইয়াবা পাচার। যার প্রমাণ, গত ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশের এক অভিযানেই ১৭ লাখ ৭৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার। এ সময় কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া এলাকার এক বাসায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবা বিক্রির এক কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকাও জব্দ করে পুলিশ।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণের সময় তারা তিন লাখ পিস ইয়াবা এবং ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের প্রত্যেককে অস্ত্র এবং মাদক আইনের দুইটি মামলায় আসামি করা হয়। গত বছরের ২০ জানুয়ারি দুই মামলায় তাদের সবার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয় আদালতে। এর মধ্যে একজন আসামি আটক অবস্থায় মারা যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিদের মধ্যে মাত্র ১৯ মাস কারাগারে থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্তি পান ৫ জন। পরের তিন মাসে মুক্তি পান আরো ১৫ জন। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে অন্তত ৪০ জন আসামি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী আব্দুল শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম, ফয়সল ইসলাম, আবদুল আমিন ও কক্সবাজারের শাহজাহান আনসারীও রয়েছেন।

টেকনাফ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর দাবি করেন, এখনো যারা কারাগারে আছে তাদের জামিনের তদবিরও চলছে। ইয়াবা সিন্ডিকেটের যারা কারাগারের বাইরে ছিল তারা একজোট হয়ে সবাইকে জামিনে মুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরা কারাগারে থাকলেও নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ঠিকই ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করেছে। এখন তারা বাইরে আসায় ইয়াবা ব্যবসা আরো বেড়ে গেছে।

কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন বলেন, আদালত থেকে জামিন পেলে প্রশাসনের করার কিছু নেই। তবে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন হতাশাব্যঞ্জক হওয়ায় আসামিরা সহজেই ছাড়া পায়। কোনো তদন্ত না করেই পুলিশ প্রতিবেদন দিয়েছে, এমন অসংখ্য মামলা আছে। তদন্ত নিখুঁত হলে এভাবে ছাড়া পেত না ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।

এদিকে ইয়ারা ব্যবসায়ীরা জমিন পাওয়ায় কক্সবাজার জেলা পুলিশকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তারা যাতে নতুন করে ইয়াবা ব্যবসায় জড়াতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে বলা হয় ওই সতর্ক বার্তায়।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, আত্মসমর্পণ করে আইনগত সুবিধা নিয়ে জামিন পেয়ে মাদক ব্যবসায় জড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, যে কারোর জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আদালত জামিন দিলে আমাদের কিছু করার নেই। তাদের তো কোনো শাস্তি হয়নি। মামলা যা আছে চলবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App