×

জাতীয়

ভারতের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ সংসদীয় কমিটির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:১৪ পিএম

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মাল্টিমোডাল সাপোর্ট কমে যাচ্ছে: ফারুক খান

রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক অনেক আলোচনা হলেও সমস্যা সমাধানের বিষয়ে ইতিবাচক কোনো দিকনির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে না বরং মাল্টিলেটারাল সাপোর্ট দিন দিন কমে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান।

বুধবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকের পরে তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ, কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন এবং মিয়ানমারকে মিসাইল সরবরাহ করে প্রকারান্তরে মিয়ানমারকে সমর্থন দিচ্ছে। ভারতের এই দ্বিমুখী ভূমিকা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে একটি অন্তরায়- যা খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ ছাড়া বৈঠকে মিয়ানমার থেকে প্রত্যাগত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। বৈঠকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পতিত কৃষি জমি খুঁজে বের করে কনট্যাক্ট ফার্মিং এর ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়।

বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ভারতের দ্বীমুখী ভূমিকায় সংসদীয় কমিটি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং পাশাপাশি তাদের ভূমিকা দুঃখজনক বলেও উল্লেখ করেছে। তাছাড়া ভাসানচরে ‘চর’ শব্দের কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয় বৈঠকে।

ওই বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটি সৃষ্টি করেছে মিয়ানমার এবং এটি সমাধানের দায়িত্ব তাঁদের। কিন্তু এটা সমাধানের ক্ষেত্রে তাঁদের আন্তরিকতার যতেষ্ট অভাব রয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বর্তমানে আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) একটি মামলা চলমান আছে, যা পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক অর্থের প্রয়োজন। এ ব্যাপারে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর কাছে আর্থিক সহায়তা চাওয়া হলেও তেমন কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তবে আইসিজে এর অন্তবর্তীকালীন রায় বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে। বিভিন্ন মিটিংয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখালেও বাস্তবে তারা কোনো কথাই রক্ষা করছে না। এক্ষেত্রে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর যথাযথ ভূমিকা পালন করলে সমস্যাটি সমাধানের পথ উন্মুক্ত হতো বলে কমিটির সদস্যরা মনে করেন।

ভাসনচর নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালে একটি প্রকল্প নেয়া হয়। যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠান ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আবাসন তথা বিল্ডিং নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করে যার ভিত্তিতে সেখানে ১৭ ফুট উচ্চতার বাঁধ নির্মাণ এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত আবাসিক ভবন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাসপাতাল সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় আড়াই হাজার রোহিঙ্গা আগ্রহ প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত সাড়ে ৩০০ রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় সেখানে গিয়েছে। এখানে কোন রোহিঙ্গাকে জোর করে নেওয়া হয়নি। বৈঠকে এ বছরে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের মধ্যে জাতিসংঘ এবং উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ভাসানটেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানানোর সুপারিশ করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App