×

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে সেনা ক্যু: বিক্ষোভে গুলিবিদ্ধ নারী, অবস্থা আশঙ্কাজনক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৪:২৯ পিএম

মিয়ানমারে সেনা ক্যু: বিক্ষোভে গুলিবিদ্ধ নারী, অবস্থা আশঙ্কাজনক

বুধবার সকালে মিয়ানমারের কায়াহ প্রদেশে কয়েক ডজন পুলিশও জান্তা বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেন

জান্তা বিরোধী বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের গুলি ও জলকামান ব্যবহার হলেও ভয় পাচ্ছে না মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রি সু কি'র সমর্থকরা। এতে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। তবে আন্দোলন যতো তীব্র হয়ে উঠছে, পুলিশও ততই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর জল কামান ব্যবহার করা হচ্ছে। এদিকে বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ফের রাজপথে নেমে এসেছে দেশটির হাজার হাজার মানুষ। এ দিন ভোরে সরকারি চাকরিজীবীদের একটি বড় উল্লেখযোগ্য অংশ রাজধানী নেপিদোতে সমবেত হয়। সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনেও হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করে। কায়াহ রাজ্যে পঞ্চাশের বেশি সংখ্যক পুলিশ সেনা সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে। জান্তা বিরোধী এবং সু কির পক্ষে শ্লোগান দিতে থাকে।  আগের দিন সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাজধানী নেপিদোতে চতুর্থ দিনের বিক্ষোভ চলাকালে রাজপথে নেমে আসা এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। নেপিদোর ওই বিক্ষোভে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, রাবার বুলেট এবং লাইভ রাউন্ড ব্যবহার করে পুলিশ। বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। খবর বিবিসি, গার্ডিয়ান ও রয়টার্সের।

মিয়ানমারে পাঁচজনের বেশি সমবেত হওয়া নিষিদ্ধ করেছে জান্তা সরকার। এ পরিস্থিতি উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ চলছে। হাজার হাজার প্রতিবাদকারী মঙ্গলবার চতুর্থ দিনের মতো রাস্তায় নেমে আসে।

মঙ্গলবারের বিক্ষোভে জনতার দিকে রাবার বুলেট নিক্ষেপের আগেই সতর্কতা হিসেবে ফাঁকা গুলি করা হয়। তবে পরে চিকিৎসকরা বারুদের আঘাতে লোকজনের আহত হওয়ার কথা জানান। নেপিদো হাসপাতালে একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা জানান, একজন নারী মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। অন্য একজনের বুকে চোট লেগেছে। মাথায় আঘাত পাওয়া নারী বর্তমানে আইসিইউতে রয়েছেন।

একজন চিকিৎসকের বরাত দিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ওই নারীর মাথায় গুলি লেগেছে। ধাতব বুলেটটি তার ডান কানের পেছনে প্রবেশ করেছে।তার মস্তিষ্কের উল্লেখযোগ্য কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহত নারীর ছবি ও ফুটেজ ব্যাপকভাবে শেয়ার হচ্ছে। জাতিসংঘ মঙ্গলবারের রক্তপাতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এদিকে দেশজুড়ে রাত্রিকালীন কারফিউর মধ্যে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে সেনাবাহিনী অং সান সু চি-র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)-এর সদর দফতরে অভিযান চালিয়েছে। দলটির নেতারা বলছেন, তাদের অফিসে ‘তল্লাশি ও তছনছ’ করা হয়েছে। রাতে দরজা ভেঙ্গে এনএলডি-র সদর দফতরে প্রবেশ করে সেনাসদস্যরা। এ সময় কোনও নেতাকর্মী এ সময় সেখানে ছিলেন না।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। এ দিন অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। দেশজুড়ে জারি করা হয় এক বছরের জরুরি অবস্থা। অপরদিকে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে রাজপথে নামে সু চি সমর্থকরা।

জান্ন্তা সরকার অব্যাহত বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং পরবর্তীতে ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। তবুও ঠেকানো যাচ্ছে না আন্দোলন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App