×

মুক্তচিন্তা

তদন্ত শেষ হবে কবে?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:১৪ পিএম

দীর্ঘ ৯ বছরেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শেষ না হওয়া এবং বিচার না হওয়া খুবই বেদনাদায়ক। গত ৩ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের দিন নির্ধারণ থাকলেও তা দেয়া হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সব মিলিয়ে ৭৮ দফায় আদালতের কাছ থেকে সময় নিয়েছে র‌্যাব। তারা বলছে, অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। গত ৯ বছরে এই মামলার তদন্তে দেড় শতাধিক ব্যক্তির জবাববন্দি নেয়া হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দীর্ঘ সময়ে তদন্তে অগ্রগতি না থাকায় দুটি পরিবারে বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ডের পর খুনি ধরতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আল্টিমেটাম, বিচার দাবিতে সাংবাদিক সমাজের আন্দোলনে কোনো ফল হয়নি। দীর্ঘ সময়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যময়তা দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিরাট ব্যর্থতার নজির বলা যায়। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ। ওই সময় বাসায় ছিল তাদের একমাত্র সন্তান ৫ বছর বয়সি মাহির সরওয়ার মেঘ। ঘটনাস্থলে গিয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার’ মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে। দুদিন পরে তৎকালীন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছিলেন, ‘প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে। সেই ৪৮ ঘণ্টার অগ্রগতি ৯ বছরেও জানা যায়নি। দেশের বিভিন্ন সংস্থা হয়ে মামলার তদন্ত ঘুরেছে সুদূর মার্কিন মুল্লুক পর্যন্ত। কবর থেকে লাশ তোলা শুধু নয়, তদন্তের সব শাখা-প্রশাখায় বিচরণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু ফল শূন্য। হয়নি দৃশ্যমান তদন্তের অগ্রগতি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা গেছে কিনা বা কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হতে পারেÑ এত বছর পরও এসব প্রশ্নের উত্তর মিলছে না কারো কাছে। এই হত্যার ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন ওই বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ ও আবু সাঈদ। রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমানকে ২০১২ সালের ১ অক্টোবর গ্রেপ্তারের পর দুই বছর কারাগারে থাকার পর ২০১৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর জামিন পান। যে বাড়িটিতে সাগর-রুনি খুন হন সেই বাড়ির দারোয়ান পলাশ রুদ্র পালও জামিনে বাইরে রয়েছেন। সাগর-রুনি হত্যারহস্য অমীমাংসিত রাখার কোনো সুযোগ নেই, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার অবশ্যই করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App