×

সারাদেশ

এমপিওভুক্ত কলেজের লেকচারার আবার ইউপি সচিবও

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:৪২ পিএম

এমপিওভুক্ত কলেজের লেকচারার আবার ইউপি সচিবও

একদিকে তিনি একটি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব অন্যদিকে একটি এমপিওভুক্ত কলেজের লেকচারার। একই সাথে দুইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই সরকারি বেতন তুলছেন। অত্যন্ত সুকৌশলে তিনি প্রায় দুই যুগ ধরে দুইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে এলেও তার দুই প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীরা টের পাননি বিষয়টি। সম্প্রতি হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে একটি জন্ম নিবন্ধন সনদের জালিয়াতির বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে হাটহাজারীর ইউএনও রুহুল আমিন আবিস্কার করেন সেখানকার ইউপি সচিব কানু কুমার নাথের একই সাথে দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরির বিষয়টি।

জানা যায়, হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কানু কুমার নাথ। গত প্রায় দুই যুগ ধরে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। সচিবের চাকরীর পাশাপাশি ২৬ বছর ধরে ফটিকছড়ি উপজেলার রামগড় এলাকার এমপিওভুক্ত হেঁয়াকো বনানী ডিগ্রি কলেজে শিক্ষকতা করেন। ১৯৯৪ সালে লেকচারার হিসেবে নিয়োগ পেলেও বর্তমানে বাংলা বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আছেন। সকালে কলেজে শিক্ষকতার পাশাপাশি বিকেলে করেন ইউপি সচিবের কাজ। পরিষদের জরুরী কাজগুলো সারতেন ক্যাজুয়াল স্টাফ বেলাল উদ্দীন কে দিয়ে। তাই তেমন মাথা ব্যাথা ছিলনা সচিবের প্রাত্যহিক দায়িত্ব নিয়ে।

মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বা সাবেক চেয়ারম্যানরা কেউই বুঝতে পারেননি তার এই কৌশল। সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে শততার আশ্রয় নিয়ে করেছেন দুই দিকে দুই সরকারি চাকরী। পরিষদ কর্তৃপক্ষ অবগত ছিলেন না কলেজের বিষয়টি আর কলেজ কর্তৃপক্ষ অবগত ছিলেননা ইউপি সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের ব্যাপারটি।

এদিকে কানু কুমার নাথ সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মাসে নিয়েছেন প্রায় ৭৫ হাজার টাকা সরকারি বেতন। আর এ তথ্য গোপন রাখতেই দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদের কোন জন্ম নিবন্ধন বা অন্যান্য সনদে স্বাক্ষর করতেন না তিনি। তার নিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের ক্যাজুয়াল স্টাফ বেলাল স্বাক্ষর করতেন সব রকমের সনদে।

হেয়াকো বনানী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ফারুকুর রহমান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘ ২৬ বছর যাবৎ কলেজে শিক্ষকতা করছেন কানু কুমার নাথ। অথচ উনি একটি পরিষদের সচিবের দায়িত্বেও আছেন যা আমরা কখনো টের পাইনি। বুধবার হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জানতে পারলাম বিষয়টি। উনি তথ্য গোপন করে কলেজে শিক্ষকতা করছেন। আমরা সত্যিই হতবাক তার এমন অনৈতিক কাজে। আমরা গতকালই তিন(৩) কার্য দিবসে জবাব চেয়ে শোকজ করেছি। তাকে না পেয়ে মিরসরাই উপজেলা তার নিজ বাড়ির ঠিকানায় রেজিঃ ডাকের মাধ্যমে চিটি পাঠিয়ে দিয়েছি। দ্রুত ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান অধ্যক্ষ ফারুকুর রহমান।

এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বলেন, কানু কুমার নাথ তথ্য গোপন রেখে একসাথে দুটি সরকারি চাকরি করছেন। পরিষদের বিষয়ে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের বরাবরে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। সচিবের পাশাপাশি এমপিওভুক্ত কলেজে শিক্ষকতার ব্যাপারে স্থানীয় সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে দেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App