×

মুক্তচিন্তা

আস্থা ও সুশাসন দরকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৯:৪৪ পিএম

২০১০ সালের ধসের পর নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও দেশের পুঁজিবাজার কোনোভাবেই স্বাভাবিক হয়নি। উল্টো দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি ততই খারাপের দিকে যাচ্ছে। মূল্যসূচক কমছেই। সপ্তাহে একদিন উত্থান হয়, তো দুদিন পতন হয়। অব্যাহত পতনে পর্যুদস্ত বাজারে মূলধন হারিয়ে পুঁজিবাজার ছেড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। লাগাতার দরপতন ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, বিভিন্ন প্রভাবশালী সংস্থা, ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংককে চাপ দিয়ে শেয়ার বিক্রি বন্ধে বহু চেষ্টা করেছে। কিন্তু এতেও কোনো ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়নি। সপ্তাহের দুএকদিন উত্থান হলেও সার্বিকভাবে পতনের ধারা থেকে বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। গত চার সপ্তাহ ধরে এই অবস্থা চলছে। গত সপ্তাহে ১০ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এর ফলে ফের হতাশা বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। যা আমাদের জন্য উদ্বেগের। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৭১০ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৯ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছিল ৪ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। তার আগের দুই সপ্তাহে কমেছিল ৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা এবং ৯ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। এ হিসাবে টানা তিন সপ্তাহের পতনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ৩১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা বাজার মূলধন হারায়। যদিও এর আগে টানা সাত সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর বাজার মূলধন ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা বেড়েছিল। পুঁজিবাজার জাতীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। অথচ সরকারের উদাসীনতা, অব্যবস্থাপনা ও সীমাহীন অনিয়মের কারণেই বিভিন্ন সময় পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে এবং সে ধারা এখনো অব্যাহত আছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পাঁচ কারণে পুঁজিবাজারে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑ দুর্বল আইপিও, বিশৃঙ্খল আর্থিক বিবরণী, বিও অ্যাকাউন্টে স্বচ্ছতার অভাব, সেকেন্ডারি মার্কেটে সন্দেহজনক লেনদেন ও প্রশ্নবিদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে তারল্য প্রবাহ না বাড়লে টেকসই হবে না বাজার। তাদের মতে, কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়া বাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। বাজারের বড় সমস্যা হচ্ছে আস্থার সংকট, সুশাসনের অভাব ও অতিরিক্ত সরবরাহ। এগুলো সমাধানের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। আমরা আশা করব, শেয়ারবাজার অধিক সক্রিয় হবে, শক্তিশালী হবে বিনিয়োগকারীদের অর্থে- ব্যাংকের ঋণে নয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App